রশিদ আহমদ গাঙ্গুহী সাহেবের আকিদাঃ
১। তিনি ছিলেন তাবলীগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মৌ: ইলিয়াস সাহেবের পীর। ইলিয়াস সাহেব তাকে জামানার কুতুব ও মােজাদ্দেদ ঘােষণা দেন। (মালফুজাত নং ১৪৭)
২। আল্লাহ তাঁর হাবীব (ﷺ)-কে কুরআনে বিশ্ববাসীর জন্য রহমত স্বরূপ (রাহমাতুল্লিল। আলামীন) প্রেরণ করেছেন বলে ঘােষণা দেন। অথচ গাঙ্গুহী সাহেব বলেন"রাহমাতুল্লিল আলামীন"শুধু রাসূল (ﷺ) একা নন। আরাে অনেক নবী, অলী এবং আলেমগণ"রাহমাতুল্লিল আলামীন"হতে পারেন। (ফতােয়ায়ে রশীদ, পৃ: ১০৪)
৩। গাঙ্গুহী সাহেবের মতে কোন সাহাবী (رضي الله عنه) কে কাফের বললে ও সে এরূপ কবিরা গুনাহর জন্য সুন্নী জামাত তথা ইসলামের সঠিক দলের বহির্ভূত হবে না। (ফতােয়ায়ে রশীদিয়া, পৃ: ১৩৪)
মন্তব্য-কেউ যদি কাউকে বিনা কুফুরীতে কাফের বলে, তা হলে সে নিজেই কাফের হয়ে যায়, এটাই আমাদের শরীয়তের বিধান।
৪। তার মতে ওরশ ও মিলাদ মাহফিলে শরীয়তের পরিপন্থী কোন কাজ না হলেও তা নিষিদ্ধ তথা হারাম। (ফতােয়ায়ে। রশীদিয়া, পূ: ১১৫)
৫। ওরশের দিন আওলিয়া কেরামদের মাজার যিয়ারত করতে যাওয়া হারাম। (ফতােয়ায়ে রশীদিয়া, পৃ: ৫৫৫)
৬। তার মতে প্রচলিত ফাতেহা (সূরা ফাতেহা শরীফ, চারকুল, কয়েকবার দরূদ শরীফ পড়ে মৃত ব্যক্তির রূহের প্রতি সওয়াব পৌছান) পাঠ করা বিদআত (নিকৃষ্ট কাজ) এবং হিন্দুদের পূজার মত। (ফতােয়ায়ে রশীদিয়া পৃ: ১১৫)
৭। মিলাদ মাহফিলের অনুষ্ঠান করা সর্বদাই না-জায়েয (কিয়াম করা হউক বা না করা হউক) (ফতােয়ায়ে রশীদিয়া, পৃঃ ১৩০)
৮। কোন ওরশ বা মিলাদে শরীক হওয়া জায়েয নেই। মূলত ; কোন ওরশ শরীফ ও মিলাদ পাঠ করাই বৈধ নয়। (ফতােয়ায়ে রশীদিয়া, পৃঃ ১৩৪)
৯-আশুরা তথা মহররম মাসে ইমাম হুসাইন (رضي الله عنه) এর শাহাদাতের আলোচনা করা যদিও বিশুদ্ধ বর্ণনা দ্বারা হয় এবং এ উপলক্ষে বিনামূল্যে শরবত, দুধ ইত্যাদি পান করানাে-এ সব না-জায়েজ এবং রাফেজীদের সাথে সামঞ্জস্য থাকায় হারাম। (ফতােয়ায়ে রশীদিয়া, পূ ; ১৩৯)
গাঙ্গুহী গংদের মতে মিলাদ, ওরশ, আশুরা ইত্যাদি অনুষ্ঠানের তবাররক খাওয়া না-জায়েয হারাম এবং উহা ভক্ষণ করলে অন্তরের নূর পর্যন্ত বেরিয়ে যায় (মাসিক রহমানী পয়গাম, ৫ ম বর্ষ, ১০ ম সংখ্যা, অক্টোবর ১৯৯৯, পৃ: ৩৭)। অথচ গাঙ্গুহী সাহেব হিন্দুদের পুজার প্রসাদ খাওয়াকে জায়েয বলে ফতােয়া দিয়েছেন।
১০। কারবালার শহীদগণের স্মরণে প্রকাশিত"মরসিয়াহ"(শােক গাঁথা) কারাে কাছে থাকলে গাঙ্গুহী সাহেব তা জ্বালিয়ে ফেলতে কিংবা মাটিতে পুঁতে রাখার নির্দেশ দেন (ফতােয়ায়ে রশীদিয়া, পৃ: ৫৭৭)। অথচ তার অনুসারীগণ গাঙ্গুহী সাহেবের স্মরণে"মরসিয়ায়ে রশীদ আহমদ"নামক একটি শােক গাঁথা রচনা করে সর্বত্র বিতরণ করেছেন। তারা যে নবী-অলী বিদ্বেষী ইহা তার একটি জলন্ত প্রমাণ।
***মন্তব্য-উক্ত মরসিয়ায় মৌ: মাহমুদ হাসান সাহেব মৌ: গাঙ্গুহী সাহেবকে"কেবলায়ে হাজত", অর্থ-অন্যের প্রয়ােজন/ উদ্দেশ্য পূরণকারী বলেছেন। অথচ দেওবন্দী ও তাবলীগীদের ফতােয়া হলাে নবী অলীর নিকট হাজত পেশ বা পূরণের আবেদন করা শিরক। উপরন্ত উক্ত মারসিয়ায় শেষাংশে মুরিদগণকে বান্দা বলা হয়েছে। অথচ তাদের নিকট"আব্দুন্নবী"বলা শিরক। এহেন দ্বিমুখী নীতি কি মােনাফেকি নয় ?
১১। গাঙ্গুহী সাহেবের মতে কাকের গােস্ত খেলে নাকি সওয়াব। পাওয়া যাবে। (ফতােয়ায়ে রশীদিয়া, পৃঃ ৫৯৭)
১২। দুই ঈদের দিন কোলাকুলি করা বেদআত। (ফতােয়ায়ে রশীদিয়া, পৃ: ৬২)। অথচ ইহা সাহাবীগণের সুন্নাত।
১৩। যখন নবী আলাইহিমুস সালামদের এলমে গায়েব নেই তখন, ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ) বলা না-জায়েয। (ফতােয়ায়ে রশীদিয়া, পৃ: ৬২)। অথচ ইহা সাহাবীগণের সুন্নাত।
১৪। মিথ্যা বলা আল্লাহর ক্ষমতার অধীন, কেননা তিনি। সর্বশক্তিমান। (ফতােয়ায়ে রশীদিয়া, পৃ: ৯৭)
১৫। হিন্দুদের হােলী দেওয়ালীর প্রসাদ খাওয়া জায়েয। (ফতােয়ায়ে রশীদিয়া, ২ য় খন্ড, পৃ: ১৩২)
১৬। ভাঙ্গী চামারের ঘরের রুটি ইত্যাদির মধ্যে কোন দোষ নেই যদি পাক হয়। (ফতােয়ায়ে রশীদিয়া, ২ য় খন্ড, পৃঃ ১৩৪)
১৭। হিন্দুদের সুদী টাকার উপার্জিত অর্থে কূপ বা নল কূপের পানি পান করা জায়েয। (ফতােয়ায়ে রশীদিয়া, ৩ য় খন্ড, পৃঃ১১৩-১১৪)
মৌঃ রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী সাহেবের উপরােক্ত অধিকাংশ মতবাদ/ আকিদা আমাদের আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আকিদার পরিপন্থি।
__________________
কিতাবঃ ইসলামী তাবলিগ বনাম বর্তমান তাবলিগ
সংকলকঃ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খুরশীদ আলম (অবঃ)
🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন