সভ্যতা জারি থাকার জন্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয় বিষয়
ওপরে উদ্ধৃত খোদায়ী আশীর্বাদের স্মরণ সংক্রান্ত ক্বুরআনের আয়াতগুলোতে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে কিতাবুল্লাহ শরীফ কোনো সুনির্দিষ্ট ঘটনাকে উদ্দেশ্য করে। তবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের প্রয়োজনীয় শর্ত হচ্ছে আল্লাহতা’লার এই রহমত-বরকত-নেয়ামতকে সবসময়-ই স্মরণ করতে হবে; আর এ কাজে যেন কেউ আশীর্বাদটি সম্পর্কে বিস্মৃত না হন এবং নিরন্তর আল্লাহতা’লার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। অধিকন্তু, সারা বছর ওই রহমত স্মরণে রেখে বার্ষিকী পালনের সময় হয়ে এলে পরে কারো খুশির মাত্রা স্বতঃস্ফূর্তভাবে বহুগুণ বৃদ্ধি পাওয়ার ব্যাপারটি সর্বজন স্বীকৃত এক বাস্তবতা। ঘটনার প্রকৃত দিন-ক্ষণ সুনির্দিষ্টভাবে স্মরণ ও যথাযথভাবে উদযাপন মানব প্রকৃতির অপরিহার্য অংশ হওয়ার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক প্রয়োজনীয়তা-ও বটে। কোনো (খোদায়ী) আশীর্বাদ উপলক্ষে কৃতজ্ঞতার নিদর্শনস্বরূপ নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় খুশি প্রকাশ করাটা জরুরি, যাতে পরবর্তী প্রজন্মগুলো ওই আশীর্বাদ সম্পর্কে ওয়াকেফহাল থাকে এবং ওই দিনটির তাৎপর্য সম্পর্কেও থাকে অবগত। কোনো সভ্যতা কর্তৃক আপন সত্তাকে এবং সংস্কৃতিকে ইতিহাসের পাতায় বিস্মৃতি হতে সংরক্ষণ করার এটাই একমাত্র উপায়।
মহান প্রভু আল্লাহতা’লার রহমত-বরকত-নেয়ামতপ্রাপ্তিতে তাঁর প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ হতে অক্ষম হলে এবং অনাগত প্রজন্মগুলোর কাছে আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ ও প্রথা পৌঁছে দিতে অপারগ হলে তারা এ আশীর্বাদের ব্যাপারে অমনোযোগী বা অযত্নবান হতে বেশি দেরি হবে না; আর তাদের দৃষ্টিতে আশীর্বাদপ্রাপ্তির ওই দিনটির তাৎপর্য-ও তখন অবহেলিত হবে। অতএব, এই ঐশী আজ্ঞা এ শর্তারোপ করে যে সারা বছর-ই আল্লাহতা’লার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা চাই; কিন্তু যখন ওই সুনির্দিষ্ট দিন (মুক্তির দিবস) আগমন করে তখন আনুষ্ঠানিক উদযাপন দ্বারা খুশি প্রকাশের লক্ষ্যে বিশেষ প্রস্তুতি-ও গ্রহণ করা চাই, যাতে পরবর্তী প্রজন্মগুলো সে দিনটির গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে পারে।
এই আলোচনার আলোকে প্রশ্ন ওঠে যে, কারো মুক্তি উপলক্ষে (আল্লাহর প্রতি) কৃতজ্ঞতা প্রকাশ যদি আল-ক্বুরআনে সাবেত তথা প্রমাণিত হয়, তাহলে বিশ্বজগত সৃষ্টির একমাত্র কারণ ও উপলক্ষ মহানবী (ﷺ)-এর বেলাদত (ধরাধামে শুভাগমন) দিবসে খুশি প্রকাশ কেন অনুমতিপ্রাপ্ত হবে না? কেননা, প্রকৃতপক্ষে তাঁর মধ্যস্থতাতেই তো বাকি সব রহমত-বরকত-নেয়ামত অর্জিত হয়েছিল
__________________
মওলিদুন্নবী (ﷺ)-এর উদযাপন ও অনুমতি (১ম খণ্ড)
মূল: শায়খুল ইসলাম ড: মুহাম্মদ তাহিরুল কাদেরী
অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন
🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন