ইসলামি সংস্কৃতির প্রকৃতি, তাৎপর্য ও এর পরিধি (৪র্থ পর্ব)


ইসলামি সংস্কৃতির প্রকৃতি, তাৎপর্য ও এর পরিধি
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
------------
অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার
+++++++++

মোটকথা, সামগ্রিক কর্মকান্ডে এরা সুন্নিয়তের ধারা থেকে আলাদা হয়ে খারেজীদের কট্টরপন্থাকে গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশে ও এদের পেট্রোডলারের সুফলভোগি ওহাবী-খারেজীরা এখানকার সূফীতাত্ত্বিক উদার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে বহুমুখী আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। মিলাদ মাহফিলে দাঁড়িয়ে (ক্বিয়াম) ‘এয়া নবী সালাম আলায়কা’ পড়ার মতো একটি ভাবগম্ভীর ইসলামী সংস্কৃতির বিরুদ্ধে এরা একই সাথে মুখ, কলম এবং অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ করে যাচ্ছে সুন্নিদের বিরুদ্ধে। সবাই মিলে উচ্চস্বরে দুরূদ পড়ার মতো ইবাদতেও এরা বাধা দিচ্ছে। এসব বিষয়ে ইমামে আহলে সুন্নাত আল্লামা আজিজুল হক শেরে বাংলা রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি সম্মুখবিতর্কে এদের পরাভূত করেছে বহুবার এবং ইসলামী সংস্কৃতির দুশমন হিসেবে চিহ্ণিত করেছে। এখন এদের সমাজ ও সুন্নিদের চেয়ে অনেকটা আলাদা বলা যায়। এদের মাদরাসাগুলো সরকারি মাদরাসা বোর্ড, সরকারি সিলেবাস এমনকি সরকারি কোন বিধি-বিধান পর্যন্ত অনুসরণ করেনা। এখন খারেজ-কওমী মাদরাসাগুলোর টাকা যেমন সউদী আরব থেকে আসে, তেমনি সিলেবাসসহ অন্যান্য অনেক উপাদানও সেখান থেকে পায়। সুন্নীদের সাথে কোন কোন জায়গায় এদের বাড়ি-ঘর, মসজিদ পর্যন্ত পৃথক। ফলে ওহাবী-সুন্নীতে সাংস্কৃতিক পার্থক্যও অনিবার্য হয়ে ওঠে।
মওদুদীপন্থীদের সাথে সাংস্কৃতিক পার্থক্য শুধু সুন্নিদের সাথে নয় ওহাবীদের সাথেও রয়েছে। ওহাবীরাও বিভিন্ন সময়ে বক্তৃতা-বিবৃতি ও লেখনির মাধ্যমে আবুল আ‘লা মওদুদী এবং তাঁর অনেক প্রকাশনাকে বিভ্রান্তিকর বলে উল্লেখ করেছেন। মওদুদীপন্থীরা মাদরাসা, মসজিদসহ অন্য অনেক ক্ষেত্রে সুন্নি-ওহাবী উভয়ের সাথে মিশ্রিত হয়ে থাকলেও আক্বিদাগত ক্ষেত্রে এরা উভয়ের কাছে বিভ্রান্তিকর। শিয়াদের মতো এরাও ‘সাহাবা-এ কেরাম সত্যের মাপকাটি নয়’ মন্তব্য প্রকাশ করেছে বিভিন্ন বই-পুস্তকে। তাই তাদেরকে সাহাবীদের অনুসারী ধরা যাবেনা বিধায় পূর্বোক্ত হাদীস শরীফ অনুসারে বাতিলদের অন্তর্ভুক্ত মনে করেন অনেকেই।
তাসাউফ বা সূফী দর্শন ইসলামি সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংগ। বিশেষত: ভারত উপমহাদেশে এ বাংলাদেশের মানুষ হিন্দু-বৌদ্ধ থেকে মুসলিম হয়েছে সূফী দরবেশদের হাতে; অথচ সেই সব পীর-ফকিরদের বিরুদ্ধে মওদুদীপন্থীদের অবস্থান। মওদুদী সাহেব ‘ডায়াবেটিক রোগিকে যেভাবে চিনি থেকে, সেভাবে মুসলমানদেরকে পীর থেকে দূরে থাকার’ পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি ইসলামী রেনেসাঁ আন্দোলন নামক বইয়ে ফাতেহাখানি, যেয়ারত, নযর-নেয়ায, ওরস ইত্যাদিকে মুশরিকদের কাজ বলে উল্লেখ করেছেন, যা সুন্নি মুসলমানরা অন্তত: হাজার-হাজার বছর ধরে পালন করে আসছে। আর যেয়ারত ও ফাতেহা সুন্নাত হিসেবে হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত বিষয়। সুতরাং মওদুদীর এ জাতীয় উক্তিগুলোর ইসলামি সংস্কৃতির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘাষণার নামান্তর। এরাও ওহাবীদের মতো মাযার-ওরস উচ্ছেদের পক্ষে এবং শিয়াদের মতো সাহাবীদের এমনকি নবীগণ সম্বন্ধে পর্যন্ত বিভ্রান্তিকর আক্বিদার প্রচারক। এ ধরনের ৭২ দলীয় ইসলাম বিকৃতিকারী সম্প্রদায়ের কারণে ইসলামের মূল ধারার সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড নানাভাবে বাধাগ্রস্থ হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও হতে পারে। এতদসত্ত্বেও ইসলামের সাংস্কৃতিক বিস্তৃতির পেছনে আউলিয়ায়ে কেরাম তথা সুফী ত্বরিকার রয়েছে বিশাল অবদান। এরা ক্বোরআন-সুন্নাহ্, ইজমাহ, ক্বিয়াস’র আলোকে নিজ নিজ ত্বরিকার মধ্যে নিত্য নতুন সংস্কৃতির জন্ম দিয়ে চলেছেন, যা ক্বিয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। নবীগণের আগমন বন্ধ হলেও মানুষ যাতে একতরফাভাবে শয়তানের অনুগত হয়ে না যায় এজন্যই নবীর উত্তরসূরী ও খলিফা হিসেবে আউলিয়া ও সংস্কারক ইমামগণ শয়তানী অপসংস্কৃতির প্রতিরোধ করে যাচ্ছেন। তাঁরা ইসলামের প্রচারক, সংস্কারক ও বাতিলের প্রতিরোধকারী হিসেবে দুনিয়ার বুকে সর্বাবস্থায় বিরাজ করেন। ক্বোরআন-হাদীসে আউলিয়া-এ কেরামের যোগ্যতা, মর্যাদা, দক্ষতা ও কর্মময় বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে। সমগ্র পৃথিবীতে একই সাথে সাড়ে তিন শত আউলিয়ার একটি আধ্যাত্মিক শাসন-প্রশাসন থাকার কথা হাদীস শরীফেই রয়েছে। হাদীস শরীফের ভাষ্য অনুসারে, শুধু শাম দেশেই চল্লিশ জন আবদাল সব সময় বিরাজ করবেন। এভাবে গাউস, কুতুব, আবদাল, আওতাদসহ বিভিন্ন স্তরের আধ্যাত্মিক ব্যক্তিদের সমন্বয়েই আল্লাহর খেলাফত-আউলিয়া সরকারের অধীনে চলতে থাকবে ক্বিয়ামত পর্যন্ত।
আর এ প্রশাসন হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে মাওলা আলী শেরে খোদা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর মাধ্যমে আধ্যাত্মিক যোগাযোগ রক্ষা করেন। বর্তমানে দুনিয়া ব্যাপী যে কয়েকটি ত্বরিকা মুসলমানদের সাংস্কৃতিক আন্দোলনকে বেগবান করেছে সেগুলো ক্বাদেরিয়া, চিশতিয়া, নক্সবন্দিয়া, সুহরাওয়ার্দিয়া নামে অধিক পরিচিত। গাউসুল আযম হযরত আবদুল ক্বাদের জীলানী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু দ্বীনকে পুনর্জীবনদাতা ‘মুহীউদ্দীন’ হিসেবে যেমন পরিচিত, তেমনি তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ ত্বরীক্বা ‘সিলসিলায়ে আলীয়া ক্বাদেরিয়া’রও প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর অনুসারী ত্বরিকতপন্থীদের ‘ক্বাদেরী’ হিসেবেও অভিহিত করা হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও রয়েছে এ ত্বরিক্বার লক্ষ লক্ষ ভক্ত মুরীদ।
বিশেষত: পাকিস্তানের উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের ‘দরবারে আলীয়া ক্বাদেরিয়া সিরিকোট’ থেকে আগত গাউসে যামান আল্লামা সৈয়দ আহমদ শাহ্ পেশোয়ারী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি এবং গাউসে যামান আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ্ রহমাতুল্লাহি আলায়হির প্রচেষ্টায় বাংলাদেশে আজ এ ত্বরিক্বার ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। তাঁদের মাধ্যমে আজ থেকে নয়শত বচর আগে ইরাকের বাগদাদে উদ্ভূত এ ত্বরিক্বার যাবতীয় সংস্কৃতি যেমন, যিকির-দরূদ, খতমে গাউসিয়া শরীফ, গেয়ারভী শরীফ ইত্যাদি আমাদের ঘরে ঘরে অনুসৃত হচ্ছে। এ শতাব্দির সংস্কারক অলি, আল্লামা তৈয়্যব শাহ্ রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি প্রবর্তিত ‘জশনে জুলূসে ঈদ-এ মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম’ তথা মিলাদুন্নবী উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা আজ বাংলাদেশে গণ ইসলামি সংস্কৃতির অংশ হয়েছে। সউদী আরবে ওহাবীদের সাংস্কৃতিক সন্ত্রাসে বন্ধ হয়ে যাওয়া অনেক অনুষ্ঠান তাঁর মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। আযানের পূর্বে দুরূদ-সালাম এগুলোর মধ্যে অন্যতম। চৌদ্দশ’ হিজরীর মুজাদ্দিদ আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা খান বেরলভী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হির রচিত না’ত-ই রসূল ‘সবসে আওলা ওয়া আ’লা হামারা নবী’ এবং সালাত-সালাম ‘মুস্তফা জানে রহমত পে লাখো সালাম’ আজ চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাঁর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ইসলামী সংস্কৃতিতে বৈচিত্র্য এনেছে।
ঠিক সেভাবে চিশতিয়া ত্বরিকার নিজস্ব অন্যান্য কর্মকান্ডের সাথে সাথে ইসলামি গযলের সংযোজন ভারত উপমহাদেশের ইসলামি সংস্কৃতির সাথে এক বিশেষ সংযোজন। মুজাদ্দিদ আলফেসানী হযরত শেখ আহমদ ফারূক্বী সিরহিন্দী রহমাতুল্লাহি আলায়হির ইসলামি সংস্কৃতির প্রাচীনতম উপাদান গরু জবাই-গরু কোরবানী বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে এবং স¤্রাট আকবর ও জাহাঙ্গীরের দরবারের অনৈসলামিক সংস্কৃতির বিরুদ্ধাচরণ করে কারাগারে গিয়েছিলেন বলেই আজ আমরা গরু কোরবানি করতে সক্ষম হচ্ছি। এ ভারত বর্ষে ইংরেজ আমলে ও হিন্দু-ওহাবীদের যৌথ উদ্যোগে গরু জবাই নিষিদ্ধ আন্দোলন শুরু হয়েছিল। সেই সময় আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা বেরলভী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি তাদের বিরুদ্ধে কলম ধরেছিলেন। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের নামে অসহযোগ আন্দোলনের সময় গান্ধীকে ওহাবীরা দিল্লী শাহী জামে মসজিদের মিম্বরে বসিয়ে বক্তৃতা শুনেছিল, যা এদেশে একটি অপসংস্কৃতির বিকাশ ঘটাতো। আ’লা হযরত তাদের এ নীতিরও কঠোর সমালোচনা করেছিলেন। বিশেষত: বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের সংস্কৃতির সাথে ক্বাদেরিয়া, চিশতিয়া, নক্বশবন্দিয়া ও মুজাদ্দিদিয়া ত্বরিকার সমন্বিত সূফী দর্শনের উদ্ভব হয়েছে।
এভাবে সূফীগণের হাতে ইসলামী সংস্কৃতির ক্ষেত্র দিন দিন প্রসার লাভ করে বিশ্ব সংস্কৃতিকেই তাকে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে। ক্বিয়ামত পর্যন্ত সূফীগণের এ ধারা অব্যাহত থাকবে। সুতরাং ইসলামী সংস্কৃতির রূপরেখা নির্মাণে উপরোক্ত বিষয়গুলোকে গুরুত্ববহ বিবেচনা করতে হবে- অন্যথায় পূর্ণাঙ্গ ইসলামী সংস্কৃতি আশা করা যায়না। বিশেষ করে যে উপাদানাটি ইসলামী সংস্কৃতিতে সে রসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের যামানা থেকে গুরুত্বসহ বিবেচিত হয়ে আসছে তা হলো পূর্বতন সমাজের আচার-আচরণ ও ঐতিহ্য। মনে রাখতে হবে ইসলাম কখনো স্থানীয় সংস্কৃতিকে অবজ্ঞা করেনি। কোন স্থানীয় কালচার অমানবিক ও ক্ষতিকর প্রমাণিত না হলে তা কখনো উচ্ছেদ করা হয়নি। ক্বোরআন করীমে পূর্ববর্তী নবীগণের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের তাগিদ দেওয়া হয়েছে; অথচ ইঞ্জীলের বিকৃত সংস্করণ বাইবেলে অনেক নবীর বিরুদ্ধে আপত্তিকর অভিযোগ আনা হয়েছে, যা ধর্ম গ্রন্থের বিকৃতিরই সাক্ষী বহন করে। কিন্তু ইসলাম পূর্ববর্তী নবীগণের সত্যতা প্রমাণ করেছে এবং তাঁদের সময়ের অনেক বিধানকেও বহাল রেখেছে।
ইসলামে এসে ওই বিধানাবলী ও ইসলামী সংস্কৃতির পূর্ণতা লাভ করেছে। তৎকালীন আরবে যে সব অপসংস্কৃতি সৃষ্টি হয়েছে ইসলাম সেসব উচ্ছেদ করেছে মানবতার কল্যাণের প্রয়োজনে। ইসলাম শিশু কন্যাকে জীবন্ত কবর দেওয়া বন্ধ করেছে। বিধবা বিবাহ্কে উৎসাহিত করতে হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর প্রথম বিয়েটিই ছিল চল্লিশ বছর বয়স্কা হযরত খাদিজাতুল কুবরা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহার সঙ্গে। আগে পিতা-স্বামী বা ভাইয়ের সম্পত্তিতে নারীর কোন অধিকার ছিলনা; অথচ ইসলাম তা দিয়েছে। নারীকে ‘শয়তানের ফাঁদ’ বলা হতো, পাশ্চাত্য প্রাচ্য সর্বত্র। তাকে আল্লাহর ইবাদত করার অধিকারও দেওয়া হতোনা; অথচ ইসলাম ধর্ম পালনে নারী-পুরুষে কোন পার্থক্য করেনি। আগে নারীদের শিক্ষার অধিকার ছিলনা। ইসলাম ‘জ্ঞানার্জন প্রত্যেক মুসলিম নর ও নারীর জন্য ফরয’ ঘোষণা করেছে।
[আল-হাদীস]
ইসলাম ইতোপূর্বের দাস প্রথা উচ্ছেদ করেছে। সাদা-কালো-ধনী-গরিবের পার্থক্য দূর করেছে। মানুষের নিজের এবং সমাজের জন্য ক্ষতিকর বিধায় মদ, জুয়া, ব্যভিচারের মতো অপসংস্কৃতি কঠোর হস্তে দমন করেছে। এভাবে ইসলাম যখন যেখানে গেছে স্থানীয় সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও অপসংস্কৃতি উচ্ছেদের প্রয়োজন অনুভব করেছে। মুসলমানরা মিশর বিজয়ের পর সেখানকার প্রচলিত অনেক সংস্কৃতি সংরক্ষণ করলেও নীল নদের পানি প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য যুবতী সুন্দরী কন্যা বলি দেওয়ার মতো জঘন্য অপসংস্কৃতি উচ্ছেদ করেছে। ভারতবর্ষে মুসলমানরা প্রায় হাজার বছর ধরে শাসন করেছে, অথচ কোথাও স্থানীয় সংস্কৃতি উচ্ছেদ করা হয়নি। কোথাও মন্দির ভেঙ্গে মসজিদ নির্মিত হয়নি। কাউকে মুসলমান হতে বাধ্য করা হয়নি। এখনো সমগ্র ভারতে হিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ট, যা মুসলমানদের উদারতার বড় প্রমাণ। পৃথিবীর কোথাও অন্য ধর্মের শাসনে ভিন্নধর্মীদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা কল্পনাতীত। মুসলমানরা ভারতে নিজস্ব ভাষা সংস্কৃতি নিয়ে এসেছে সত্য, স্থানীয় সংস্কৃতিকে উচ্ছেদ করেনি। ভারত বর্ষে সেন শাসকরা বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে অবন্থান নিয়েছিল, অথচ ঐতিহাসিক দীনেশ চন্দ্র সেনের সাক্ষ্য হলো ‘আমার বিশ্বাস, মুসলমান কর্তৃক বঙ্গ বিজয়ই বঙ্গ ভাষার এই সৌভাগ্যের কারণ হইয়া দাঁড়াইয়াছিল।’ স্থানীয় সংস্কৃতির প্রতি ইসলামের মনোভাবের সুফল সম্পর্কে রাহু সাংকৃত্যায়ন তাঁর ‘ইসলাম কী রূপরেখা’য় বলেন, ‘ঔদার্যের কারণে স্থানিকতাকে অস্বীকার করে নেওয়ার ফলেই ইসলাম ভূমন্ডলে সম্প্রসারিত হয়েছে।’ বাস্তবেই এ ঐদার্য্য যখন বিঘিœত হয়েছে তখনই দেখা গেছে বিপত্তি। পাকিস্তান ইসলামের এ বিষয়টি অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়েছে। যার পরিণতি হাঁড়ে হাঁড়ে টের পেয়েছে, পরবর্তী সময়ে। ততদিনে পাকিস্তান হারিয়েছে তার একটি অংশ এবং ওই অংশের ভাইদের আগের সহানুভুতিও। পাকিস্তানের অনেক সুকীর্তি পর্যন্ত আজ আলোচনায় আনবার সাহস নাই কারো। কারণ, এদেশের পরবর্তী সাংস্কৃতিক অঙ্গন অত্যন্ত কৃতিত্বের সাথে তাদের অপমান করে বিদায় করেছে এ দেশ থেকে। পৃথিবীর কোথাও যাতে মুসলমানদের পরিণতি এমন না হয়, যাতে ইসলাম সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে থেকে শাসন করতে পারে, এজন্যই স্থানীয়তাকে গ্রহণের নযীর স্থাপন করে গেছেন প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর সাহাবীগণ। আমরা তাঁদেরই সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারী। তাই, ইসলামি সংস্কৃতি হঠাৎ আসমান থেকে নেমে আসা কোন কিছু নয়। এটি সমগ্র বিশ্ব সংস্কৃতির পরিচ্ছন্ন একটি রূপমাত্র। ‘সারা বিশ্বে সংস্কৃতির একটি ঐক্যতো আছেই, যার মূলে মানবজাতির ঐক্য, সেই আদি এক পুরুষ ও এক নারীর ঐক্য। কিন্তু আবার অজ¯্র জাতিগত বিচিত্রতায় প্রত্যেকে একটু একটু করে আলাদা হয়ে যাচ্ছে।’ … ‘ইসলামী সংস্কৃতির যেমন একটি অভিন্ন মৌলিক পাটাতন আছে, তেমনি আছে দেশ ভেদে ইসলামী সংস্কৃতির বিভিন্নতাও।’ [আবদুল মান্নান সৈয়দ, বাংলা সাাহিত্যে মুসলমান পৃ.৪৩,৩]
আবদুল মান্নান সৈয়দ বাঙ্গালী মুসলমানের সংস্কৃতির রূপরেখা তুলে ধরে বলেন, কালচারের দু’টি অংশঃ একটি আদর্শিক; অপরটি স্থানিক। সংস্কৃতির স্থানিকতা ততোক্ষণ গ্রাহ্য যতোক্ষণ আদর্শকে আঘাত করে না। যেমন, বাঙালি মুসলমান স্থানিক পোশাক গ্রহণ করেছে, কিন্তু প্রতিমা পূজা করেনা।’ [প্রাগুক্ত, পৃ.৫১]
সুতরাং বাংলাদেশের ইসলামি সংস্কৃতি ও স্থানীয় পরিচ্ছন্ন ঐতিহ্যকে ধারণ করে এবং আদর্শ বিরোধী অংশকে বর্জন করে এগিয়ে চলবে। ইসলামি সংস্কৃতিতে আদর্শের সাথে সংগতিপূর্ণ বিনোদনের ও শিল্প সাহিত্য চর্চার পথ অবারিত রাখতে হবে যাতে এসব বিষয়ে কেউ নিজস্ব মাধ্যমের অনুপস্থিতিতে অপসংস্কৃতির ক্রীড়নক হয়ে না যায়। ভালো কবি ও কবিতাকে পৃষ্ঠপোষকতা না দিলে খারাপ কবিদের দৌরাত্ম্য বাড়বে। ইসলাম বিভ্রান্ত কবিদের যেমন নিন্দা করেছে তেমনি উত্তম কবিতার প্রশংসাও করেছে। পবিত্র ক্বোরআনের সূরা ‘আশ-শোয়ারা’য় বলা হয়েছে, ‘‘এবং কবিদের সম্বন্ধে বলা যায়, বিভ্রান্ত লোকেরাই তাদের অনুসরণ করে। তুমি কি দেখতে পাওনা। তারা উপত্যকায় উপত্যকায় উদ্ভ্রান্তের মতো ঘুরে বেড়ায়, তদুপরি তারা মুখে যা বলে কাজে তা করেনা। তবে যারা ঈমান এনেছে, সৎ কাজ করেছে এবং আল্লাহর স্মরণে অতিমাত্রায় তৎপর রয়েছে এবং অত্যাচারিত হলে নিজেদের আত্মরক্ষায় সচেষ্ট হয়েছে, তাদের সম্বন্ধেও কথা প্রয়োজ্য নয়। জুলুমবাজরা সত্বরই জানতে পারবে তাদেরকে কি বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হবে।” এ আয়াতের পূর্ব ভাগে ভ্রান্ত কবিদের নিন্দাবাদ এবং শেষভাগে হযরত হাস্সান ইবনে সাবিত রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু’র মতো কবিদের উৎসাহিত করা হয়েছে; বরং কাফিরদের কবিতার জওয়াবে কবিতা রচনার জন্য উৎসাহিত করে হুজুর করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, ‘যারা হাতিয়ার দ্বারা আল্লাহও রসূলের সাহায্য করেছে, কথা (কবিতা) দ্বারা আল্লাহর সাহায্য করতে কে তাদের বাঁধা দিয়েছে? [আল হাদীস]
উক্ত ক্বোরআন-হাদীসের উদ্ধৃতি বর্তমান বিশ্ব এবং আমাদের দেশে সমভাবে প্রযোজ্য। আজ কবিতা এবং সংগীতের নামে চলমান সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে ঈমানদার-মুত্তাক্বীদের একই অস্ত্র হাতে এগিয়ে আসা সময়ের দাবী।
সংস্কৃতির এমন কোনো বিভাগ নেই যেখানে ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব ছিলনা। খ্রিস্টান দুনিয়া যখন অজ্ঞানের অন্ধকারে নিমজ্জিত তখন ইসলাম জ্ঞানের বাতি জ্বালিয়ে প্রাচ্য-পাশ্চাত্যকে আলোকিত করেছে। গবেষণা ও মুক্ত চিন্তার বন্ধ দরজাকে মুক্ত করেছে। মক্কা-মদীনা, কুফা-বসরা, দামেস্ক থেকে স্পেন পর্যন্ত গ্রন্থাগারের পর গ্রন্থাগার বানিয়েছে। বানিয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ইতিহাস বলুন আর দর্শন বলুন কিংবা অনুবাদ শিল্প বলুন সবকিছুই তো মুসলমানদের অবদান। প্রাচীন বিজ্ঞানের শুরু থেকে সফলতার শীর্ষে আরোহণ পর্যন্ত সবকিছু মুসলমানদের হাতেই হয়েছে যখন ইহুদী-খ্রিস্টানরা নতুন আবিস্কার বা বক্তব্য সহ্য করছিলনা। বিজ্ঞানীদের জীবন্ত কবর দিচ্ছিল। তখন শব্দ বিজ্ঞান, চিকিৎসা শাস্ত্র, রসায়ন শাস্ত্র, গণিত, জ্যোতির্বিদ্যার মতো প্রাচীন বিজ্ঞানের এক একটি অধ্যায় আবিস্কার করে যাচ্ছে মুসলমানরা। সাহিত্যিক অগ্রগতিতে মুসলমানদের অবদানের স্বীকৃতি কে না জানে। দর্শন শাস্ত্রে মুসলমানদের আধিপত্য ছিল শীর্ষ স্থানীয়। ভূগোল, মানচিত্র বিদ্যায়ও মুসলমানদের অবদান ছিল ঈর্ষণীয় পর্যায়ে।
সার্টন (Sarton) তাঁর Indtroduction to the History of Science গ্রন্থে বলেন, ‘‘মানব সমাজের প্রধান কাজ মুসলমানগণ সাধন করিয়াছিলেন। সর্বশ্রেষ্ঠ দার্শনিক আল ফারাবী ছিলেন মুসলমান, সর্বশ্রেষ্ঠ গণিত বেত্তা আবু কাবিল ও ইব্রাহিম ইবনে সিনান ছিলেন মুসলমান, সর্বশ্রেষ্ঠ ভূগোলবিদ ও বিশ্বকোষ প্রণেতা আল মাসূদী ছিলন মুসলমান এবং সর্বশ্রেষ্ঠ ঐতিহাসিক আততাবারীও ছিলেন মুসলমান।’’
[[P.K. Hitti, History of the Arabs সূত্রে, কে. আলী মুসলিম সংস্কৃতির ইতিহাস, পৃ.-৩২১]
আজ আধুনিক বিজ্ঞান ও ইউরোপের যে অগ্রগতি তার ভিত্তি মুসলমানদের হাতে একথা অকপটে স্বীকৃত হয়েছে ইতিহাসের পাতায় পাতায়- যা মুসলমানদের উন্নত সাংস্কৃতিক ভিত্তির পরিচায়ক। সংস্কৃতির মূল পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্র (রাজনীতি) এবং এর চালিকা শক্তি অর্থনীতি-ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছুই ইসলামের নিয়ন্ত্রণে ছিল একাধারে হাজার বছরেরও বেশি। সংস্কৃতির উক্ত সব বাহন ছাড়াও বিনোদন শিল্পপটিও এক নতুনত্ব লাভ করেছিল মুসলমানদের হাতে। সংগীত শিল্পটি হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে মুসলমানদের হাতে পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছে। অশ্লীল যৌন আবেদনময়ী এ শিল্পটিকে মুসলমানরাই পরিচ্ছন্ন বিনোদনের উপযুক্ত করেছে। ‘খলিফা হারুনুর রশীদের দরবারে আয়োজিত এক সংগীত অনুষ্ঠানে দুই হাজার গায়ক অংশ গ্রহণ করেছিলো।’ [কে. আলী. প্রাগুক্ত. পৃ. ২৫৮]
ইমাম গাযালী তাঁর ‘এহইয়া-উল উলুম’ গ্রন্থে নিষিদ্ধ ও বিধিসম্মত সংগীতের বিবরণ দিয়েছিলেন। খ্রিস্টান বিশ্বের নিষিদ্ধ সংগীতের মুকাবেলায় মুসলমানরা বিধিসম্মত রুচিশীল সংগীতের চর্চা করতেন। গাযালী, সংগীতকে ¯œায়ু ও মস্তিস্কের খোরাক বলে মন্তব্য করেন। আবুল ফারাজ ইস্পাহানী আরবীতে সঙ্গীতের সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ রচনা করেন, যা ২১ খন্ডে বিনস্থ ছিল এবং এতে একশত প্রকারের স্বরলিপির উল্লেখ ও বিশ্লেষণ ছিল। বাগদাদে অসংখ্য সংগীত স্কুল ছিল এবং এ সময় সংগীত বিষয়ক বহু গ্রীক গ্রন্থ আরবীতে অনূদিত হয়েছিল। আমাদের এ ভারত বর্ষে সংগীত শিল্পের উন্নয়নের জন্য হযরত মাহবূবে এলাহি নিজামুদ্দিন আউলিয়া রহমাতুল্লাহি আলায়হির খলিফা তুতিয়ে হিন্দু নামে পরিচিত হযরত আমির খুসরু রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি এখনো বিখ্যাত হয়ে আছেন। আমির খুসরু রহমাতুল্লাহি আলায়হি বেশ কিছু বিশেষ বাদ্যযন্ত্র আবিস্কারসহ উচ্চাঙ্গ সংগীতের জন্য বিখ্যাত ব্যক্তি; অথচ আজ এ মাধ্যমটির অপব্যবহার। এ ব্যাপারে উদাসীনতায় হাতছাড়া হয়ে যাওয়ায় অশ্লীলতায় নিমজ্জিত হয়েছে। হস্তলিপি শিল্প (ঈধষষরমৎধঢ়যু) তখনো মুসলমানদের হাতে ছিল। ইনশাআল্লাহ, এখনো অন্তত, আরবী ক্যালিগ্রাফীতে মুসলমানদের প্রতিভা বিশ্ববরণীয় হয়েছে।
সুতরাং যে সব বিভাগে ইতোপূর্বে মুসলমানদের নিয়ন্ত্রণ ছিল সে সব মাধ্যমে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে যে সব নতুন নতুন দিক বিনোদন ও শিল্পের নামে বাজারে আসছে তাতেও অবস্থান মজবুত করতে হবে। অন্যথায় সে সব মাধ্যম থেকে বিনা প্রতিরোধে ইহুদী-খ্রিস্টান ও আর্য সংস্কৃতির মিসাইল এসে আমাদের সমাজকে লন্ডভন্ড করে দেবে। বর্তমানে দিচ্ছেও। বর্তমানে মেলা’র যে কদর বেড়েছে একে স্বচ্ছ ও সুন্দররূপে কাজে না লাগিয়ে উপায় নেই। জশনে জুলূস এ ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম, হিজরি নববর্ষ, ঈদ উৎসব ইত্যাদি উপলক্ষে সুস্থ বিনোদনমূলক নতুন নতুন উপাদান যোগ করে মেলার আয়োজন করা দরকার। বই, ক্যাসেট, প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ও দেশীয় শিল্প সামগ্রির সমাহার করে এ মেলাকে জনপ্রিয় করতে হবে। ফ্যাশন শো-বিজ্ঞাপন শিল্পকেও আমাদের আদর্শ ও বিশ্বাসের আলোকে সাজাতে হবে। অন্যথায়, যেভাবে এই দুই শিল্প পাশ্চাত্যের বেহায়া সংস্কৃতির দিকে এগুচ্ছে শীঘ্রই নতুন প্রজন্মকে মূল্যবোধ বিস্মৃত করে দেবে।
মনে রাখতে হবে, ইসলামে সব নতুন আবিস্কার (বিদ‘আত) নিন্দনীয় নয়। বিদ‘আত-এ হাসানা-ভালো উদ্ভাবন এবং বিদ‘আত-এ সাইয়্যি বা মন্দ উদ্ভাবন এ দুই প্রকার রয়েছে। বিদআত-এ হাসানাহ্ নতুন সংস্কৃতিকে আত্মস্থ করার দলিল হিসেবে যথেষ্ট। ইসলামি সংস্কৃতির পরিসর বাড়াতে ব্যর্থ হলে নতুন প্রজন্ম বিজাতীয় সংস্কৃতিতে জড়িয়ে পড়তে বাধ্য। নিজের ঘর টিকিয়ে রাখতে যুগোপযোগি সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথ ইসলামই খোলা রেখেছে, ইজমা’, ক্বিয়াস ও ইজতিহাদের অনুমতি দিয়ে।
বর্তমানে বিয়ে শাদীকে উপলক্ষে করে সঙ্গীতানুষ্ঠান করা হয়। পূর্ববর্তী সময় মুসলিম সমাজে বিবাহের পূর্বরাতে দক্ষ আলিম দ্বারা ওয়াজ-নসিহতের আয়োজন করা হতো। ওই মাহফিলে স্বামী-স্ত্রীর কর্তব্য, মাতাপিতার প্রতি নব দম্পত্তির কর্তব্য এবং স্বামীর পরিবার গঠন ও সন্তান-পালনের ইসলাম সম্মত সুন্দর পদ্ধতিগুলো আলোচনা ও রপ্ত করা হতো। এখন ক্রমশ মুসলিম সমাজে এ সুন্নাতটি পালনের ক্ষেত্রে অইসলামী সংস্কৃতি চালু হতে যাচ্ছে। মুসলমানদের বিবাহে বিধর্মীদের সমাজে প্রচলিত অশ্লীল গান-বাদ্য, তাও বিকট ও শব্দ দূষণ সম্বলিত যন্ত্রপাতির ব্যবহার চলছে দেদারসে। এতে মুসলিম সমাজে ধর্মহীনতা, অশ্লীলতার অনুপ্রবেশ তো ঘটছেই। পক্ষান্তরে আর্থিকভাবেও মুসলিম সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
পরিশেষে, আমি সর্বক্ষেত্রে ইসলামী শরীয়ত ও সংস্কৃতির অনুসরণের আহ্বান জানিয়ে লেখার ইতি টানলাম।

http://www.anjumantrust.org

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন