মদিনা শরীফে সন্ত্রাস ও গণহত্যা



ইয়াযিদের লা’নত পাবার যোগ্য দুঃষ্কর্ম সমূহের দ্বিতীয় অধ্যায় হল মদিনা শরীফে আক্রমণ। এজিদী বাহিনী মদিনা শরীফে হামলা করে সন্ত্রাস কায়েম করে। তিন দিনের জন্য সকল লুঠতরাজ মুবাহ ঘোষণা করে। তারা অসংখ্য আনসার মুহাজিরদেরকে শহীদ করে। অসংখ্য মা বোনদেরকে ইজ্জত লুণ্ঠন করে। তিনদিন পর্যন্ত মসজিদে নববীতে আযান ইকামত বন্ধ ছিল।


মদিনাবাসীর বিরুদ্ধে এজিদী বাহিনীর তাণ্ডবঃ


মদিনাবাসীর বিদ্রোহের খবর যখন এজিদের কাছে পৌছল তখন সে মুশরিক বিন উকবার নেতৃত্যে একদল সেনাবাহিনী সেখানে প্রেরণ করল।


হাফিজ ইবনে কাছিরের বর্ণনা:(আরবি) পৃ-৩৮


অর্থ: অতঃপর মুসরিফ বিন উকবাহ এজিদের নির্দেশক্রমে মদিনা শরীফকে তিন দিনের জন্য বৈধ ঘোষণা করল। এজন্য আল্লাহ তাকে ভাল প্রতিদান দিবেন না। সে অসংখ্য সম্মানিত সাহাবি হাফিজে কুরআনদেরকে শহিদ করল। তাদের মাল সম্পদ লুণ্ঠন করে নিল। অনেক মহিলাদের উপর পতিত হল। মারাত্মক ফাসাদ তৈরি করল। এ ইতিহাস অনেকেই বর্ণনা করেছেন। (বেদায়া-৬২০ পৃষ্ঠা)।



মদিনা শরীফে ১০ হাজার লোক হত্যা



এজিদ বাহিনী সেদিন ৭ শত নেতৃস্থানীয় কুরাইশ, আনসার ও মুহাজিরদেরকে হত্যা করে। তাছাড়া মহিলা ও ছোট-ছোট বাচ্চাসহ ১০ হাজার লোককে তারা হত্যা করে। এ বর্ণনাগুলো প্রায় সবগুলো তারিখের কিতাবেই উল্লেখিত হয়েছে।

       

দেখুন হাফিজ ইবনে কাছিরের বর্ণনা-


অর্থ: মাদাইনী মদিনা শরীফের একজন শেখ থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন- আমি ইমাম যুহরীকে প্রশ্ন করলাম ‘হারবার যুদ্ধের’ দিন কত লোক শহিদ হয়েছিলেন? তিনি বললেন আনসার ও মুহাজিরীনদের ৭ শত নেতৃস্থানীয় লোক সে দিন শহিদ হন। তাছাড়া অপরিচিত পুরুষ, মহিলা ও দাস-দাসী ও অন্যান্য ১০ হাজার লোক শাহাদত বরণ করেন। (বেদায়া ৮/২২১ পৃষ্ঠা, আর রাদ্দু আলাল মুতাআসসিব ৬৭, কিতাবুল মিলহান ১৫১ পৃষ্ঠা)।



এক হাজার কুমারী নারীর ইজ্জত লুণ্ঠ


এজিদ বাহিনীর হামলা থেকে নিরীহ মা বোন পর্যন্ত রেহাই পায় নাই। এ ইতিহাস বড় লজ্জাজনক ইতিহাস, বড় কলঙ্কজনক অধ্যায়। অথচ আজ যারা এজিদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ তাদের কি লজ্জা লাগে না। দেখুন হাফিজ ইবনে কাসিরের বর্ণনা-(আরবি) পৃ-৪১


মাদাইনী থেকে বর্ণিত, তিনি আবু বকর কুররাহ থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন হিশাম বিন হাসান বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন- হাররার যুদ্ধের পর মদিনাবাসী এক হাজার মহিলা স্বামী ব্যতীত সন্তান প্রসব করেছেন। (বিদায়া ৮/২১১, আর রাদ্দু আলাল মুতাআসসিব ৬৭ পৃষ্ঠা)

       

ইমাম শামসুদ্দিন যাহাবি ‘তারিখুল ইসলাম’ গ্রন্থে ২৬ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেছেন-


অর্থ: হযরত জারির বিন আব্দুল হামিদ থেকে বর্ণিত, তিনি মুগিরা থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন- মুসরিফ বিন উকবাহ তিনদিন পর্যন্ত মদিনা শরীফে সন্ত্রাসী তাণ্ডব চালিয়েছে। সেদিন এক হাজার কুমারী মহিলাদের ইজ্জত তারা লুণ্ঠন করেছে।

       

ইমাম জালাল উদ্দিন সুয়ুতি বর্ণনা করেছেন-


অর্থ: হাসান মুররাহ বর্ণনা করেছেন তিনি বলেন- আল্লাহর শপথ, সেদিন মনে হয় নাই যে, তাদের আক্রমণ থেকে কেউ রক্ষা পাবে। সে আক্রমণ অনেক সাহাবি সহ অসংখ্য লোক শহিদ হয়েছিলেন। মদিনা শরীফকে লুঠতরাজের জন্য বৈধ ঘোষণা করা হয়েছিল। এতে এক হাজার কুমারি নারী তাদের ইজ্জত হারিয়েছিলেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহ রাজিউন। (তারিখুল খোলাফা- ১৬৬ পৃষ্ঠা)।


______________


ইয়াযিদের হাকিকত
কৃতঃ হাফেজ মুহাম্মদ ইকরাম উদ্দিন।
সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন