শিয়া পরিচিতি

নবম পর্ব
=======
পবিত্র আহলে বাইতের ফযিলত:

ভূমিকা:  নবী   করিম   সাল্লাল্লাহু  আলাইহি  ওয়া   সাল্লাম যেমন  সমস্ত নবীগণের সরদার,  হুযুরের পবিত্র আহলে বাইতও তেমনিভাবে  পূর্ববর্তী সমস্ত  নবীগণের  আহলে বাইতের    সরদার।    হুযুর      সাল্লাল্লাহু     আলাইহি     ওয়া সাল্লামের সাহাবাগণও  পূর্ববর্তী  নবীগণের  সাহাবাদের সরদার।     হুযুরের      সম্মানিত      পিতা     -     মাতা     সমস্ত নবীগণের   পিতা-  মাতার  সরদার।  তবে   যেসব  পিতা নবী ছিলেন  - তাঁদের ফযিলত অবশ্যই  উর্দ্ধে। হুযুরের পবিত্র   শহর     অন্যান্য   নবীগণের     শহর   হতে   উত্তম। হুযুরের   রওয়া     মোবারক     অন্যান্য   নবীগণের   রওযা মোবারক হতে উত্তমতো বটেই   - বরং আরশ  মোয়াল্লা হতেও  অধিক উত্তম। (ফতোয়ায়ে শামী) মোট  কথা  -  হুযুরের  সাথে  সম্পর্কযুক্ত  সব   বস্তুই  অন্যান্য   সবকিছু থেকে    উত্তম।   ইহাই  সার   কথা।  সুতরাং  নবী    করিম সাল্লাল্লাহু    আলাইহি     ওয়া    সাল্লামের     পবিত্র     আহলে বাইতও   সকল  আহলে  বাইতের   চেয়ে  অধিক  উত্তম। পবিত্র  কুরআনে  ও  হাদীসে  আহলে  বাইতের  অসংখ্য  ফযিলত ও মর্যাদা বর্ণনা করা হয়েছে।

পবিত্র কুরআনে আহলে বাইতের ফযিলত ও পরিধি:

১। বাংলা উচ্চারণ: ”ইন্নামা ইউরিদুল্লাহু লি - ইউযহিবা আ'নকুমুর            রিজছা             আহলাল           বাইতি!           ওয়া  ইউত্বাহহিরাকুম     তাত্বহীরা।”      (সূরা     আহযাব-      ৩৩ আয়াতের অংশ বিশেষ)।

অর্থ:  ”হে  আহলে  বাইত (নবীর পরিবারবর্গ) ! আল্লাহ  তো   ইহাই  চান   যে,    তোমাদেরকে  অপবিত্রতা  থেকে দূরে    রাখেন   এবং   তোমাদেরকে    উত্তমরুপে   পাক   - পবিত্র করেন।” (হুযুরের আহলে বাইতের ব্যাখ্যা পরে দেয়া হবে)।

২। বাংলা উচ্চারণ:  ”ক্বুল লা  -  আছআলুকুম আলাইহি আজরন  ইল্লাল  মাওয়াদ্দাতা  ফিল  ক্বুরবা”  (সূরা  শুরা,  আয়াত - ২৩)

অর্থ: ”হে প্রিয় নবী; বলে দিন - আমি তোমাদের কাছে নবুয়তের   বিনিময়ে কোন প্রতিদান চাইনা। শুধু আমার নিকটজনদের  প্রতি  মহব্বত  কামনা  করছি”।  (হযরত  আলী,  বিবি  ফাতেমা,  হাসান  -  হোসাইন  সহ  হুযুরের  নিকটজন) - হাকিম, আহমদ ও তাবরানী।

৩। বাংলা  উচ্চারণ:  ”ফাকুল তা'আলাও  নাদউ আবনা আনা  ওয়া  আবনা  আকুম   ওয়া  নিছা  আনা   ওয়া  নিছা আকুম      ওয়া     আনফুছানা     ওয়া        আনফুছাকুম     ছুম্মা নাবতাহিল”। (সূরা আলে -ইমরান, ৬১ আয়াত)।

অর্থ: ”হে প্রিয় নবী! ঘোষণা করে দিন, হে নাসারাগণ - এসো।   আমরা    ও   তোমরা   নিজ    নিজ   সন্তানগণকে,  স্ত্রীগণকে     এবং    নিজেদেরকে   নিয়ে   আসি।    অত:পর আমরা মোবাহালা করি।”

নোট:        খ্রিষ্টানদের        সাথে        উক্ত        মোবাহালা          বা মোকাবেলার চ্যালেঞ্জ হয়েছিল।

৪।   বাংলা   উচ্চারণ:   ”ওয়া'তাছিমু   বি     -    হাবলিল্লাহি  জামি'আওঁ ওয়ালা তাফাররকু”। (সূরা আলে - ইমরান, আয়াত - ১০৩)।

অর্থ: ”হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর রজ্জুকে শক্ত করে ধর এবং বিচ্ছিন্ন হয়োনা।”  সওয়ায়েকে মুহরিকা  শরীফে   আল্লাহর   রজ্জু   বলতে     নবী   করিম   সাল্লাল্লাহু আলাইহি   ওয়া   সাল্লামের   আহলে    বাইতকে    বুঝানো  হয়েছে।

৫।     বাংলা     উচ্চারণ:     ”ইউফুনা      বিন     নাযরি      ওয়া  ওয়াখাফুনা    ইয়াওমান    শাররুহু   মুছতাতীরা”।    (সূরা  দাহার, ৭ আয়াত)।

অর্থ: ”ওরা মানত পূরণ করে এবং ঐ দিনের ভয় করে - যে দিন বিপত্তি হবে ব্যাপক।”
হযরত  আলী,  ফাতেমা  রাদ্বিয়াল্লাহু  আনহা,    হাসান  ও হোসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা - এর শানে উক্ত আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে।

৬। উচ্চারণ: ”ওয়া ইজ গদাওতা মিন আহলিকা তুবাউ ইবুল মোমিনিনা মাক্বাইদা লিল ক্বিতালি”। (সূরা আলে - ইমরান, ১২১ আয়াত)।

অর্থ: ”হে রাসুল! স্মরণ করুন - ”যখন আপনি আপনার পরিবারবর্গের   নিকট     হতে   অতি   প্রত্যুষে     বের    হয়ে জেহাদের   জন্য   মুমিনগণকে   যুদ্ধের   ময়দানে   বিন্যস্ত  করেছিলেন”।

উহুদের   যুদ্ধে  যাবার সময় হযরত আয়েশা  রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা এর গৃহ   হতে তিনি বের হয়েছিলেন। তাই বিবি আয়েশাকে   উক্ত আয়াতে আহলে বাইত   বলা হয়েছে।


উস্তাজুল উলামা আল্লামা আবদুল জলীল রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর 'শিয়া পরিচিতি' থেকে প্রকাশিত হচ্ছে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন