ক্ষমা
বিখ্যাত সম্রাট হারুন-অর-রশিদ। আরবভূমিতে তার নাম ছড়িয়ে আছে। একজন সুশাসক ও প্রজাবৎসল সম্রাট হিসেবে। তিনি গরিবের উপকার করতেন। দুঃখী ও বিপদগ্রস্ত মানুষদের সহায়তা করতেন। সবচেয়ে বড়
কথা তিনি ছিলেন ভালাে মানুষদের পক্ষে। মন্দ মানুষদের বিপক্ষে।
একদিন।
সম্রাট হারুন-অর-রশিদ বসে আছেন সভাকক্ষে । মন্ত্রীদের সঙ্গে গভীর এক বিষয় নিয়ে শলাপরামর্শ করছেন। কী করে প্রজাদের উপকার করা যায়—এই ছিল তাঁর সারাক্ষণ কর্ম ও ধ্যান।
এমন সময় একটি লােক প্রচণ্ড উত্তেজিত হয়ে প্রাসাদে প্রবেশ করল । প্রহরীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে সােজা প্রবেশ করল সভাকক্ষে। সম্রাটের সামনে দাড়িয়ে উত্তেজনায় থরথর করে কাঁপতে লাগল লােকটি। সম্রাট বললেন—কী হয়েছে তােমার?
বাদশাহ নামদার, একজন আপনাকে ও আপনার মাকে নিয়ে যা-তা গালাগালি করছে রাস্তায়। এ আমি সহ্য করতে পারলাম না। তাই ছুটে এলাম। এই লােকের এখনই বিচার হওয়া উচিত।
সম্রাট মন দিয়ে সবটুকু শুনলেন।
মন্ত্রীদের দিকে তাকিয়ে বললেন- লােকটিকে কী করা উচিত বলে আপনারা মনে করেন? মন্ত্রীরা সকলেই ভয়ানক উত্তেজিত ।
এতবড় দুঃসাহস লােকটির!
ওকে ধরে এনে এক্ষুনি ফাঁসিতে চড়াও। একজন সম্রাটকে বললেন-লােকটিকে ধরে এনে সমুচিত সাজা দেয়া উচিত । ওকে শূলে চড়ানাে প্রয়ােজন। আরেকজন বললেন—ওকে হত্যা করে ওর মাংস কুকুর-বেড়ালকে দিয়ে খাওয়ানাে দরকার।
-ওর জিভ কেটে, চুল ছেটে ওকে শহর থেকে বের করে দেয়া উচিত। কেউ-বা বলল-বেয়াদবটাকে মাটিতে পুঁতে পাথর ছুড়ে ছুড়ে হত্যা করতে হবে।
সম্রাট হারুন-অর-রশিদ সকলের বক্তব্যই শুনলেন।
তারপর নীরবে | একটু হাসলেন।
মৃদু হাসি দিয়ে সকলের উদ্দেশে বললেন—না হে, লােকটিকে ক্ষমা করে দেয়াই উচিত আমাদের। নইলে প্রমাণ হয় না আমরা ঐ লােকটির চেয়ে বড়। লােকটি আমাকে গালাগালি দিয়েছে। ও নীচুমনের পরিচয় দিয়েছে। আমি যদি ওকে গালি দিতে চাই তবে ব্যাপারটা কেমন দাঁড়ায়?
আমিও তাে তবে ওর মতাে হয়ে যাই । ওকে ক্ষমা করে দাও। ক্ষমাই মহত্ত্বের লক্ষণ।
_________
শেখ সাদীর গল্প
আমীরুল ইসলাম
🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন