জাগ্রত অবস্থায় নবীজীর দীদার প্রসঙ্গে
প্রশ্নঃ জাগ্রত অবস্থায় নবী করিম ﷺ এর দর্শন লাভ করা কি সম্ভব ও বাস্তব?
উত্তর : জাগ্রত অবস্থায় নবী করিম ﷺ এর দীদার লাভ করা সম্ভব এবং বাস্তবে ও তা ঘটেছে। আলেমগন উল্লেখ করেছেন যে, অনেক অলী আল্লাহই নবী করিম ﷺ কে স্বপ্নে দেখার পর পুনরায় জাগ্রত অবস্থায় দেখেছেন এবং তাঁদের মঙ্গলামঙ্গলের অনেক কিছু জেনেও নিয়েছেন । এটা তাঁদের কারামতের অংশ।
প্রশ্ন : উক্ত সম্ভাবনা ও বাস্তবতার কোন দলীল ও প্রমান আছে কি?
উত্তরঃ বােখারী ও মুসলিম শরীফে উল্লেখ আছেঃ (অনুবাদ) অর্থঃ "নবী করিম ﷺ এরশাদ করেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নে দেখেছে, সে অচিরেই আমাকে জাগ্রত অবস্থায় দেখতে পাবে। শয়তান আমার সুরত ধারন করতে পারেনা"। (বােখারীও মুসলিম)।
হাদীস বিশেষজ্ঞ ইমামগন এভাবে উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যা করেছেন- এই হাদীসে সুসংবাদ দেয়া হয়েছে যে, নবী করিম ﷺ এর যে উম্মত স্বপ্লাবস্থায় দীদারে মােস্তাফার দ্বারা সৌভাগ্যবান হতে পেরেছে, সে মৃত্যুর পূর্বেই জাগ্রত অবস্থায়ও নবীজীকে দেখতে পাবে- ইনশাআল্লাহ। মৃত্যুর পূর্বক্ষনে হলেও সে অবশ্যই দেখবে। একই সময়ে লক্ষ জায়গায় এভাবে নবী করিম ﷺ হাজির হতে পারেন।
কোন কোন কম এলেমের লােক এই হাদীসের অপব্যাখ্যা করে বলেছে যে, হাদীসের মধ্যে মানাম ও ইয়াক্জা অর্থাৎ স্বপ্ন ও জাগ্রত অবস্থা' অর্থ- যথাক্রমে কবর ও হাশর।
এটা তাদের ভুল ব্যাখ্যাও হাদীসের মর্ম পরিবর্তন মাত্র। কেননা, কবরে ও হাশরে তাে সমস্ত উম্মতই, এমনকি- কাফিরও হুজুর ﷺ কে দেখতে পাবে। এটা পরীক্ষার জন্য ।এটা তাে সৌভাগ্যের বিষয় নয় বরং পরীক্ষার বিষয়। অথচ হাদীসের মর্ম হচ্ছে সৌভাগ্যও কারামত হিসাবে।
বর্নিত হাদীস খানা অতি ব্যাপক এবং অনেক মাসয়ালা ও আকিদার মীমাংসাকারী দলীল ।
যথাঃ
১। নবী করিম ﷺ একই সাথে পুথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে স্বপ্নে দেখা দিতে এবং স্বশরীরে হাজির হতে পারেন। কেননা, উম্মাত যেখানে- তাঁর দীদারও সেখানেই। তিনি পৃথিবীময় হাজির ও নাজির।
২। ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতি আলাইহি বলেছেন, এ সংক্রান্ত সমস্ত হাদীসের সারকথা হলাে- নবী করিম ﷺ শরীর ও রূহ মােবারক সমন্বয়ে দেহধারী হিসাবে জীবিত আছেন। তিনি দুনিয়ার জীবদ্দশার মতই এখনও আসমান জমিনের যথায় ইচ্ছা ক্ষমতা প্রয়ােগ করতে সক্ষম। কিন্তু ফেরেস্তাদের মতই তিনি লােক চক্ষুর অন্তরালে বিরাজমান। আল্লাহ যখন ইচ্ছা করেন- তখন সৌভাগ্যবান ব্যক্তিদের থেকে পর্দার অন্তরায় সরিয়ে নেন এবং ঐ বান্দা তাঁকে দেখেন। এটা ঐ বান্দার কারামত। নবীজী সর্ব জায়গায় আছেন, কিন্তু লােক চক্ষুর অন্তরালে। টিভির ছবি ইথারের মাধ্যমে সর্বত্র।বিরাজমান। চাবি অন্ (on) করলেই দেখা যায়- কিন্তু অফ (off) করলে দেখা।যায়না। নবীজীর অবস্থানের এবং হাজির হওয়ার বিষয়টিও তদ্রুপ। -অনুবাদক।
(প্রশ্নোত্তরে আকায়েদ ও মাসায়েল শিক্ষা,পৃষ্ঠা :- ৭৪-৭৫।
কৃত: আল্লামা শেখ জাঈন ইবনে ছামীত আলভী হোসাইনী।
অনুবাদ : অধ্যক্ষ হাফেজ আল্লামা আবদুল জলীল রহমাতুল্লাহি আলাইহি।)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন