মহিলাদের গুরুত্বপূর্ণ কিছু মাসাইল


শরীয়তের বিভিন্ন বিধি-বিধান নারী-পুরুষ সকলের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। তবে প্রকৃতিগতভাবে কিছু বিষয়ে নারীদের জন্য ভিন্ন বিধান রয়েছে। এখানে কেবল নারীদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কিছু বিধান আলোচনা করার প্রয়োস পাচ্ছি। আল্লাহ তা‘আলা মানবজাতি সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদত করার জন্যে। আর ইবাদতের জন্য পাক-পবিত্র হওয়া শর্ত। আল্লাহ পবিত্র, কুরআন পবিত্র, মক্কা মদীনা পবিত্রস্থান এমনকি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ’র বিবিগণও পবিত্র। একারণে এদের নামের ও আলোচনার পূর্বে ‘পবিত্র’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়।



আল্লাহ পবিত্র এবং পবিত্রতা অর্জনকারীকে তিনি পছন্দ করেন। কিছু ইবাদত আছে যা নাপাকী অবস্থায় করা যায় না। যেমন- নামায, কুরআন স্পর্শ ও বায়তুল্লাহ’র তাওয়াফ। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন- وان كنتم جنبا فالطهروا যদি তোমরা অপবিত্র থাক তবে ভালোভাবে পবিত্র হবে। ২৯২


২৯২.সূরা মায়িদা, আয়াত- ৬


 


পবিত্রতা অর্জনের প্রাথমিক স্তর হল- উযূ। নামায ও কুরআন মাজীদ স্পর্শ ও তিলাওয়াতের জন্য উযূ আবশ্যক। নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য উযূর নিয়ম এক ও অভিন্ন।



উযূর ফরয


উযূর ফরয চারটি। ১. সমস্ত মুখমণ্ডল একবার ধোয়া। অর্থাৎ মাথার চুলের গোড়া থেকে থুত্নীর নীচ পর্যন্ত এবং এক কানের লতি থেকে অপর কানের লতি পর্যন্ত পুরো মুখমণ্ডল ভালোভাবে ধোয়া। ২. উভয় হাতের কনুইসহ একবার ধোয়া, ৩. মাথার এক চতুর্থাংশ পরিমাণ একবার মাসেহ করা ও ৪. উভয় পা গ্রন্থিসহ একবার ধোয়া। উল্লেখিত অঙ্গসমূহের কোনো অংশ ধোয়া না হলে কিংবা পানি না পৌঁছলে উযূ হবেনা এবং ঐ উযূ দ্বারা আদায়কৃত ইবাদতও শুদ্ধ ও কবুল হবে না।



গোসল



গোসল আরবি শব্দ। অর্থ সমস্ত শরীর ধোয়া। শরীয়তের পরিভাষায় পবিত্রতা ও আল্লাহর নৈকট্যলাভের উদ্দেশ্যে পবিত্র পানি দ্বারা সমস্ত শরীর ধোয়াকে গোসল বলা হয়। আমাদের দেশের অধিকাংশ নারী পুরুষরা কী কী কারণে গোসল ফরয হয় এবং গোসলের ফরয কী কী তা জানে না। ফলে তারা গোসল করেও সারা জীবন নাপাক থাকে।


গোসল ফরয হওয়ার কারণ



১. ইহতিলাম: সহবাস ব্যতিরেকে কামভাবসহ পুরুষ বা মহিলার বীর্য বের হলে, স্পর্শ দ্বারা হোক, দেখার দ্বারা হোক, স্বপ্নদোষ দ্বারা হোক, হস্তমৈথুন দ্বারা হোক, শোয়া অবস্থায় হোক কিংবা জাগ্রত অবস্থায় হোক গোসল করা ফরয। ২৯৩


২৯৩.ফাতোয়ায়ে আলমগীরী, খণ্ড ১, পৃ. ১৬ - ১৭


 


২. স্ত্রী সহবাস: স্ত্রী সহবাস করলে নারী-পুরুষ উভয়ের উপর গোসল ফরয হয়। বীর্য বের হোক বা না হোক। আর সহবাস সাব্যস্ত হবে পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগ নারীর যৌনি পথে প্রবেশ করলে। তখন বীর্যপাত না হলেও গোসল ফরয হবে। স্ত্রী সহবাসের সাথে সাথে গোসল করা উত্তম। গোসল না করার কারণে যদি নামায কাযা হয়ে যায় তাহলে গুনাহগার হবে।


৩. হায়েয বন্ধ হয়ে গোসল করে পবিত্রতা অজর্ন করা ফরয।


৪. নিফাস বন্ধ হলেও গোসল করা ফরয।

___________

কিতাব: নন্দিত নারী

লেখক: হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ ওসমান গণি

আরবি প্রভাষক, জামেয়া আহমাদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা, ষোলশহর, চট্টগ্রাম।

সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন