ইসলাম নারী সমাজকে কী মর্যাদা দিয়েছে, কত উঁচু আসনে আসীন করেছে, কত অধিকারে অধিষ্টিত করেছে তা বুঝা ও অনুভব করার জন্য ইসলাম পূর্ব নারী সমাজের অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা প্রয়োজন। দুঃখের দৃশ্য না দেখলে যেমন সুখের মূল্য বুঝা যায়না অন্য ধর্মের নারীর করুণ অবমাননা না জানলে ইসলামের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা বুঝে আসবেনা। তাই বিশুদ্ধ হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে, মৃত মানুষকে যখন কবরে রাখা হবে, তখন দুইজন ফেরেশতা এসে প্রশ্ন করবেন। প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলে সে জান্নাতী বলে সাব্যস্থ হবে। তখন তাকে প্রথমে জাহান্নামের ভয়াবহ দৃশ্য দেখানো হবে আর তাকে বলা হবে এই জাহান্নামেই ছিল তোমার অবস্থান স্থল কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা দয়া করে তোমাকে তা পরিবর্তন করে জান্নাতকে তোমার স্থায়ী আবাসস্থল করে দিয়েছেন। তখন জাহান্নামকে তার চোখের সামনে এনে তাকে দেখানো হবে। এর উদ্দেশ্য হলো
জাহান্নামের ভয়ানক দৃশ্য দেখে যেন সে জান্নাতের মূল্যায়ন করতে পারে। তাই আমরা বিভিন্ন ধর্মে নারী সমাজের অবস্থা সম্পর্কে আলোকপাত করবো।
পাশ্চাত্যের বস্তুবাদী সভ্যতা নারী জাতিকে কেবল ভোগ-বিলাসের নিষ্প্রান পণ্যে পরিণত করে নারীর মর্যাদা ও অধিকারকে ভূলুণ্টিত করেছে। পুঁজিবাদী পাশ্চাত্য বলুন আর সমাজতান্ত্রিক পাশ্চাত্য, উভয় দলে নারী সমাজ দারুণভাবে অবহেলিত, অপদস্ত ও বঞ্চিত। উভয় সমাজেই নারীকে পুরুষের মনোরঞ্জন এবং পুরষালী দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে বাধ্য করা হচ্ছে। অন্য দিকে তথাকথিত ধর্মগুলো তো নারীকে মানুষ হিসাবে মানতেই চায়না। কোন কোন ধর্মে নারীকে ‘সকল পাপের উৎস’ বলে ঘোষণা করেছে। আবার কোন কোন ধর্মে নারীর আত্মা আছে কিনা সন্দেহ পোষণ করে।
খ্রিস্টানদের বাইবেল, ইহুদীদের তৌরাত, বৌদ্ধদের ত্রিপটক, পারসিকদের জিন্দাবেস্তা, শিখদের গ্রন্থ সাহেব আর হিন্দুদের বেদ-ঋগবেদ বা গীতার কোথাও নারীদের অধিকার ও মর্যাদা সংক্রান্ত কোন আইন-কানুনের অস্থিত্ব নেই। এমনকি নারীদের মর্যাদা ও অধিকার সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য কোন আলোচনা পর্যন্ত নেই। বরং নারী নির্যাতন ও নারীর অবমাননা এবং নারী লাঞ্চনার অপমানজনক ও লোমহর্ষক কাহিনী অথবা যৌন ব্যভিচারের অশ্লীল কাহিনী পরিলক্ষিত হয়। প্রাচীন ইতহিাসে মানুষের মধ্যে সর্বদা রক্তক্ষয়ী, যুদ্ধবিগ্রহ, দস্যুবৃত্তি, চুরি-ডাকাতি, দুর্বলের উপর সবলের অত্যাচার, নারী ও শিশু নির্যাতন দৃশ্যমান হয়। এসব ক্ষেত্রে পুরুষের ভূমিকা হলো মূখ্য। তাই পুরুষ জন্মগ্রহণ করলে তারা আনন্দিত হতো। আর ওইসব ক্ষেত্রে নারীর কোন ভূমিকা থাকেনা বরং তারা অসহায় ও পুরুষ নির্ভরশীল হয়ে থাকে। কোন নারীকে শত্রু পক্ষ বন্দী করলে ক্রীতদাসী বানিয়ে রাখে। তাই নারী সন্তান জন্মগ্রহণ করলে তারা নাখোশ হতো, অপমানবোধ করতো এবং দুঃশ্চিন্তায় ভোগতো। তারা নারীকে সমাজে পুরুষের উপর বোঝা মনে করতো।
________________
কিতাব: নন্দিত নারী
লেখক: হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ ওসমান গণি
আরবি প্রভাষক, জামেয়া আহমাদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা, ষোলশহর, চট্টগ্রাম।
সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন