বিবিধ


 বিবিধ


** হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন," যে আমাকে স্বপ্নে দেখবে, সে অচিরেই জাগ্রত অবস্থায়ও আমাকে দেখবে। আর শয়তান আমার আকৃতি ধারন করতে পারে না।( বুখারী ও মুসলীম শরীফ, মিশকাত শরীফ, হাদীস নং- ৪৪০৭,পৃ:- ৬৫২)।


** হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন," আল্লাহ তায়ালার নিরানব্বই - এক কম একশতটি নাম রয়েছে। যে তা মুখস্ত করবে বেহেশতে যাবে।আরেক বর্ণনায় আছে, তিনি বিজোড়, বিজোড়কে ভালবাসেন।( বুখারী ও মুসলীম শরীফ, মিশকাত শরীফ, হাদীস নং- ২১৭৯,পৃ:- ৩৩২)।


** হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, জান্নাতে তিন ব্যক্তি বিনা হিসেবে প্রবেশ করবে -১/ যে ব্যক্তি আপন কাপড় ধুইতে চাইলে পরার জন্য অন্য কাপড় থাকে না।২/ যার উনুনে দু -পাতিল চড়ে না এবং ৩/ কেউ পানি চাইলে জিজ্ঞেস করা হয় না যে, কোন পানি চাও? অর্থাৎ, যাদের পানাহার ও পোষাকে প্রাচুর্য ও লৌকিকতা নেই। (ইহইয়াউল উলুমুদ্দীন, পৃ:- ৭৭৩)।


** হযরত আনাছ ও হযরত আয়েশা

রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা হতে বর্ণিত

আছে,রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া

সাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হল - কিয়ামতের

দিন শহীদদের সাথে কেউ থাকবে কি? তিঁনি বললেন," যে ব্যক্তি প্রত্যেক দিন বিশ বার মৃত্যুকে স্বরণ করে, তার হাশর শহীদদের সাথে হবে।( ইহইয়াউল উলুমুদ্দীন,পৃ:- ৮৮৫)।


** তাজেদারে মদীনা হযরত মুহাম্মাদ

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ

করেছেন," যে ব্যক্তি সামর্থ থাকা সত্বেও

উন্নত পোষাক পরিধান করাকে বিনয়ের

কারণে ত্যাগ করবে। আল্লাহ তায়ালা তাকে

কারামাতের হুল্লাহ ( অর্থাৎ - জান্নাতী

পোষাক) পরিধান করাবেন।( আবু দাউদ, 

খন্ড - ৪র্থ,হাদীস নং- ৪৭৭৮,পৃ:- ৩২৬,

খাবারের ইসলামী নিয়মাবলী, পৃ:- ৪৭ ও যিকর - ই - জামিল,পৃ:- ৩৩৮)।


** হযরত আমর ইবনে শুআইব তাঁর পিতা থেকে, তিনি তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন," তোমরা সাদা চুলগুলো উপড়িয়ে ফেলিওনা।কেননা, তা মুসলমানদের জন্য নূর।বস্তুত, ইসলামের মধ্যে থাকা অবস্থায় যে ব্যক্তির একটি পশম সাদা হবে, তার উছিলায় আল্লাহ তায়ালা তার জন্য একটি নেকী লিপিবদ্ধ করবেন এবং তার একটি গুনাহ মুছে ফেলবেন এবং তার একটি দরজা বুলন্দ করবেন।( আবু দাউদ শরীফ, মিশকাত শরীফ,হাদীস নং- ৪২৫৯,পৃ:- ৬৩৪)।


** হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন," যে ব্যক্তি গিরগিটিকে (কাঁকলাসকে) প্রথম আঘাতে বধ করবে, তার জন্য (আমলনামায়) একশত নেকী লিখা হবে। আর দ্বিতীয় আঘাতে মারলে,(তার জন্য) তার চাইতে কম এবং তৃতীয় আঘাতে মারলে ( তার জন্য) তা অপেক্ষা কম লিখা হবে।( মুসলীম শরীফ,মিশকাত শরীফ, হাদীস নং- ৩৯৪৩,পৃ:- ৫৯৭)।


** এক হাদীসে ইরশাদ হয়েছে,যে লোক তার স্ত্রীর অসদাচরণে ধৈর্যধারন করবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে এই পরিমান সওয়াব দেবেন; যে পরিমান হযরত আইয়ুব আলাইহিস সালামকে তাঁর বিপদের জন্য দিয়েছিলেন। পক্ষান্তরে, যে স্ত্রী তার স্বামীর বদ - মেযাযীতে ধৈর্য ধরবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে ফেরাউন - স্ত্রী আছিয়ার সমপরিমান সওয়াব প্রদান করবেন। (ইহইয়াউল উলুমুদ্দীন, পৃ:- ৩৩৭)।


** হযরত যাহহাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, যে ব্যক্তি বাজারে গিয়ে পছন্দের জিনিস দেখে,এরপর ধৈর্য ধরে ও সাওয়াবের আশা করে; এটা তার জন্য আল্লাহর রাহে হাজার দীনার ব্যয় করা অপেক্ষা উত্তম।( ইহইয়াউল উলুমুদ্দীন, পৃ:- ৭৭৭)।


** হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ

রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি, নবীয়ে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণনা করেন।তিনি বলেন," যে মহিলা তা স্বামীর ( আনুগত্য প্রকাশে) কাপর ধুইয়ে দেয়, তার আমলনামায় আল্লাহ পাক এক হাজার নেকী লিখে দেন, তার এক হাজার গুনাহ মাফ করে দেন। পৃথিবীর সব কিছুই তার জন্য গুনাহর ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং তাঁর এক হাজার দরজা বুলন্দ করে দেয়া হয়।এ জাতীয় অসংখ্য হাদীস ও বর্ণনাসমূহ তাফসীরে রুহুল বয়ান শরীফ ও ইমাম ছফুরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক রচিত " নুযহাতুল

মাজালিস" এ উল্লেখ করা হয়েছে।

(যুগ জিজ্ঞাসা,পৃ:- ২৪৩)।


** হযরত আবু কাতাদাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

বলেছেন," উত্তম স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ হতে,আর খারাপ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে। কাজেই তোমাদের যে কেউ ভাল স্বপ্ন দেখে,সে যেন তা শুধু এমন ব্যক্তির কাছে প্রকাশ করে যাকে সে ভালবাসে। আর যদি কেউ এমন স্বপ্ন দেখে,যা তার নিকট অপছন্দনীয়; তাহলে সে যেন তার ক্ষতি এবং শয়তানের অনিষ্ট থেকে আল্লাহর নিকট পানাহ চায় এবং (বাম দিকে) তিনবার থুথু ফেলে। আর স্বপ্নটি যেন কারও নিকট প্রকাশ না করে, এতে তার কোন ক্ষতি হবে না।(বুখারী ও মুসলীম শরীফ,মিশকাত শরীফ, হাদীস নং- ৪৪০৮,পৃ:- ৬৫২)।


** হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন,রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন," বিধবা ও মিসকিনের তত্বাবধানকারী আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারীর মত। রাবী বলেন,

আমার ধারনা, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাও বলেছেন:- রাত জাগরণকারী - যে অলসতা করে না এবং ঐ রোযাদারের মত যে কখনও রোযা ভঙ্গ করে না।( বুখারী ও মুসলীম শরীফ,

মিশকাত শরীফ, হাদীস নং- ৪৭৩৪,পৃ:- ৬৯৪)।


** হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস

রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রসূলুল্লাহ

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন," যার একটি কন্যা বা বোন আছে।

সে তাকে জীবন্ত প্রোথিত করেনি এবং তাকে তুচ্ছও মনে করেনি। আর তার উপর পুত্র সন্তানকে প্রাধান্যও দেয়নি,আল্লাহ তায়ালা তাকে বেহেশতে প্রবেশ করাবেন।

(আবু দাউদ শরীফ, মিশকাত শরীফ, হাদীস নং- ৪৭৬২,পৃ:- ৬৯৭)।


** তালীমুল মুতায়াল্লিম গ্রন্থে ১২ তম

পরিচ্ছেদে বর্ণনা করা হয় - পড়া মনে রাখার শক্তিশালী উপায় হলো, কঠোর প্রচেষ্টা ও ধারাবাহিক পঠন,কম আহার ও স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধির অন্যতম উপায়। কোন কোন ইমাম বলেছেন,স্বরণ শক্তির বৃদ্ধির জন্য দেখে কুরআন তিলাওয়াতের চেয়ে অধিক কার্যকরী কোন বিষয় নেই। এছাড়া মিছওয়াক করা, মধু পান করা। আর প্রতিদিন লালচে রং এর একুশটি কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়া, এতে স্বরণ শক্তি বাড়ে,বহু রোগ - ব্যাধি হতে পরিত্রান পাওয়া যায়। আর যে সব বস্তু কপ ও

বলগমকে হ্রাস করে তা আহার করলে স্বরণ শক্তি বৃদ্ধি পায়।( শায়খ বুরহানুদ্দীন

জারনুযীর রহমাতুল্লাহি আলাইহি রচিত,

তালীমুল মুতায়াল্লিম,পৃ:- ১০৮ - ১১০,যুগ

জিজ্ঞাসা,পৃ:-২৬৯)।


** "আহমদ,তিরমিযী,ইবনে মাযাহ

নুবাইশাতুল খায়র রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ ফরমায়েছেন," যে কেউ পেয়ালায় আহার করে জিহবা দিয়ে সেটাকে সাফ করে নেয়,ওই পেয়ালা তার জন্য মাগফিরাতের দো'আ করে।"


** "মুসনাদ - ই হাসান ইবনে সুফিয়ান "- এ রাইত্বাহর পিতা রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত,রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন," পেয়ালা লেহন করে খাওয়া আমার নিকট সেটা ভর্তি করে দান করার চেয়েও বেশী প্রিয়।" অর্থাৎ - লেহন করে খাওয়ার মধ্যে যেই বিনয় প্রকাশ পায়,সেটার সাওয়াব ওই সাওয়াব অপেক্ষা বেশী।( উপরোক্ত দুটি হাদীস শরীফ - ফাতাওয়ায়ে রেযভিয়াহ, ১ম খন্ড,পৃ :- ২৪৩ এর সূত্রে " ইরশাদাত - ই আলা হযরত রহমাতুল্লাহি তায়ালা আলাইহি,পৃ:- ৩৫ থেকে নেয়া হয়েছে)।


** হুযুর সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি

ওয়া সাল্লাম ফরমায়েছেন, যে ব্যক্তি নূতন

কাপড় পরিধান করার সময় এই দু'আ পাঠ করবে " আল হামদু লিল্লাহিল্লাযী কাসানী মা উওয়ারী বিহী আওরতী ওয়া আতাজাম্মালু বিহী ফী হায়াতী" এবং পুরাতনখানা সাদকা করে দিবে, সে জীবদ্দশায় ও মৃত্যুর পর আল্লাহ তা'আলার হিফাযতে থাকবে।অর্থাৎ - আল্লাহ তা'আলা তাঁর হিফাযতকারী ও রক্ষক (আহমদ,

তিরমিযী, ও ইবনে মাজাহ শরীফ, যিকর -ই - জামীল,পৃ:- ৩৩৮)।

____________________

বালাগাল উলা বিকামালিহী - 

কাশাফাদ দুজা বিজামালিহী,

হাসুনাত জামী'ঊ খিসালিহী - 

সল্লু আলাইহি ওয়া আলিহী।।

------------------------------------------

আমীন। ইয়া রব্বাল 'আলামীন।

======== সমাপ্ত ========


__________________

ফয়যানে শরিয়ত ও মারফত (আমলের ভান্ডার)

লেখক : মুহাম্মাদ আবদুল কাদির মাহী

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন