আল-হাদীসের আলোকে নারী পুরুষের নামাজ পদ্ধতি ভিন্ন


আল-হাদীসের আলোকে নারী পুরুষের নামাজ পদ্ধতি ভিন্ন


❏ হাদিস ১ :

3016 – ﺃﺧﺒﺮﻧﺎﻩ ﺃﺑﻮ ﺑﻜﺮ ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﻣﺤﻤﺪ ﺃﻧﺒﺄ ﺃﺑﻮ ﺍﻟﺤﺴﻴﻦ ﺍﻟﻔﺴﻮﻱ ﺛﻨﺎ ﺃﺑﻮ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻠﺆﻟﺆﻱ ﺛﻨﺎ ﺃﺑﻮ ﺩﺍﻭﺩ ﺛﻨﺎ ﺳﻠﻴﻤﺎﻥ ﺑﻦ ﺩﺍﻭﺩ ﺃﻧﺒﺄ ﺑﻦ ﻭﻫﺐ ﺃﻧﺒﺄ ﺣﻴﻮﺓ ﺑﻦ ﺷﺮﻳﺢ ﻋﻦ ﺳﺎﻟﻢ ﺑﻦ ﻏﻴﻼﻥ ﻋﻦ ﻳﺰﻳﺪ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﺣﺒﻴﺐ : ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻣﺮ ﻋﻠﻰ ﺍﻣﺮﺃﺗﻴﻦ ﺗﺼﻠﻴﺎﻥ ﻓﻘﺎﻝ ﺇﺫﺍ ﺳﺠﺪﺗﻤﺎ ﻓﻀﻤﺎ ﺑﻌﺾ ﺍﻟﻠﺤﻢ ﺇﻟﻰ ﺍﻷﺭﺽ ﻓﺈﻥ ﺍﻟﻤﺮﺃﺓ ﻟﻴﺴﺖ ﻓﻲ ﺫﻟﻚ ﻛﺎﻟﺮﺟﻞ ) ﺳﻨﻦ ﺍﻟﻜﺒﺮﻯ ﻟﻠﺒﻴﻬﻘﻰ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺤﻴﺾ، ﺑﺎﺏ ﻣﺎ ﻳﺴﺘﺤﺐ ﻟﻠﻤﺮﺃﺓ ﻣﻦ ﺗﺮﻙ ﺍﻟﺘﺠﺎﻓﻲ ﻓﻲ ﺍﻟﺮﻛﻮﻉ ﻭﺍﻟﺴﺠﻮﺩ، ﺭﻗﻢ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ 3016- )



তাবেয়ী ইয়াযীদ বিন আবী হাবীব (رحمة الله) বলেন, একবার রাসূল (ﷺ) দুইজন মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তাদেরকে তিনি (সংশোধনের উদ্দেশ্য) বললেন, “যখন সেজদা করবে, তখন শরীর যমীনের সাথে মিলিয়ে দিবে। কেননা মহিলারা এ ক্ষেত্রে পুরুষদের মতো নয়।” (সুনানুল বায়হাকী, হাদিস নং-৩০১৬, কিতাবুল মারাসিল লি ইমাম আবু দাউদ-৫৫, হাদিস নং-৮০)



প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস আলেম নওয়াব সিদ্দীক হাসান খাঁন বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাগ্রন্থ “আওনুল বারী” (১/৫২০)’তে লিখেছেন, “উল্লেখিত হাদীসটি সকল ইমামের উসূল অনুযায়ী দলীল হিসেবে পেশ করার যোগ্য”।



মুহাদ্দিস মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল আমীর ইয়ামানী “সুবুলুস সালাম শরহু বুলুগিল মারাম” গ্রন্থে (১/৩৫১-৩৫২) এই হাদীসকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করে পুরুষ ও মহিলার সেজদার পার্থক্য করেছেন।



❏ হাদিস ২ :



ﻭَﺍﻵﺧَﺮُ ﺣَﺪِﻳﺚُ ﺃَﺑِﻰ ﻣُﻄِﻴﻊٍ : ﺍﻟْﺤَﻜَﻢِ ﺑْﻦِ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺍﻟْﺒَﻠْﺨِﻰِّ ﻋَﻦْ ﻋُﻤَﺮَ ﺑْﻦِ ﺫَﺭٍّ ﻋَﻦْ ﻣُﺠَﺎﻫِﺪٍ ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ - ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : - » ﺇِﺫَﺍ ﺟَﻠَﺴْﺖِ ﺍﻟْﻤَﺮْﺃَﺓُ ﻓِﻰ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ ﻭَﺿَﻌَﺖْ ﻓَﺨِﺬَﻫَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﻓَﺨِﺬِﻫَﺎ ﺍﻷُﺧْﺮَﻯ ، ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺳَﺠَﺪْﺕْ ﺃَﻟْﺼَﻘَﺖْ ﺑَﻄْﻨَﻬَﺎ ﻓِﻰ ﻓَﺨِﺬَﻳْﻬَﺎ ﻛَﺄَﺳْﺘَﺮِ ﻣَﺎ ﻳَﻜُﻮﻥُ ﻟَﻬَﺎ ، ﻭَﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﻳَﻨْﻈُﺮُ ﺇِﻟَﻴْﻬَﺎ ﻭَﻳَﻘُﻮﻝُ : ﻳَﺎ ﻣَﻼَﺋِﻜَﺘِﻰ ﺃُﺷْﻬِﺪُﻛُﻢْ ﺃَﻧِّﻰ ﻗَﺪْ ﻏَﻔَﺮْﺕُ ﻟَﻬَﺎ ) ﺍﻟﺴﻨﻦ ﺍﻟﻜﺒﺮﻯ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺼﻼﺓ، ﺑﺎﺏ ﻣَﺎ ﻳُﺴْﺘَﺤَﺐُّ ﻟِﻠْﻤَﺮْﺃَﺓِ ﻣِﻦْ ﺗَﺮْﻙِ ﺍﻟﺘَّﺠَﺎﻓِﻰ ﻓِﻰ ﺍﻟﺮُّﻛُﻮﻉِ ﻭَﺍﻟﺴُّﺠُﻮﺩِ، ﺭﻗﻢ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ 3324- )



হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত; রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, “মহিলা যখন নামাযের মধ্যে বসবে তখন যেন (ডান) উরু অপর উরুর ওপর রাখে। আর যখন সেজদা করবে তখন যেন পেট উরুর সাথে মিলিয়ে রাখে। যা তার সতরের জন্য অধিক উপযোগী। আল্লাহ তায়ালা তাকে দেখে বলেন, ওহে আমার ফেরেস্তারা! তোমরা সাক্ষী থাকো। আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম।” (সুনানে বায়হাকী-২/২২৩, হাদিস নং-৩৩২৪)


এই হাদীসটি হাসান।



❏ হাদিস ৩ :



ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺤﻀﺮﻣﻲ ﻗﺎﻝ ﺣﺪﺛﺘﻨﻲ ﻣﻴﻤﻮﻧﺔ ﺑﻨﺖ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺠﺒﺎﺭ ﺑﻦ ﻭﺍﺋﻞ ﺑﻦ ﺣﺠﺮ ﻋﻦ ﺃﺑﻴﻬﺎ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺠﺒﺎﺭ ﻋﻦ ﻋﻠﻘﻤﺔ ﻋﻤﻬﺎ ﻋﻦ ﻭﺍﺋﻞ ﺑﻦ ﺣﺠﺮ ﻗﺎﻝ : ﺟﺌﺖ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ .………… ﻓﻘﺎﻝ ﻟﻲ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ : ﻳﺎ ﻭﺍﺋﻞ ﺑﻦ ﺣﺠﺮ ﺇﺫﺍ ﺻﻠﻴﺖ ﻓﺎﺟﻌﻞ ﻳﺪﻳﻚ ﺣﺬﺍﺀ ﺃﺫﻧﻴﻚ ﻭﺍﻟﻤﺮﺃﺓ ﺗﺠﻌﻞ ﻳﺪﻳﻬﺎ ﺣﺬﺍﺀ ﺛﺪﻳﻴﻬﺎ ) ﺍﻟﻤﻌﺠﻢ ﺍﻟﻜﺒﻴﺮ، ﺑﺎﺏ ﺍﻟﻮﺍﻭ، ﻭﺍﺋﻞ ﺑﻦ ﺣﺠﺮ ﺍﻟﺤﻀﺮﻣﻲ ﺍﻟﻘﻴﻞ، ﺭﻗﻢ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ 28- )



হযরত ওয়াইল বিন হুজর (رضي الله عنه) বলেন, আমি নবীজী (ﷺ)-এর দরবারে হাজির হলাম। তখন তিনি আমাকে (অনেক কথার সাথে একথাও) বলেছিলেন, ’হে ওয়াইল বিন হুজর! যখন তুমি নামায শুরু করবে, তখন কান বরাবর হাত ওঠাবে। আর মহিলা হাত ওঠাবে বুক বরাবর। (আল মুজামুল কাবীর, হাদীস নং-২৮)


এই হাদিসটিও হাসান।



উল্লেখিত হাদীসগুলি থেকে একথা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, কিছু কিছু হুকুমের ক্ষেত্রে মহিলার নামায আদায়ের পদ্ধতি পুরুষের নামায আদায়ের পদ্ধতি থেকে ভিন্ন। বিশেষত ২ নং হাদিসটি দ্বারা একথা-ও বুঝা গেল যে, মহিলার নামায আদায়ের শরীয়ত নির্ধারিত ভিন্ন এই পদ্ধতির মধ্যে ওই দিকটি-ই বিবেচনায় রাখা হয়েছে, যা তার সতর ও পর্দার পক্ষে সর্বাধিক উপযোগী।



উল্লেখ্য যে, এই সব হাদীসের সমর্থনে মহিলাদের নামায আদায়ের পদ্ধতির পার্থক্য ও ভিন্নতাকে নির্দেশ করে এমন আরো কিছু হাদিস আছে। পক্ষান্তরে এগুলির সাথে বিরোধপূর্ণ এমন একটি হাদীসও কোথাও পাওয়া যাবেনা, যা’তে বলা হয়েছে যে পুরুষ ও মহিলার নামাযের পদ্ধতিতে কোনো পার্থক্য-ই নেই। বরং উভয়ের নামায-ই এক ও অভিন্ন, একথার পক্ষে একটি হাদীসও নেই।

________________

কিতাবঃ পুরুষ ও নারীর নামায পদ্ধতি এক নয়

🖋মুফতী মাওলানা এস, এম, সাকীউল কাউছার

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন