যমযম কূপ: নামের উৎপত্তির কারণ
পয়গম্বর ইসমাঈল (عليه السلام) তীব্র তেষ্টাবোধের কারণে মাটিতে পা দ্বারা আঘাত করলে সেখান থেকে পানির নহর প্রবাহিত হয়। মা হাজেরা (رضي الله عنه) এতো জোরে পানির স্রোত বইতে শুরু করায় আশঙ্কা করেন যে হয়তো পয়গম্বর ইসমাঈল (عليه السلام)-এর এতে ক্ষতি হতে পারে। তাই তিনি উচ্চস্বরে বলেন, ‘যাম যাম’ (থামো, থামো)! এমতাবস্থায় জলপ্রবাহের মাত্রা স্বাভাবিক হয়ে যায়। এ কারণেই অদ্যাবধি এই পানির উৎসকে যমযম নামে অভিহিত করা হয়।
সহস্র সহস্র বছর যাবত প্রবাহিত যমযম কূপের পানি হাজ্বী সাহেবানদের জন্যে এক ঐশী দান বটে। এই পানি ওযূ অবস্থায় ক্বিবলা তথা কা’বার দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে পান করাটা প্রথাসিদ্ধ; পয়গম্বর ইসমাঈল (عليه السلام)-এর সাথে এর সম্পৃক্ততার দরুন-ই এই বিশেষ বিধান জারি করা হয় [আল-বুখারী রচিত ‘আল-সহীহ: কিতা’ব আল-হজ্জ্ব’, ‘যমযম সম্পর্কে বর্ণিত বিষয়াদি’ শীর্ষক অধ্যায়, ২:৫৯০ #১৫৫৬; আল-বুখারী কৃত ‘আল-সহীহ: কিতা’ব আল-আশরিবা’, দাঁড়িয়ে পান করা’ শীর্ষক অধ্যায়, ৫:২১৩০ #৫২৯৪; মুসলিম প্রণীত ‘আল-সহীহ: কিতা’ব আল-আশরিবা’, দাঁড়িয়ে যমযমের পানি পান’ শীর্ষক অধ্যায়, ৩: ১৬০১-১৬০২ #২০২৭; এবং আল-আইনী লিখিত ‘উমদাত আল-ক্বা’রী শারহে সহীহ আল-বুখারী’, ৯:২৭৭]। বস্তুতঃ যমযম হচ্ছে ধরণীর বুকে সেরা (পানীয়) জল, আর এতে অনেক রোগের আরোগ্য-ও রয়েছে নিহিত।
ওপরোক্ত বিষয়গুলো প্রমাণ করে যে দ্বীন-ইসলাম কেবল অতীতের ঘটনাবলী স্মরণ-ই করে না, বরঞ্চ বিশেষ বিশেষ পরিস্থিতিতে সেগুলোর উদযাপনকে বাধ্যতামূলক-ও করে দেয়। মওলিদুন্নবী (ﷺ)-কে ওই একই আঙ্গিক বা দৃষ্টিকোণ্ থেকে দেখতে বা মূল্যায়ন করতে হবে। হযরতে মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম হলেন বিশ্বজগতের জন্যে খোদাতা’লার করুণা, দয়া ও আশীর্বাদের সেরা উৎস। মওলিদুন্নবী (ﷺ)-তে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ, যা দ্বারা তাঁর প্রতি প্রত্যেকের ভালোবাসা ও আনুগত্য সুদৃঢ় হয়, তা-ই এ উদযাপনের ভিত্তিমূল।
__________________
মওলিদুন্নবী (ﷺ)-এর উদযাপন ও অনুমতি (১ম খণ্ড)
মূল: শায়খুল ইসলাম ড: মুহাম্মদ তাহিরুল কাদেরী
অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন
🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন