মুহাম্মদ নাম রাখার ফযীলত বর্ণনা করুন।

 

প্রশ্ন: মুহাম্মদ নাম রাখার ফযীলত বর্ণনা করুন। 

উত্তর: এ সম্পর্কে হুযুর পুরনূর صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم এর চারটি বাণী পেশ করছি:  

(১) “যার ছেলে সন্তান ভূমিষ্ট হলাে, সে আমার মুহাব্বত এবং আমার নামের বরকত লাভের উদ্দেশ্যে ছেলের নাম মুহাম্মদ রাখে সে (ছেলের পিতা) এবং ঐ সন্তান জান্নাতে যাবে।” (কানযুল উম্মাল, ১৬ খন্ড, ১৭৫ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৪৫২১৫)

 (২) কিয়ামতের দিন দুই ব্যক্তিকে আল্লাহ্ তাআলার সামনে দন্ডায়মান করা হবে, হুকুম হবে: তাদেরকে জান্নাতে নিয়ে যাও। তারা উভয়ে বলবে: হে আল্লাহ! আমরা কোন আমলের বিনিময়ে জান্নাতের অধিকারী হয়েছি? আমরা তাে জান্নাতের কোন আমল করিনি! আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করবেন: জান্নাতে প্রবেশ করাে। আমি শপথ করেছি যে, যার নাম আহমদ অথবা মুহাম্মদ হবে, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে না। (আল ফিরদৌস বিমাছুরিল খাত্তাব, ৫ম খন্ড, ৪৮৫ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৮৮৩৭ ও ফতােওয়ায়ে রযবীয়া শরীফ, ২৪ খন্ড, ৬৮৭ পৃষ্ঠা) 

(৩) তােমাদের মধ্যে কারাে ক্ষতি কি (অর্থাৎ এটা খুব কল্যাণকর) যদি কারাে ঘরে এক বা দুই অথবা তিনজন মুহাম্মদ থাকে। (আত্ তাবকাতুল কুবরা লি ইবনে সাদ, ৫ম খন্ড, ৪০ পৃষ্ঠা) 

(৪) যখন কোন ছেলের নাম মুহাম্মদ রাখাে, তাকে সম্মান কারাে, কোন অনুষ্ঠানে তার জন্য জায়গা প্রশস্থ করে দাও এবং তাকে কোন মন্দ বিষয়ের প্রতি সম্পর্কিত করাে না। (আল জামেউছ ছগীর লিস্ সুয়ূতি, ৪৯ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-৭০৬) 



মুহাম্মদ নাম রাখার দুটি নিয়্যত


 প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! যদি ভালাে নিয়্যত ছাড়া শুধু এমনি মুহাম্মদ নাম রাখেন, তাতে সাওয়াব পাওয়া যাবে না, কেননা সাওয়াব অর্জনের জন্য ভালাে নিয়্যত হওয়া শত। 


পূর্বে উল্লেখিত প্রথম হাদীসে দুটি ভালাে নিয়্যতের বর্ণনা এসেছে তাজেদারে রিসালাত صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم এর সাথে মুহাব্বত এবং তাঁর صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم এর নামে নাম রাখার বরকত অর্জনের নিয়্যতে মুহাম্মদ নাম রাখা সৌভাগ্যবান পিতা এবং মুহাম্মদ নামের ঐ ছেলের জন্য জান্নাতের শুভ-সংবাদ রয়েছে। আ’লা হযরত  رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ ফতােওয়ায়ে রযবীয়া শরীফের ২৪তম খন্ড, ৬৯১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেন: উত্তম হচ্ছে, শুধু মুহাম্মদ অথবা আহমদ নাম রাখা এর সাথে জান অথবা অন্য কোন শব্দ মিলাবে না। কেননা ফযীলত শুধুমাত্র মুহাম্মদ নাম মােবারকের ক্ষেত্রে বর্ণিত আছে। বর্তমানে আল্লাহর পানাহ্! নাম বিকৃত করার সাধারণ প্রচলন হয়ে গেছে। মূলত এমন করা গুনাহ এবং মুহাম্মদ নাম বিকৃত করা অনেক বড় থেকে বড় অপরাধ। সে কারণে আকিকাতে মুহাম্মদ অথবা আহমদ নাম রাখবে,আর ডাকার জন্য উদাহরণ স্বরূপ বেলাল রযা, হেলাল রযা, জামাল রযা, কামাল রযা, যায়েদ রযা ইত্যাদি রাখা যাবে। এভাবে মেয়ে সন্তানের নামও মহিলা সাহাবী ও মহিলা ওলিদের নামের সাথে মিলিয়ে রাখা উপযােগী। যেমন- সকিনা, জরিনা, জামিলা, ফাতেমা, জয়নব,মাইমুনা, মরিয়াম ইত্যাদি।

____________

আকিকা সম্পর্কিত প্রশ্নোত্তর

লেখক : আমীরে আহলে সুন্নাত মাওলানা মুহাম্মদ বিলাল মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদেরী রযবীয়া (দা.)

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন