হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) এর ঝাড় ফুঁক তাবিজ ইত্যাদি শিরক এর হাদীস

 

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) এর ঝাড় ফুঁক তাবিজ ইত্যাদি শিরক এর হাদীসঃ

❏ হাদিস ৩৭:

إِنَّ الرُّقَى وَالتَّمَائِمَ وَالتِّوَلَةَ شِرْكٌ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- يَقُولُ


إِنَّ الرُّقَى وَالتَّمَائِمَ وَالتِّوَلَةَ شِرْكٌ


হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উনাকে বলতে শুনেছি যে, নিশ্চয় ঝাড় ফুঁক করা তাবিজ করা ও স্বামী বা স্ত্রীকে (ঝাড় ফুঁক বা তাবিজের মাধ্যমে) বশিভুত করা শিরক।


(আবু দাউদ ৪/১১ হা. ৩৮৮৫ চিকিৎসা অধ্যায়, তাবিজ ঝুলিয়ে রাখা পরিচ্ছেদ।)



হাদীসের পরিপূর্ণ অংশ দেখলে বুঝা যায় যে, তিনিও ঝাড় ফুঁক তাবিজ ইত্যাদি করা জায়েয মনে করতেন। যেহেতু তার স্ত্রীর চোখে সমস্যা দেখা দেয়ার কারণে একজন ইহুদী ব্যাক্তির কাছ থেকে ঝাড় ফুঁক করেছেন। সে কারণে তিনি এমন বলেছেন।


পরবর্তী হাদীসের অংশ হল,



قَالَتْ قُلْتُ لِمَ تَقُولُ هَذَا وَاللَّهِ لَقَدْ كَانَتْ عَيْنِى تَقْذِفُ وَكُنْتُ أَخْتَلِفُ إِلَى فُلاَنٍ الْيَهُودِىِّ يَرْقِينِى فَإِذَا رَقَانِى سَكَنَتْ. فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ إِنَّمَا ذَاكِ عَمَلُ الشَّيْطَانِ كَانَ يَنْخَسُهَا بِيَدِهِ فَإِذَا رَقَاهَا كَفَّ عَنْهَا إِنَّمَا كَانَ يَكْفِيكِ أَنْ تَقُولِى كَمَا كَانَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- يَقُولُ ্র أَذْهِبِ الْبَاسَ رَبَّ النَّاسِ اشْفِ أَنْتَ الشَّافِى لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا


হযরত আব্দল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) উনার এর স্ত্রী যায়নাব বললেন, আমি বললাম- আপনি এমন (নিশ্চয় ঝাড় ফুঁক করা তাবিজ করা ও স্বামী বা স্ত্রীকে {ঝাড় ফুঁক বা তাবিজের মাধ্যমে} বশিভুত করা শিরক) বললেন কেন? আল্লাহর কসম! আমার চোখে সমস্যা ময়লা নির্গত হয়। চক্ষু লাফালাফি করে। এ সমস্যা অনুভব হলে ওমুক ইহুদীকে আমাকে ঝাড় ফুঁক করতে বলি, সে আমাকে ঝাড় ফুঁক করলে আমার চক্ষু শান্ত হয়। ভাল হয়। তখন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) উনার বলেন, ইহা শয়তানের কাজ। সে তার হাত দিয়ে চোখে গুতাগুতি করে। যখন ঝাড় ফুঁক করে তখন সে বিরত থাকে। আর তাই তোমার জন্য যথেষ্ট হল যে, তুমি বলবে যেভাবে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলতেন এই দুআটি।


أَذْهِبِ الْبَاسَ رَبَّ النَّاسِ اشْفِ أَنْتَ الشَّافِى لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا


আর তাই হযরত আব্দল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) উনার ঝাড় ফুঁককে অপছন্দ করতেন।



তবে যেহেতু তার স্ত্রী যায়নাব ইহুদী থেকে ঝাড় ফুঁক করিয়েছিলেন। সুতরাং তা শিরকি শব্দ বা যাদু ইত্যাদি হওয়ার কারণে তিনি এটি শয়তানের আমল বলে উল্লেখ করেছেন। কেননা তখন সাধারণত সকলেই শিরকি কালাম দ্বারা ঝাঁড়, ফুঁক, তাবিজ ইত্যাদি করত। যেমন বর্ণিত হয়েছে-



❏ হাদিস ৩৮:



وروى ابن وهب عن يونس بن يزيد عن ابن شهاب قال بلغني عن رجال من أهل العلم أنهم كانوا يقولون إنه نهى عن الرقي حتى قدم المدينة وكان الرقي في ذلك الزمن فيها كثير من كلام الشرك فلما قدم المدينة لدغ رجل من أصحابه قالوا يا رسول الله قد كان آل حزم يرقون من الحمة فلما نهيت عن الرقى تركوها فقال ادعوا لي عمارة وكان قد شهد بدرا قال اعرض علي رقيتك فعرضها عليه ولم ير بها بأسا وأذن له فيها


ইবনে ওয়াহহাব থেকে, তিনি ইউনুস ইবনে ইয়াযিদ থেকে তিনি ইবনে শিহাব থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আহলে ইলমের অনেক ব্যক্তি আমার নিকট পৌঁছিয়েছে যে, তারা বলতেন, তাদেরকে ঝাঁড়, ফুঁক ইত্যাদি থেকে নিষেধ করা হয়েছে মদিনায় আগমন করা পর্যন্ত। আর সে যুগে ঝাঁড় ফুঁক, তাবিজ ইত্যাদিতে শিরকি কালাম থাকত, যখন মদিনায় এলেন, তাদের সাথীদের মধ্যে একজন ব্যক্তি বিষক্রিয়ায় দংশন করা হল, তারা বলল ইয়া রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমর ইবনে হাযম গোত্রের লোকেরা বিচ্ছুর দংশনে ঝাঁড় ফুঁক ইত্যাদি করতে পারে। আপনি নিষেধ করা থেকে তারা তা ছেড়ে দিয়েছে। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, আমার নিকট উমারা (رضي الله عنه) উনাকে ডাক, তিনি বদর যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন, অতপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তোমার মন্ত্রগুলোকে পেশ কর, তিনি তা পেশ করলে তাতে খারাপ কিছু দেখলেন না। অতপর অনুমতি দিলেন।(উমদাতুল কারী ৩১/৩৬৮ চিকিৎসা অধ্যায়, বিচ্ছু দংশন পরিচ্ছেদ।)



❏ হাদিস ৩৯:



عن ابن مسعود رضي الله عنه أنه كان يكره الرقي إلا بالمعوذات قلت قال الطبري هذا حديث لا يجوز الاحتجاج بمثله إذ فيه من لا يعرف ثم إنه لو صح لكان إما غلطا أو منسوخا بقوله وما أدراك أنها رقية


হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) উনার ঝাড় ফুঁক তাবিজ ইত্যাদিকে অপছন্দ করতেন। তবে আল্লাহর নাম বা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উনার শিক্ষা দেয়া দুআসমুহ পড়াকে পছন্দ করতেন।



ইমাম তাবারী (رحمة الله) বলেন এই হাদীস দ্বারা দলিল দেয়া জায়েয নয়। কেননা এতে বর্ণনাকারী অপরিচিত। এরপরও যদি একে সঠিক ধরাও হয়, তবে তা ভুল হবে বা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উনার কথা,


وما أدراك أنها رقية “


এটা যে মন্ত্র তা তুমি কিভাবে জানলে?” দ্বারা রহিত হয়ে গেছে। (উমদাতুল কারী ৩১/৩৫৭)।

__________________

কিতাবঃ তাবিজ ও ঝাড়ফুঁকের বিধান

লেখক, অনুবাদক, সংকলকঃ মাসুম বিল্লাহ সানি

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন