এক নজরে তাবলীগী মতবাদ/আক্বীদা
তাবলীগের প্রতিষ্ঠাতা মৌঃ ইলিয়াস মেওয়াতী খুশকির কারনে অনিদ্রায় ভুগছিলেন। হাকীমের পরামর্শে মাথায় তেল ব্যবহার করে নিদ্রায় গেলে তাহার অন্তরে সহী ইলম ঢেলে দেওয়া হয়। ঐ ইলমের উদ্দেশ্য হলো উম্মতে মোহাম্মদীকে “নবীদের মতই মানুষের উপকারের জন্য বের করা হয়েছে”- এই আক্বীদা বাস্তবায়ন করা। অথচ ইসলামী শরিয়ত মতে নবীগন ছাড়া অন্যের জন্য সপ্নে প্রাপ্ত কোন বিধানের গ্রহনযোগ্যতা নাই। তাবলীগের মুরুব্বীদের আক্বীদার সার সংক্ষেপ নিম্নরূপ:-
১। নামাজের চেয়েও তাবলীগের গুরুত্ব বেশী। দ্বীনি উদ্দেশ্যে নূতন লোক এসে ফিরে যাচ্ছে এবং পুনরায় তাকে পাবার সম্ভবনা নাই-এমতাবস্থায় নামাজ ভেঙ্গেঁ ঐ ব্যক্তির সাথে দ্বীনী আলোচনা সেরে নেওয়া উচিত। অথচ ইসলামী শরিয়তে দ্বীনের কথা বলার জন্য নামাজ ভাঙ্গাঁর অনুমতি নাই।
২। যারা তাবলীগ জামাত করে এবং যারা তাবলীগীদের সাহায্য করে একমাত্র তারাই মুসলমান। এ’ছাড়া কোন মুসলমান নাই। (মলফুজাত-৪২)
৩। ১২ই রবিউল আউয়াল ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা বৈধ নয়। তার বৈধতার পক্ষে কোরআন হাদীসে কোন দলিল নাই। (রাহবার)
৪। বর্তমান তাবলীগ অনুসারীরা কোন পীরের হাতে বায়আত হয় না। পীরের হাতে বায়আত হওয়াকে বেদআতী কাজ মনে করে। অথচ জনাব ইলিয়াস মেওয়াতী নিজেই প্রথমত হযরত রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী (رحمة الله) এর মুরীদ ছিলেন এবং গাঙ্গুহী সাহেবের মৃত্যুর পর খলীল আহমদ আম্বেটির।
৫। রাসুল (ﷺ) যে পরিমান ইলমে গায়েব জানেন, সে পরিমান ইলমে গায়েব সমস্ত শিশু, পাগল, জীব-জানোয়ার ও চতুষ্পদ জন্তুুও (ভেড়া, বকরী, গরু, ছাগল ইত্যাদি) জানে। (নাউযুবিল্লাহ) (হিফজুল ঈমান)
৬। রাসুল (ﷺ) শুধু একাই রাহমাতুল্লিল আলামীন নন। আরো অনেকে রাহমাতুল্লিল আলামীন হতে পারেন। (ফতোয়ায়ে রশিদীয়া)
৭। কোন সাহাবী (رضي الله عنه)কে কেউ কাফের বললে সে ইসলামের সঠিক দলেই অন্তর্ভূক্ত থাকবে। (ফতোয়ায়ে রশিদীয়া)
৮। ওরস শরীফ ও মিলাদ মাহফিলে শরীয়ত পরিপন্থী কোন কাজ না হলেও উহা নিষিদ্ধ ও হারাম। (ফতোয়ায়ে রশিদীয়া)
৯। মিলাদ ও কেয়াম নাজায়েয। (ফতোয়ায়ে রশিদীয়া)
১০। প্রচলিত ফাতেহা পাঠ করা বিদআত ও হিন্দুুদের পূজার মত। (ফতোয়ায়ে রশিদীয়া)
১১। দূর থেকে কোন মাজার শরীফ যিয়ারতে যাওয়া এমনকি ওরস শরীফের দিন কোন অলীর মাজার যিয়ারত করতে যাওয়া হারাম। (ফতোয়ায়ে রশিদীয়া)
১২। মহররমে হযরত হুসাইন (رضي الله عنه) এর শাহদাতের আলোচনার মাহফিল করা এবং এই উপলক্ষে শরবত, দুধ ও নেওয়াজ ইত্যাদি বিতরন করা হারাম ও নাজায়েয। (ফতোয়ায়ে রশিদীয়া)
১৩। হিন্দুদের হুলি, দেওয়ানী, পূজা ইত্যাদির প্রসাদ খাওয়া বৈধ। (ফতোয়ায়ে রশিদীয়া)
১৪। দুই ঈদের দিনে কোলাকুলি করা বেদআত। (ফতোয়ায়ে রশিদীয়া)
১৫। রাসুল (ﷺ)-এর এলমে গায়েব নাই। তাই ‘ ইয়া রাসুলাল্লাহ ’ বলাও নাজায়েয। (ফতোয়ায়ে রশিদীয়া)
১৬। আল্লাহ্ মিথ্যা কথা বলা সহ অন্যান্য মন্দ কাজ সম্পাদন করতেও সক্ষম। (নাউযুবিল্লাহ) (ফতোয়ায়ে রশিদীয়া)
১৭। রাসুল (ﷺ) দেওবন্দী আলেমদের সংষ্পর্শে এসে উর্দু শিখেছেন। (বারাহেনে কাতেয়া)
১৮। শয়তান ও আজরাইল (عليه السلام) এর ব্যপক জ্ঞানের বিষয় দলিল প্রমান দ্বারা সাব্যস্ত। কিন্তু রাসুল (ﷺ)-এর এমন ব্যাপক জ্ঞানের ব্যাপারে কোন দলিল প্রমান নাই। (বারাহেনে কাতেয়া)
১৯। যত বড় নবী, ওলী বা ফেরেস্তা হোক না কেন আল্লাহর নিকট তাঁরা চামার থেকেও নিকৃষ্ট। (নাউযুবিল্লাহ) (হিফজুল ঈমান)
২০। রাসুল (ﷺ)-এর শরীয়তের ব্যাপারে কথা বলার কোন অধিকার নাই। রাসুল (ﷺ)-এর নিকট চাওয়ায় কিছু হয় না। (ইসমাইল দেহলবী, হিফজুল ঈমান)
২১। বান্দার সাথে আল্লাহ্পাক দুনিয়াতে, কবরে ও পরকালে কি ব্যবহার করবেন তা কেউ জানে না। এমন কি কোন নবী বা অলীও তাঁদের নিজেদের সাথে বা অপরের সাথে কি ব্যবহার করা হবে তা জানেন না।
২২। নামাজের মধ্যে রাসুল (ﷺ)-এর প্রতি খেয়াল করা নিজের গরু-গাধার প্রতি খেয়াল করা হতেও অনেক নিকৃষ্ট। (নাউযুবিল্লাহ) (সিরাতুল মুস্তাকিম)
২৩। আমলের দিক দিয়ে উম্মতগন অনেক সময় নবীদের সমান, এমনকি নবীদের থেকেও বড় হয়ে যায়। (তাহযিরুন্নাস)
২৪। খাতামুন্নবী অর্থ শেষ নবী বলা-এটা মূর্খদের ধারনা। (তাহযিরুন্নাস)
২৫। রাসুল (ﷺ)-এর পরে যদি কোন নতুন নবী পয়দা হয় তাহলেও রাসুল (ﷺ)-এর খাতামুন্নবী হওয়ার ব্যাপারে ত্রুটি হবে না। (তাহযিরুন্নাস)
২৬। আল্লাহ্ তা’আলা কোন কাজ সংঘটিত হওয়ার পূর্বে ঐ বিষয়ে অবগত নন। (বুলগাতুল হায়রান)
২৭। নবী করিম (ﷺ) বলেছেন, আমিও একদিন মৃত্যুবরন করে মাটির সাথে মিশে যাব। (নাউযুবিল্লাহ) (হিফজুল ঈমান)
২৮। আব্দুল ওহাব নজদী ভাল লোক ছিলেন, হাদীস অনুযায়ী আমল করতেন, বিভিন্ন বেদআতী ও শিরকী কাজ বন্ধ করতেন, লোকেরা তাকে ওহাবী বলে, তার আক্বীদা খুব ভাল ছিল। (ফতোয়ায়ে রশিদীয়া)
দ্রষ্টব্যঃ তাবলীগি ও ওহাবী আক্বীদার শিক্ষা কেন্দ্র হলো ১৮৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত ভারতের দেওবন্দ মাদ্রাসা (দেওবন্দের অর্থ হলো শয়তানের দল)। আর তাদের ইজতেমা ও প্রচার কেন্দ্র হলো বাংলাদেশের টঙ্গ্ীঁর “কহর দরিয়ায়” (ইজতেমার স্থানটির আসল নাম-কহর দরিয়া)। কুদরতিভাবেই এই নাম দুইটি মনে হচ্ছে রহমত বরকত বিবর্জিত। তা’ছাড়া কহর দরিয়ার ইজতেমার স্থানটি বারংবারই আল্লাহর আযাব-গজবে নিপতিত হচ্ছে। বিষয়গুলি গুনীজনদের বিবেচনার দাবী রাখে। ঢাকায় ১৯৬৫ সালে প্রথম ইজতিমা শুরু হয় (কাকরাইল মসজিদে)। পরবর্তীতে টঙ্গীর কহর দরিয়ায়।
_________________
কিতাব : হক্ব-বাতিলের পরিচয় ও ঈমান রক্ষা
গ্রন্থনা ও সংকলনে:
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খুরশীদ আলম (অবঃ)
🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন