চার দিরহাম দান করার চারটি ধরণ

 

চার দিরহাম দান করার চারটি ধরণ 


সদরুল আফাজিল হযরত আল্লামা মাওলানা সৈয়্যদ মুহাম্মদ নঈমউদ্দিন মুরাদাবাদী  رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  তাফসীরে খাযায়েনুল ইরফানে এই : আয়াতের ব্যাখ্যায় লিখেছেন : এক বর্ণনামতে, এই আয়াত হযরত সায়্যিদুনা আলী كَرَّمَ اللّٰه تَعَالٰی وَجۡهَهُ الۡكَرِیۡمِ  এর শানে অবতীর্ণ হয়েছে। যখন তাঁর কাছে শুধু চার দিরহাম (চান্দির পয়সা) ছিল আর কিছু ছিল না। 

তিনি كَرَّمَ اللّٰه تَعَالٰی وَجۡهَهُ الۡكَرِیۡمِ  ঐ চার দিরহামকে দান করে দেন। একটি রাতে, একটি দিনে, একটি গােপনে এবং আর একটি প্রকাশ্যে। 


চুখন আ কর ইয়াহা আত্তার কা ইতমাম কো পােহ্ছা 

তেরী আজমত পে নাতিক আব বি হে আয়াতে কুরআনি (ওয়াসাইলে বখশিশ)।



আমাদের দান করার ধরণ


سُبۡحٰنَ اللّٰه عَزَّ وَجَلَّ আল্লাহ তায়ালার নেক বান্দাদের কি শান! যেমন আপনারা দেখলেন যে, তারা ধন-সম্পদ জমা করার পরিবর্তে আল্লাহর রাস্তায় দান করাকে পছন্দ করতেন। আমীরুল মুমিনীন হযরত সায়্যিদুনা শেরে খােদা মওলা আলী  كَرَّمَ اللّٰه تَعَالٰی وَجۡهَهُ الۡكَرِیۡمِ  এর নিকট চার দিরহাম ছিল, সেগুলাে আল্লাহ তা'য়ালার রাস্তায় এভাবে দান করলেন যে, একটি দিনে, একটি রাতে, একটি গােপনে এবং আরেকটি প্রকাশ্যে। কারণ, জানা নেই যে, কোন দিরহাম আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় অধিক গ্রহণযােগ্যতা লাভ করে রহমত এবং চিরস্থায়ী সম্পদে আরও বেড়ে যাওয়ার কারণ হয়ে যায়। অপরদিকে আমাদের অবস্থা এই যে, যদি কখনাে দান করার সাহস ও করে নিই তবে কোথায় আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির নিয়্যত...! কেমন একনিষ্টতা এবং কোথাকার আল্লাহর ওয়াস্তে করা...। কেবল যে কোন ভাবে লােকজনের এটা জানা হয়ে যাক যে, জনাব আজকে এত টাকা দান করেছেন! যতক্ষণ আমাদের দান খয়রাতের খ্যাতি না মিলে শান্তি আসে না। মসজিদে কিছু দান করলে তবে আকাংঙ্খ হয় যে, ইমাম সাহেব নাম নিয়ে দোয়া করে দেয় যাতে লােকদের আমার চাঁদা দেওয়ার বিষয়ে জানা  হয়ে যায়। কোন মুসলমানের সেবা করে তবে আশা এটা হয় যে, এমন কোন অবস্থা হয়ে যাক যে, আমাদের নাম এসে যায়। লােকদের মুখে মুখে আমাদের দানশীলতার প্রশংসা হয়, কারাে উপর দয়া করলে তবে আকাংঙ্খ হয় যে, সে যেন আমাদের চাকর হয়ে যায়। আমাদের প্রশংসা সমূহের ফুল ছড়াতে থাকে অথচ কুর’আন শরীফ আমাদের ইহসান উল্লেখ না করা এবং তার পরিণাম শুধু আল্লাহ তায়ালার নিকট থেকে চাওয়ার আদেশ দিচ্ছে। যেমন আল্লাহ তায়ালা ৩য় পারার সূরা বাকারার ২৬২ নং আয়াতে ইরশাদ করেন : 

اَلَّذِیۡنَ یُنۡفِقُوۡنَ اَمۡوَالَہُمۡ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ ثُمَّ لَا یُتۡبِعُوۡنَ مَاۤ  اَنۡفَقُوۡا مَنًّا وَّ لَاۤ  اَذًی ۙ لَّہُمۡ اَجۡرُہُمۡ عِنۡدَ رَبِّہِمۡ ۚ

কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ :- “ঐসব লােক, যারা নিজ সম্পদ আল্লাহ তায়ালার পথে ব্যয় করে, অতঃপর দান করার পর না খোঁটা দেয়, না কষ্ট দেয়, তাদের প্রতিদান তাদের প্রতিপালকের নিকট রয়েছে।” 


হযরত আল্লামা মাওলানা সৈয়্যদ মুহাম্মদ নঈমউদ্দিন মুরাদাবাদী  رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  এ আয়াতের ব্যাখ্যায় লিখেছেন:- “খোঁটা দেয়াতাে এটাই যে, দেয়ার পর অন্যান্যদের সামনে প্রকাশ করা- আমি তােমার প্রতি এমন দয়া করেছি।” তাকে এই বলে লজ্জা দেয়া-“তুমি গরীব ছিলে, নিঃস্ব ছিলে, অক্ষম ছিলে, অকেজো ছিলে; আমি তােমার খবরাখবর নিয়েছি। কিংবা অন্যভাবে চাপ সৃষ্টি করা। এটা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। (খাযায়েনুল ইরফান)।


 হায়! একনিষ্টতা ও পবিত্রতার প্রতীক। 

 হযরত সায়্যিদুনা শেরে খােদা মওলা আলী

كَرَّمَ اللّٰه تَعَالٰی وَجۡهَهُ الۡكَرِیۡمِ  এর সদকায় আমাদের ও একনিষ্টতার সাথে আল্লাহর রাস্তায় দান- খায়রাত করার আগ্রহ ও সৌভাগ্য নসীব হােক । 


মেরা হার আমল বছ তেরে ওয়াসেতে হাে, কর ইখলাছ আয়ছা আতা ইয়া ইলাহী। (ওয়াসায়েলে বখশিশ, পৃষ্ঠা-৭৮)।

_____________________

হযরত আলী كَرَّمَ اللّٰه تَعَالٰی وَجۡهَهُ الۡكَرِیۡمِ এর কারামত,

লেখক : আমীরে আহলে সুন্নাত মাওলানা মুহাম্মদ বিলাল মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদেরী রযবীয়া (দা.)

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন