খাদিজা (رضي الله عنه)ا এর বিবাহ
আবু নাইমের বর্ণনায় এসেছে, এ ঘটনার দু”মাস ২৫ দিন পর পরই হযরত খাদিজা (رضي الله عنه)ا হুযূর পাকের সঙ্গে প্রনয় সুত্রে আবদ্ধ হন। কারও মতে এ সময় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর বয়স ছিল ২১ বছর, কার ও মতে ৩০ বছর (৫৯১/৬০০খৃঃ)। জাহেলী যুগে বিবি খাদীজা (رضي الله عنه) তাহেরা নামে পরিচিত ছিলেন। যেহেতু এ মহিয়সী মহিলা পবিত্র জীবন যাপনে অতুলনীয় ইতিহাস প্রতিষ্টা করেছিলেন। অন্তরের শুচিতা শুভ্রতায় এবং চরিত্রের পবিত্রতায় তিনি এতই সুনাম অর্জন করেছিলেন যে, লোকেরা তাঁকে এখন থেকে আর খাদীজা না বলে ‘তাহেরা’ (সতী সাধ্বী পবিত্রা) বলে ডাকতো। (যোরকানী-১) প্রথমে তিনি আবু হালাহ বিন যারাদাহ তামীমী এর সাথে পরিনয় সুত্রে আবদ্ধ হন এবং সে স্বামীর ঔরসে হিন্দু ও হালাহ নামে দুসন্তান জন্ম গ্রহণ করে। প্রথম স্বামীর মৃত্যুর পর আতীক বিন আয়েজ এর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং তার ঔরসে পরবর্তীতে হিন্দা, নামে আরেক কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহণ করে। দ্বিতীয় স্বামী ও মৃত্যুবরণ করার পর হযরত খাদীজাতুল কুবরা (رضي الله عنه)ا নবীজী (ﷺ) এর গুন গরিমা এবং তাঁর অসাধারন দীপ্ত ভবিষ্যতের কিরন মালায় সৃষ্ট আকর্ষনের দুরুনই ঐ অবেলায় তাঁর জীবনতরী এক ভিন্ন স্রোতে ভাসাতে উদ্যতই নন বরং উদগ্রীব হয়ে উঠেন।
সেমতে খাদীজা (رضي الله عنه)ا রাসূলে পাকের কাছে দ্বিগুণ সাহসে বিবাহের স্পষ্ট প্রস্তাব পাঠালেন। খাদীজা (رضي الله عنه)ا এর স্পষ্ট প্রস্তাব পেয়ে তিনি ও স্বীয় মুরব্বী চাচাগনের নিকট তা পাঠিয়ে দিলেন। সকলেই আনন্দের সাথে সম্মত হলেন এবং বিবাহের দিন ধার্য্য করা হল। নির্ধারিত তারিখে হযরতের চাচা আবু তালেব, হামযা, আবু বকরসহ আরও কুরাইশ বংশের গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বর যাত্রায় যোগদান করলেন। বিবাহ মজলিসে খাজা আবু তালেব হযরতের পক্ষে ভাষন বা নিন্মের খোতবা পরিবেশন করলেন।
الحمد لله الحمد لله الذي جعلنا من ذرية إبراهيم وزرع إسماعيل وضئضئ معد مضر، وجعلنا حضنة بيته وسواس حرمه وجعل لنا بيتا محجوجا وحرما آمنا وجعلنا حكام الناس ثم إن ابن أخي هذا محمد بن عبد الله - لايوزن يرجل الارجعه فان كان فى المال قل- فان المال ظل زائل وامر حائل- ومحمد قدعرفتم قرابه وقدخطب خديجة بنت خويلد- وبذل لها الصداق ما اجله وعاجله من مالى كذا-
আর্থাৎ- প্রশংসা সে আল্লাহ পাকের যিনি আমাদেরকে হযরত ইব্রাহীম عليه السلام এর কুলে এবং ইসমাঈল عليه السلام এর বংশে জন্ম দিয়েছেন। তিনি আমাদেরকে তাঁর পবিত্র ঘরের সেবক এবং জনসাধারনের নেতা-তথা নায়করূপে মনোনীত করেছেন। তিনি আমাদের জন্য কাবা ঘরকে অতিনিরাপদ ও হজ্জ সম্পাদন কেন্দ্র বানিয়েছেন। অতঃপর আমার ভ্রাতুষ্পুত্র আব্দুল্লাহ তনয় সমগ্র কুরাইশ গোত্রে জ্ঞানে গুণে অতুলনীয় সকলেই মোহাম্মাদের নিকট হার মানতে বাধ্য। যদিও ধন-সম্পদ তাঁর অল্প। কিন্তু মাল ও দৌলত ক্ষনস্থায়ী ছায়া এবং হাত বদলের সাময়িক বস্তু মাত্র। মোহাম্মদের স্বজনদের গৌরব সর্ববিদিত।
মোহাম্মাদ খোওয়ালেদ তনয়া খাদীজার বিবাহ পয়গাম বরণ করেছেন। নগদ ও দেন মোহরানার দায়ীত্ব আমি গ্রহণ করলাম। বিবি খাদীজার পক্ষে তাঁর আত্মীয় বিশিষ্ট আলেম সৎ-সাধু ওয়ারাকা বিন নওফল ভাষণ পাঠ করলেন। তিনি আল্লাহর প্রশংসা জ্ঞাপনের পর কুরাইশ গোত্রের গৌরব এবং আবু তালেব বংশের (বনী হাশেম) প্রাধান্যের স্বীকৃতি উল্লেখ পূর্বক বললেন: আমরা আপনাদের সাথে মিলন লাভের আকাঙ্খা রাখি এবং তাতে আনন্দবোধ করি। সকলে স্বাক্ষী থাকুন- খোওয়ালেদ তনয়া খাদীজাকে আব্দুল্লাহ তনয় মোহাম্মদের বিবাহে প্রদান করলাম। সর্ব সম্মত মতে বিবাহের সময় খোওয়ালেদ তনয়া খাদীজার বয়স ৪০ বছর এবং আব্দুল্লাহ তনয় মোহাম্মদের বয়স ২৫ বছর ছিল।
_______________
আল মাওরিদুর রাভী ফি মাওলিদিন নাবাবী (ﷺ)
মূলঃ ইমাম নূরুদ্দীন মুল্লা আলী কারী আল হারুবী (رحمة الله)
🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন