গোসলের বর্ণনা


❏ মাসয়ালা: (০৪)


গোসল চার প্রকার। যথা:


১) ফরজ


২) ওয়াজিব


৩) সুন্নাত


৪) মুস্তাহাব।



❏ মাসয়ালা: (০৫)


পাঁচ প্রকারের গোসল ফরজ। যথা: 


(১) ইহ্তেলাম (স্বপ্নযোগে বীর্য বের হওয়া)


(২) জেহান্দি মনি جهندى منى (শরীর উত্তেজিত বশত: বীর্য বের হওয়া)


(৩) জানাবাত (স্বামী-স্ত্রীর সহবাস জনিত গোসল)


(৪) হায়েজ (স্ত্রীদের মাসিক ঋতুস্রাব)


(৫) নেফাস (বাচ্চা প্রসাবের পর মেয়েদের নিকট হতে যে রক্তস্রাব বের হয়)।



(১) ইহ্তেলাম:- কোন ব্যক্তি নিদ্রাবস্থায় স্বপ্নে দেখার পর জাগ্রত হয়ে কাপড় ভিজা দেখলে তার উপর গোসল ফরজ। আর যদি কাপড় ভিজা না দেখে তার উপর গোসল ফরজ নয়।


(২) (জেহান্দি মনি) جهندى منى :- কোন ব্যক্তির শাহ্ওয়াতের কারণে শরীর উত্তেজিত হয়ে মনি নির্গত হলে তার উপর গোসল ফরজ।


(৩) জানাবাত:-মহিলার উভয়ই রাস্তা দিয়ে অর্থাৎ সামনে ও পিছনের রাস্তা দিয়ে সামান্য পরিমাণ লিঙ্গ প্রবেশ করলে উভয়ের উপর গোসল ফরজ। তবে মহিলাদের সামনের রাস্তা হালাল আর পিছনের রাস্তা অভিশপ্ত।


(৪) হায়েজ:- মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রতি মাসে ঋতুস্রাব জনিত রক্ত প্রবাহিত হওয়া। তবে এ ক্ষেত্রে মহিলাদের মধ্যে বিভিন্ন শ্রেণীর হতে পারে। অর্থাৎ সময়ের মধ্যে একেকজনের একেক রকমের বিদ্যমান। তবে সর্বনিম্ন হচ্ছে তিন দিন আর সর্বোচ্চ সময়সীমা হচ্ছে ১০ দিন পর্যন্ত। আর যদি ১০ দিনের বেশী রক্ত প্রবাহিত হয় তবে এটিকে ইস্তেহাজা জনিত রোগ বলে। তবে সে ক্ষেত্রে উক্ত মহিলা গোসল করে নামাজ পড়বে এবং তার স্বামীর খেদমতে হাজির থাকবে।


(৫) নেফাস:- মহিলাদের সন্তান প্রসাবের পর যে রক্ত প্রবাহিত হয়। তবে এক্ষেত্রে রক্ত বের হওয়াটা কারো দশ দিন, কারো পনর দিন আবার কারো পঁচিশ দিন, কারো এক মাস এবং সর্বোচ্চ চলি­শ দিন সময়সীমা। আর যদি চলি­শ দিন হতে বেশী রক্ত প্রবাহিত হয় তবে তাহা হবে ইস্তেহাজা জনিত রোগ। সেক্ষেত্রে উক্ত মহিলা গোসল করে নামাজ আদায় করবে এবং স্বামীর অনুগত থাকবে।



❏ মাসয়ালা: (০৬)


ওয়াজিব গোসল দুই রকম- যথা:


(১) মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেওয়া জীবিতদের উপর ওয়াজিব।


(২) যদি কাফের মুসলমান হওয়ার জন্য জুনুবী তথা অপবিত্রাবস্থায় আসে এমতাবস্থায় গোসল করা ওয়াজিব।



❏ মাসয়ালা: (০৭)


সুন্নাত গোসল পাঁচ রকমের। যথা:


(১) জুমার দিন নামাজের পূর্বে গোসল করা।


(২) ঈদুল ফিতরের দিন নামাজের পূর্বে।


(৩) ঈদুল আজহার দিন নামাজের পূর্বে।


(৪) আরাফাতের দিন অর্থাৎ জিলহজ্ব মাসের ৯ তারিখ দিবসে। যা হাজীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।


(৫) ইহরাম বাঁধার সময় গোসল করা হাজ্বীদের জন্য সুন্নাত।



❏ মাসয়ালা: (০৮)


মুস্তাহাব গোসল তিন ভাবে হয়ে থাকে। যথা:


(১) ছেলে কিংবা মেয়ে যখন তাদের বালেগ হওয়ার বছর আরম্ভ হবে। তখন তারা গোসল করা       মুস্তাহাব।


জ্ঞাতব্য যে মেয়েদের ক্ষেত্রে বালেগা হওয়ার সময় ৯ বৎসর হতে আরম্ভ হয়। আর ছেলেদের ক্ষেত্রে বালেগ হওয়ার সময় ১২ বৎসর হতে আরম্ভ হয়। যে দিন হতে মেয়েদের ৯ বৎসর আরম্ভ হবে। আর ছেলেদের ১২ বৎসর শুরু হবে তখন তারা বালেগ হিসেবে পরিগনিত হবে। অর্থাৎ তখন হতে তারা উভয়ের উপর নামাজ রোজা ইত্যাদি শরীয়তের হুকুম আহকাম ফরজ হয়ে থাকে।


(২) নাবালেগ ছেলে মেয়েরা যখন অপবিত্র হবে তখন তাদেরকে গোসল করানো মুস্তাহাব।


(৩) যখন কোন কাফের মুসলমান হওয়ার জন্য আসবে এবং অপবিত্র অবস্থায় না হয় তখন তাকে গোসল করানো মুস্তাহাব।



❏ মাসয়ালা: (০৯)


পানি যদি ঘোলাটে হয়, উক্ত পানি দ্বারা গোসল ও অজু করা বৈধ। যতক্ষণ পর্যন্ত গন্ধ এবং স্বাদ পরিবর্তন না হবে।



❏ মাসয়ালা: (১০)


রং, খোশবু এবং স্বাদ অপবিত্র বস্তু পড়ার কারণে যদি উক্ত গুণ সমূহের পরিবর্তন ঘটে সেক্ষেত্রে উক্ত পানি দ্বারা অজু ও গোসল করা বৈধ নয়। যদি পবিত্র বস্তু পতিত হওয়ার কারণে যেমন- সাবান, জাফরান ইত্যাদি কারণে কিংবা পানি অনেকদিন বন্ধ থাকার কারণে রং, খোশবু ও স্বাদ পরিবর্তন হলে উক্ত পানি অপবিত্র নয়। উক্ত পানি দ্বারা গোসল এবং অজু করা বৈধ। তবে পানি পাওয়া যেতে হবে। অর্থাৎ পানি যেন গাঢ় না হয়ে পাতলা হয়।


প্রবাহিত তথা প্রবাহমান পানির হুকুম হচ্ছে- পানি এই পরিমান হতে হবে যে- যদি কেউ এতে পাতা ফেলে দেয় তা প্রবাহমান হবে। তবে সে পানির উৎপত্তি স্থল তথা শুরু পবিত্র হবে অর্থাৎ যেখান থেকে পানি প্রবাহিত হয়েছে, তা পবিত্র হতে হবে। যদিওবা অপবিত্র বস্তু ভাসমান হবে তবু উক্ত পানি পাক। সে পানি দ্বারা অজু ও গোসল করা বৈধ।

_________________

কিতাবঃ মুনীয়াতুল মুছ্লেমীন

[মাসয়ালা-মাসায়েল] [ প্রথম খন্ড ]

রচনায়ঃ মুহাম্মদ আজিজুল হক আল্-কাদেরী

সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন