দরুদ শরীফের ফযীলত


দরুদ শরীফের ফযীলত (১)
 ------------------------------

 *** হুযুরে আকরাম ﷺ মহান দরবারে আরয করা হলো, আমাদেরকে খবর দিন যে ব্যক্তি দূর থেকে আপনার প্রতি দুরুদ প্রেরণ করে,আর যে আসবে আপনার পরে,আপনার মহান দরবারে তাদের কি অবস্থা হবে? প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করলেন," আমার মহব্বত যাদের দিলে রয়েছে তাদের দুরুদ শরীফ আমি শ্রবণ করি এবং আমি তাদেরকে জানি, তারা আমার অত্যন্ত পরিচিত। এতদ্ব্যতীত অন্যদের দুরুদ শরীফ আমার নিকট ফেরেশতাদের মাধ্যমে পেশ করা হয়।( দালায়েলুল খায়রাত,পৃ:- ২২)।

 *** ইমাম আবু নঈম ইস্পাহানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি হযরত আনাছ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন,তিনি বলেন; নবী করীম ﷺ এরশাদ করেন," যে ব্যক্তি আমার উপর জুমার দিনে ও রাতে একশ বার দুরুদ শরীফ পাঠ করবে,আল্লাহ তায়ালা তার একশটি প্রয়োজন পূর্ণ করে দিবেন। তন্মধ্যে সত্তরটি হবে পরকালের আর বাকী ত্রিশটি হবে ইহকালের প্রয়োজন। আল্লাহ তায়ালা এই জন্য একজন ফেরেস্তা নিয়োগ দিয়েছেন। যিনি এই দুরুদ শরীফ নিয়ে আমার কবরে
 ( রওজায়) এমনভাবে প্রবেশ করে যেমনভাবে তোমাদের নিকট কেউ হাদিয়া - উপঢৌকন নিয়ে আসে। তিনি আরো বলেন," নিশ্চয়ই আমার ইন্তেকালের পরেও আমার ইলম সেই রকমই আছে, যেই রকম জীবদ্দশায় ছিল।( আল - খাসায়েসুল কুবরা,খন্ড - ২য়, পৃ:- ৪৯০, বিষয় ভিত্তিক মু'যিযাতুর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম,পৃ:- ১৪৪, [উপরোক্ত হাদীস শরীফটি " ত্রিশটি হবে ইহকালের প্রয়োজন" পর্যন্ত নিম্নের কিতাবে বর্ণিত হয়েছে - তাফসীরে দুররে মনসুর,খন্ড - ৬,পৃ:- ৬৫৪,নামাযের আহকাম ( হানাফী), পৃ:- ৩২২)।

 *** দু'জাহানের সুলতান,নবী করীম ﷺ এর ফরমানে মাগফিরাত নিশান হচ্ছে," আমার উপর দুরুদ শরীফ পড়াটা পুলছিরাতের উপর নূর। যে ব্যক্তি জুমার দিন আমার উপর ৮০ বার দুরুদে পাক পড়বে,তার ৮০ বছরের গুনাহ ক্ষমা হয়ে যাবে।( জামে সাগির,হাদীস নং- ৫১৯১,পৃ:-৩২০,নামাযের আহকাম ( হানাফী),পৃ:- ২৩৫)।

 *** নবী করীম ﷺ এর ক্ষমাপূর্ণ বানী হচ্ছে," যে কিতাবে আমার উপর দুরুদ শরীফ লিখে, তবে যতদিন আমার নাম ঐ কিতাবে থাকবে, ফিরিস্তারা তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে। ( মু'জামে আউসাত,খন্ড - ১ম,হাদীস নং- ১৮৩৫ পৃ:- ৪৯৭ ও খাবারের ইসলামী নিয়মাবলী, পৃ:- ৩৪৯)।

 *** আল্লাহর মাহবুব,নবী করীম ﷺ এর জান্নাতরুপী ফরমান, "যে ব্যক্তি আমার উপর প্রতিদিন হাজার বার দুরুদে পাক পাঠ করলো,সে যতক্ষন পর্যন্ত আপন ঠিকানা জান্নাতকে না দেখবে, ততক্ষন পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করবেনা।" ( আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব,খন্ড - ২য়, হাদীস নং- ২২, পৃ:- ৩২৮ ও রমযানের ফযীলত পৃ:- ২০৬)।

 *** নবী করীম ﷺ এর বরকতময় ফরমান," যে ব্যক্তি আমার উপর জুমার দিন দুইশত বার দুরুদ শরীফ পাঠ করবে,তার দুইশত বছরের গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। ( কানযুল উম্মাল,খন্ড - ১ম,হাদীস নং- ২২৩৮,পৃ:- ২৫৬ ও নামাযের আহকাম ( হানাফী),পৃ:-২৯৩)।

 *** হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,নবী করীম ﷺ এরশাদ করেছেন," আমার নিকট জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম এসে বললেন,হে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার উম্মতের কোন ব্যক্তি যদি আপনার প্রতি দুরুদ শরীফ পেশ করে,তবে তার প্রতি দুরুদ শরীফ প্রেরণ করে ৭০হাজার ফেরেশতাগণ।আর যার প্রতি ফেরেশতারা দুরুদ প্রেরণ করে সে জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভূক্ত হবে। ( দালায়েলুল খায়রাত,পৃ:- ১০)।

 *** হযরত নবী করীম ﷺ এরশাদ করেছেন," যখন আল্লাহ পাকের কোন বান্দা আমার প্রতি দুরুদ শরীফ পাঠ করে,তখন তার মুখ থেকে দুরুদ শরীফ বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা অনতিবিলম্বে জল - স্থল,পূর্ব - পশ্চিমের সকল পথ অতিক্রম করে থাকে, আর বলতে থাকে আমি অমুকের পুত্র অমুকের দুরুদ শরীফ। যা সে হযরত রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি পাঠ করেছে। যিনি আল্লাহ পাকের সমগ্র সৃষ্টি জগতের মাঝে সর্বোত্তম ব্যক্তি।তখন সমগ্র সৃষ্টি জগতের মাঝে কোন কিছুই বাকি থাকেনা,বরং সব কিছুই তার প্রতি দুরুদ প্রেরন করতে থাকে। আর সেই দুরুদ দ্বারা এমন একটি পাখি সৃষ্টি করা হয়,যার ৭০ হাজার ডানা থাকে,আর প্রতিটি ডানায় ৭০ হাজার পালক থাকে,আর প্রত্যেক পালকে ৭০ হাজার মাথা থাকে,আর প্রতিটি মাথায় ৭০ হাজার চেহারা থাকে,আর প্রত্যেকটি চেহারায় ৭০ হাজার মুখ থাকে,আর প্রত্যেকটি মুখে ৭০ হাজার জবান থাকে,আর প্রত্যেক জবান দ্বারা ৭০ হাজার ভাষায় আল্লাহ পাকের তাসবীহ পাঠ করতে থাকে,আর আল্লাহ পাক সে সমস্ত তাসবীহর সওয়াব লিপিবদ্ধ করেন সেই দুরুদ পাঠকের জন্য। ( দালায়েলুল খায়রাত,পৃ:- ১৪)।

 *** নবী করীম ﷺ এরশাদ করেছেন,যার কোন কাজ অত্যন্ত কঠিন হয়ে যায়, তার উচিত আমার প্রতি অধিক পরিমানে দুরুদ শরীফ পাঠ করা। কেননা, তা দূরীভূত করে সকল দু:খ দুর্দশা, দুশ্চিন্তা এবং বিপদাপদ, আর রিয্ক বৃদ্ধি করে দেয়,আর তার সকল প্রয়োজনের আয়োজন করে।( দালায়েলুল খায়রাত,পৃ:- ১৮)।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন