সহিহ হাদিসের আলোকে কদমবুছি করা শিরিক নয় সুন্নাহ (২)

 

সহিহ হাদিসের আলোকে কদমবুছি করা শিরিক নয় সুন্নাহ (২)


❏ হাদিস ১২:

হযরত রাসূলে পাক (ﷺ) থেকে বর্ণিত, তিনি হযরত ফাতেমা (عليه السلام)কে চুমু খেতেন আর বলতেন, আমি ফাতেমা (عليه السلام) থেকে জান্নাতের সুঘ্রাণ পাচ্ছি। হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) হযরত আয়েশা (عليه السلام) এর মাথা মোবারক চুমু খেয়েছেন।


[ইমাম সারাখছিঃ মাবসুত লিস সারাখছি: ১০খণ্ড, ১৪৯ পৃষ্ঠা]




______

❏ হাদিস ১৩:



হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) রাসূলে কারীম (ﷺ) ইরশাদ করেন-"যে সন্তান তার মায়ের দুচোখে চুম্বন করল, তা তার জন্য জাহান্নাম থেকে আবরণ হয়ে গেল;


من قبل رجل امه فكانما قبل عتبة الجنة


যে ব্যক্তি তার মায়ের পা চুম্বন করল সে যেনো জান্নাতের চৌকাঠ চুম্বন করল। 


১.ইমাম বায়হাকীঃ শুআবুল ইমান।


২.ইমাম সারাখছিঃ মাবসুত লিস সারাখছি: ১০খণ্ড, ১৪৯ পৃষ্ঠা


৩.দুররুল মুখতার , খন্ড - ৯ , পৃ - ৬০৬ , দারুল মারিফা , বৈরুত।


৪.মুফতি আমজাদ আলী আজমী হানাফীঃ বাহারে শরীয়ত, ১৬ খন্ড, ৮৮ পৃষ্ঠা, মাকতাবাতুল মাদীনা।


______

❏ হাদিস ১৪:



ইমাম তাবারী (رحمة الله) ও ইবনুল মুর্ফিরী (رحمة الله) রেওয়ায়েত করেন- হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) যখন হযরত যায়েদ ইবনে সাবেত (رضي الله عنه)-এর বাহনের লাগাম ধরলেন, তখন হযরত যায়েদ (رضي الله عنه) হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه)'র হাতে চুমু খেলেন।


[ফিকহুস্ সুনান ওয়াল আসরার- কিতাবুল হাজর ওয়াল ইবাদত: ৪র্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৭০৭-৭০৮]




______

❏ হাদিস ১৫:



হযরত সুফিয়ান সাওরী (رحمة الله) বলেন, হযরত আবু ওবায়দা (رضي الله عنه) হযরত ওমর ফারুকে আযম (رضي الله عنه)-এর হাত চুমু খেয়েছেন।


[ফিকহুস্ সুনান ওয়াল আসরার- কিতাবুল হাজর ওয়াল ইবাদত: ৪র্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৭০৭-৭০৮]



❏ হাদিস ১৬:



আবু বকর ইবনুল মুকরী (رحمة الله) হযরত আবী মালেক আল্ আশয়ারী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি ইবনে আবী আওফা (رضي الله عنه)-কে বললাম- আমাকে আপনার হাতে চুমু খাবার জন্য আপনার হাতটি প্রদান করুন। যেই হাতে আপনি রাসূলে পাকের নিকট বায়আত গ্রহণ করেছেন।


✦ইমাম বুখারী (رحمة الله) এ হাদীসকে তাঁর রচিত কিতাবুল আদবের মধ্যে উল্লেখ করেছেন।


✦ইমাম তিবরানী (رحمة الله)ও এ হাদীসটিকে সহীহ সনদে বর্ণনা করেন।


______

❏ হাদিস ১৭:



হযরত আবদুর রহমান ইবনে রাযীন (رضي الله عنه) বলেন, আমি রাসূলে করিম (ﷺ)-এর হাতে বায়আত গ্রহণ করেছি এবং তাঁর হাত মোবারকে চুমু খেয়েছি। (কিন্তু রাসূলে পাক তা অপছন্দ করেন নি।)


[মুফতি আল্লামা সৈয়্যদ আমীমুল ইহসানঃ ফিকহুস্ সুনান ওয়াল আসরার- কিতাবুল হাজর ওয়াল ইবাদত: ৪র্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৭০৭-৭০৮]


______

❏ হাদিস ১৮:



ان رجلا اتى النبى صلى الله عليه وسلم فقال يا رسول الله صلى الله عليه وسلم امرنى شيئا ازداد به يقينا- فقال اذهب الى تلك الشجرة فاد عها- فذثب اليها- فقال ان رسول الله صلى الله عليه وسلم يدعوك- فجائت حتى سلمت على النبى صلى الله عليه وسلم- فقال لهاارجعى فرجعت- ثم اذن له فقبل رأسه ورجليه- اخرجه حاكم فى صيح الاسناد. (مستدرك حاكم، فتح البارى ج১১ صفه ৫৭، تحفة الاحوذى ج ৭ صفه ৫২৮ الكلام المبين صفه ১৪৬)


অর্থঃ- এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উনার নিকট এসে বলল ইয়া রসূলাল্লাহ্ (ﷺ)! আমাকে এমন কোন বিষয়ে আদেশ করেন, যা আমার বিশ্বাসকে আরো বৃদ্ধি করবে। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তিনি তাকে বললেন, “তুমি ঐ গাছটিকে ডেকে আনো।” অতঃপর সে গাছটির নিকটে গিয়ে বললো, নিশ্চয়ই রসূলাল্লাহ্ (ﷺ) তিনি তোমাকে ডেকেছেন। সুতরাং গাছটি এসে  রসূলাল্লাহ্ (ﷺ)কে সালাম করলো। রসূলাল্লাহ্ (ﷺ) তাকে চলে যেতে বললেন, গাছটি তখন চলে গেল। অতঃপর ঐ ব্যক্তি অনুমতি স্বাপেক্ষে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর মাথা মোবারক ও উভয় কদম (পা) মোবারক চুম্বন দিল। হাকিম এ হাদীছ শরীফখানা সহীহ্ সনদে বর্ণনা করেন।


(মোস্তাদরেকে হাকিম, ফতহুল বারী জিঃ ১১ পৃঃ ৫৭, তোহ্ফাতুল আহ্ওয়াযী জিঃ ৭ পৃঃ ৫২৮, আল কালামুল মুবীন পৃঃ ১৪৬)


______

❏ হাদিস ১৯:



حضرت ابو سفیان کے مناقب مین لکھا ھے حضرت عباس رضی اللہ عنہ نے فرمایا کہ مین نے اپکے قدم مبارک کو بوسہ دیا- (مستدرک حاکم ج3 صفہ254)


অর্থঃ- হযরত আবু সুফিয়ান (رضي الله عنه) উনার “মানাক্বিবে” বর্ণিত রয়েছে যে, হযরত আব্বাস  (رضي الله عنه) বলেন, আমি উনার কদম মোবারকে চুম্বন দিয়েছি। (মোস্তাদরেকে হাকিম জিঃ ৩ পৃঃ ২৫৪)


______

❏ হাদিস ২০:



فَقَامَ إِلَيْهِ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رضي الله عنه فَقَبَّلَ رِجْلَهُ وَقَالَ: يَا رَسُوْلَ اﷲِ، رَضِيْنَا بِاﷲِ رَبًّا وَبِکَ نَبِيًّا وَبِالإِْسْلَامِ دِيْنًا وَبِالْقُرْآنِ إِمَامًا فَاعْفُ عَنَّا عَفَا اﷲُ عَنْکَ فَلَمْ يَزَلْ بِهِ حَتَّی رَضِيَ.



অতঃপর হযরত উমর (رضئ اللہ تعالی عنہ) উঠে দাঁড়ালেন এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর বরকতময় কদম মুবারকে গিয়ে চুম্বন করলেন। ইয়া রাসূলুল্লাহ (ﷺ)! আমরা আল্লাহকে প্রতিপালক এবং আপনাকে নবী, দ্বীন আল ইসলাম, পথপ্রদর্শক আল-কুরআন হিসেবে পেয়ে এর উপর সন্তুষ্ট। আমাদেরকে ক্ষমা করুন। আল্লাহ পাক আপনার উপর আরও সন্তুষ্ট হোন। হযরত উমর (رضئ اللہ تعالی عنہ) ইহা ততক্ষণ পর্যন্ত বলতে থাকলেন যতক্ষণ না প্রিয়নবী (ﷺ) সন্তুষ্ট হয়ে যান।


[ইমাম ইবনে কাসীরঃ তফসীরে ইবনে কাসীর, সূরা আল মায়িদার তফসীর, অনুবাদকঃ মাসুম]


______________

কিতাবঃ কদম্বুচি করা শিরিক নয় সুন্নাহ

লেখকঃ মাসুম বিল্লাহ সানি

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন