চলাফেরা করার ১৫টি সুন্নাত ও আদব (১)


চলাফেরা করার ১৫টি সুন্নাত ও আদব (১)


লিখাটি আমীরে আহলে সুন্নাত হযরত মাওলানা ইলয়াস আত্তার কাদেরী রযভী কর্তৃক লিখিত “সামুদ্রিক গম্বুজ“ নামক রিসালা হতে সংগৃহীত


(১) পারা ১৫ সূরা বনী ইসরাঈল আয়াত নং ৩৭ এর মধ্যে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

وَلَا تَمْشِ فِي الْأَرْضِ مَرَحًا ۖ إِنَّكَ لَن تَخْرِقَ الْأَرْضَ وَلَن تَبْلُغَ الْجِبَالَ طُولًا (৩৭)

কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ: এবং ভূ পৃষ্ঠে অহংকার করে চলাফেরা করো না নিশ্চয় কখনো তুমি ভূ-পৃষ্ঠকে বিদীর্ণ করতে পারবে না এবং কখনো উচ্চতার মধ্যে পাহাড় সমান হতে পারবে না।

(২) দাওয়াতে ইসলামীর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মাকতাবাতুল মাদীনা কর্তৃক প্রকাশিত ৩১২ পৃষ্ঠা সম্বলিত কিতাব বাহারে শরীয়ত এর ১৬ অংশের, ৭৮ পৃষ্টার মধ্যে ফরমানে মুস্তফা صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم বর্ণিত রয়েছে, এক ব্যক্তি দুইটি চাদর পরিহিত অবস্থায় অহংকার করে চলছিল তাকে ভূ-পৃষ্ঠে দাবিয়ে দেয়া হল। সে কিয়ামত পর্যন্ত দাবতেই থাকবে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫৪৬৫)।

(৩) মাদীনার তাজেদার, উভয় জগতের সরদার صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم কখনো কখনো পথ চলতে চলতে কোন সাহাবীর হাত আপন হাত মুবারকে নিয়ে নিতেন। (আল মুজামুল কাবীর লিত তাবরানী, খন্ড-৭, পৃ-১৬২)

আমরাদ অর্থাৎ সুশ্রী বালকদের হাত ধরবেন না, কামভাব নিয়ে যে কোন ইসলামী ভাইয়ের হাত ধরা কিংবা মুসাফাহা করা (অর্থাৎ হাত মিলানো) অথবা কুলাকুলি করা হারাম ও জাহান্নামে নিক্ষেপকারী কাজ।

(৪) রাসূলে আকরাম, নূরে রাস্তার صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم যখন পথ চলতেন তখন একটু ঝুকে চলতেন মনে হত যেন তিনি صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم কোন উঁচু জায়গা থেকে নিচে নামছেন। (আশ শামাঈলুল লিত তিরমিযী, পৃ-৮৭, হাদীস নং-১১৮)।

(৫) গলায় স্বর্ণের চেইন বা যে কোন প্রকারের ধাতুর চেইন লাগিয়ে মানুষকে দেখানোর জন্য বুক খোলা রেখে দর্পভরে চলবেন না কেননা এটা নির্বোধ, অহংকারী ও ফাসিক লোকদের চলা। গলায় স্বর্ণের চেইন পরা পুরুষের জন্য হারাম এবং অন্যান্য ধাতুও না জায়িয।

(৬) যদি কোন অসুবিধা না হয় তবে রাস্তার এক পাশ দিয়ে মধ্যম গতিতে চলুন, না এত দ্রুত গতিতে চলবেন যে মানুষের দৃষ্টি কেড়ে নেয় যে লোকটি দৌড়ে দৌড়ে কোথায় যাচ্ছে। না এত ধীরগতিতে চলবেন যে লোকেরা আপনাকে অসুস্থ মনে করে।

(৭) রাস্তায় চলতে চলতে বিনা কারণে এদিক সেদিক দেখা সুন্নাত নয়, দৃষ্টি নত করে গাম্ভীর্যতার সাথে চলুন। হযরত সায়্যিদুনা হাসসান বিন আবি সিনান رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ ঈদের নামায আদায় করতে গেলেন, যখন ঘরে ফিরে আসলেন তখন উনার স্ত্রী বললেন, আজ কয়জন নারীকে দেখেছেন? তিনি চুপ রইলেন, যখন তিনি বারংবার জিজ্ঞাস করলে বললেন, “ঘর থেকে বের হয়ে তোমার নিকট ফিরে আসা পর্যন্ত আপন (পায়ের) বৃদ্ধাঙ্গুলের দিকে তাকিয়েছিলাম।”(কিতাবুল ওয়ারা মাআ মাওসূআহ ইমাম ইবনে আবিদ দুনইয়া, খন্ড-১ম, পৃ-২০৫)।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন