কোরআন সুন্নাহের আলোকে পবিত্র শবেই বরাত


আজকাল বিভিন্ন বই পুস্তক, পত্রপত্রিকা, টিভি চ্যানেলে বলতে দেখা যায় শবেই বরাত বলতে ইসলামে কিছুই নেই। আবার কেউ বলে বেড়ান এটা বিদআত। তাই এ বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আকারে কতিপয় হাদিস উলে­খ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলাম। কিতাব দীর্ঘায়িত হওয়ার আশংঙ্কায় এখানে আমি বিস্তারিত উল্লেখ করবো না, পরে সুযোগ হলে বিস্তারিত করে গ্রন্থ লিখবো ইন শা আল্লাহ। এখানে আমি যে কটি হাদিসই উল্লেখ করেছি প্রত্যেকটির সনদ বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেছি।



শবে বরাতের অর্থ ও তাৎপর্য


শবে বারাআত شب برأت একটি ফার্সী শব্দ। শব অর্থ রাত। বারাআত অর্থ ভাগ্য। আরবীতে বলা হয় ليلة البرأة লাইলাতুল বারাআতে। শবে বারাআতের অর্থ شب جدائى শবে জুদায়ী (বিচ্ছেদের রাত) شب دورى শবে দূরী (দূরে চলে যাওয়ার রাত) شب فراق শবে ফেরাক (পৃথক হওয়ার রাত)।   ১৬

➥{লোগাতে দে খোদা, খ- ৩০ পৃ, ১৯৮}



বারাআত অর্থ التفصى مما يكره مجاورته যার সাথে অবস্থান অপছন্দনীয়,  তার সঙ্গ থেকে দূরে থাকা। যেমন বলা হয়ে থাকে برأت من المرض আমি রোগের সঙ্গ থেকে মুক্ত হলাম। برأت من كريم আমি করিমের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করলাম।


(সূত্র : মুফরাদাতে ইমাম রাগেব,  পৃ-৪৫)



(খ) শবে বারাআতের নামকরণ-


انما سميت ليلة البرأة لان فيها برأتين برأة للاشقياء من الرحمن وبرأة للاولياء من الخذلان-


-‘‘লাইলাতুল বারাআত নামকরণের তাৎপর্য এরাতে দুধরনের বারাআত বা সম্পর্কচ্ছেদ হয়। অপরাধীরা আল্লাহ্ তা‘য়ালার রহমত থেকে বঞ্চিত থাকে। আর আল্লাহর ওলীগণ পার্থিব অপমান লাঞ্চনা থেকে মুক্ত হয়ে যান।’’  ১৭

➥{শায়খ আবদুল কাদের জিলানী : গুনিয়াতুত তালেবীন, পৃ-৩৬৫}



❏ পারিভাষিক অর্থে শবে বরাত বলতে বুঝায়-


 سب پانزهم شعبان كہ دراں شب ملائكہ بحكم الہى حساب عمر وتقسيم رزق ميكند- (دهخدا – ١٩٧)


-‘‘শাবান মাসের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত যে রাতে ফেরেশতাগণ ‘‘আল্লাহ্ তা‘য়ালার নির্দেশে মানুষের বয়স ও রিযিক বন্টন করে থাকেন।’  ১৮

➥{দেহ খোদা পৃ-১৯৮ ও গিয়াসুল লুগাত}


অনেকে বলে থকেন শবে বারাআত কুরআন হাদিসে নাই, দেখুন কতবড় জাহেল হলে এ ধরনের কথা বলতে পারেন! শবে বারাআত হলো ফার্সী শব্দ আর কুরআন হাদিস হলো আরবী ভাষায়। তাই আরবী ভাষায় কি ফার্সী শব্দ পাওয়া যাবে?


❏ ইমাম বদরুদ্দীন আইনী (رحمة الله) লিখেন-


لَيْلَة الْبَرَاءَة، وَهِي لَيْلَة النّصْف من شعْبَان


-‘‘লাইলাতুল বারা‘আত মানে হলো ১৫ ই শাবান।’’


(উমদাতুল ক্বারী, ২/১৭ পৃ.)


আরবীতে শবে বারাআতকে لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ শাবান মাসের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাতকে বুঝায়। এ প্রসঙ্গে ইমাম তিরমিযী (رحمة الله) ও ইবনে মাযাহ  তাদের স্ব-স্ব গ্রন্থে একটি অধ্যায় রচনা করেছেন।



শবে বরাতের নামের সংখ্যা:


❏ আল্লামা যামাখশারী  সূরা দুখানের ব্যাখ্যায় লিখেন-


وقيل: ليلة النصف من شعبان، ولها أربعة أسماء: الليلة المباركة، وليلة البراءة، وليلة الصكّ، وليلة الرحمة


-‘‘কোনো কোনো মুফাসসিরগণ ‘লাইলাতুল মোবারাকা’ দ্বারা ১৫ই শাবান (শবে বরাতকে) কে উদ্দেশ্য করেছেন, শবে বরাতের চারটি নাম রয়েছে,  যেমন-

১. লাইলাতুল মুবারাকা বা বরকত পূর্ণ রাত, 

২. লাইলাতুল বারায়াত তথা মুক্তি বা ভাগ্যের রাত.

৩. লাইলাতুল ছক্কি বা ক্ষমা স্বীকৃতি দানের রাত এবং

৪. লাইলাতুল ক্বদর বা ভাগ্য রজনী।’’


(আল্লামা যামাখশারী, তাফসিরে কাশ্শাফ, ৪/২৬৯ পৃ.)


❏ ইমাম আবু হাফস সিরাজুদ্দীন দামেস্কী (رحمة الله) লিখেন-


واحتج الآخرون على أنها ليلة النصف من شعبان بأنها لها أربعة أسماء: الليلة المباركة، وليلة البراءة، وليلة الصَكّ، وليلة الرحمة


-‘‘কোনো কোনো মুফাসসিরগণ ‘লাইলাতুল মোবারাকা’ দ্বারা ১৫ই শাবান (শবে বরাতকে) কে উদ্দেশ্য করেছেন, শবে বরাতের চারটি নাম রয়েছে,  যেমন-

১. লাইলাতুল মুবারাকা বা বরকত পূর্ণ রাত, 

২. লাইলাতুল বারায়াত তথা মুক্তি বা ভাগ্যের রাত.

৩. লাইলাতুল ছক্কি বা ক্ষমা স্বীকৃতি দানের রাত এবং

৪. লাইলাতুল রহমত তথা রহমত বর্ষণ হওয়ার রাত।’’


(তাফসিরে লুবাব ফি উলূমিল কিতাব, ১৭/৩০৯ পৃ.)


❏ ইমাম কুরতুবী (رحمة الله) লিখেন-


وَيُقَالُ: لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ، وَلَهَا أَرْبَعَةُ أَسْمَاءٍ: اللَّيْلَةُ الْمُبَارَكَةُ، وَلَيْلَةُ الْبَرَاءَةِ، وَلَيْلَةُ الصَّكِّ، وَلَيْلَةُ الْقَدْرِ.


-‘‘কোনো কোনো মুফাসসিরগণ ‘লাইলাতুল মোবারাকা’ দ্বারা ১৫ই শাবান (শবে বরাতকে) কে উদ্দেশ্য করেছেন, শবে বরাতের চারটি নাম রয়েছে,  যেমন-

১. লাইলাতুল মুবারাকা বা বরকত পূর্ণ রাত, 

২. লাইলাতুল বারায়াত তথা মুক্তি বা ভাগ্যের রাত.

৩. লাইলাতুল ছক্কি বা ক্ষমা স্বীকৃতি দানের রাত এবং

৪. লাইলাতুল ক্বদর বা ভাগ্য রজনী।’’


(ইমাম কুরতুবী, তাফসিরে কুরতুবী, ১৬/১২৬ পৃ.)


❏ আহলে হাদিসদের ইমাম শাওকানী লিখেন-


وَلَهَا أَرْبَعَةُ أَسْمَاءٍ: اللَّيْلَةُ الْمُبَارَكَةُ، وَلَيْلَةُ الْبَرَاءَةِ، وَلَيْلَةُ الصَّكِّ، وَلَيْلَةُ الْقَدْرِ.


-‘‘কোনো কোনো মুফাসসিরগণ ‘লাইলাতুল মোবারাকা’ দ্বারা ১৫ই শাবান (শবে বরাতকে) কে উদ্দেশ্য করেছেন, শবে বরাতের চারটি নাম রয়েছে,  যেমন-

১. লাইলাতুল মুবারাকা বা বরকত পূর্ণ রাত, 

২. লাইলাতুল বারায়াত তথা মুক্তি বা ভাগ্যের রাত.

৩. লাইলাতুল ছক্কি বা ক্ষমা স্বীকৃতি দানের রাত এবং

৪. লাইলাতুল ক্বদর বা ভাগ্য রজনী।’’


(শাওকানী, ফতহুল কাদীর, ৪/৬৫৩ পৃ.)


❏ আল্লামা মানাভী (رحمة الله) লিখেন-


 ولها أربعة أسماء الليلة المباركة وليلة البراءة وليلة الصك وليلة الرحمة


-‘‘শবে বরাতের চারটি নাম রয়েছে,  যেমন-

১. লাইলাতুল মুবারাকা বা বরকত পূর্ণ রাত,

২. লাইলাতুল বারায়াত তথা মুক্তি বা ভাগ্যের রাত.

৩. লাইলাতুল ছক্কি বা ক্ষমা স্বীকৃতি দানের রাত এবং

৪. লাইলাতুল ক্বদর বা ভাগ্য রজনী।’’

(মানাভী, ফয়যুল কাদীর, ২/২৬৩ পৃ. হা/১৭৯৮)।



লাইলাতুল বারাআত একটি সমীক্ষা পবিত্র কুরআনের আলোকে:


আল-কুরআনে আরেকটি একটি রজনীর কথা উলে­খ রয়েছে, তাকে বলা হয়েছে ‘লাইলাতুল মুবারাকা’ বা বরকতময়ী, কল্যাণময়ী রাত। যেমন-


❏ আল্লাহ্ তা‘য়ালা ইরশাদ করেন-


إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةٍ مُبَارَكَةٍ إِنَّا كُنَّا مُنْذِرِينَ


-‘‘আমি তাকে (কুরআন মাজীদকে) নাযিল করেছি এক বরকতময় রাতে,  নিশ্চয়ই আমি সতর্ককারী।’’


(সূরা : দুখান,  আয়াত,  ৩)



(১-৩) রঈসুল মুফাস্সিরীন হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه),  হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) এবং হযরত ইকরামা (رضي الله عنه) সহ বহু সংখ্যক সাহাবী তাবেয়ীনদের মতে উক্ত আয়াতে ‘লাইলাতুল মুবারাকা’ দ্বারা ১৫ই শাবান তথা চৌদ্দই শাবান দিবাগত রাত (শবে বারাআত) কে বুঝানো হয়েছে।


❏ তাফসিরে কাশফুল আসরারে রয়েছে-


عن عكرمة الليلة المباركة ليلة النصف من شعبان انزل الله جبرائيل الى السماء الدنيا فى تلك الليلة حتى املى القران على الكتبة وسماها مباركة لانها كثيرة  الخير والبركة لما ينزل فيها من الرحمة ويجاب فيها من الدعوة-


-‘‘হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه)-এর ছাত্র হযরত ইকরামা (رضي الله عنه) বলেন, ‘লাইলাতুল মুবারাকা’ দ্বারা শাবান মাসের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাতকে বুঝানো হয়েছে, আল্লাহ্ তা‘য়ালা হযরত জিবরাঈল () কে ঐ রাতে প্রথম আবৃত্তি করতে পাঠান। এই রাতকে মুবারক নাম রাখার কারণ হলো এতে কল্যাণ,  বরকত ও আল্লাহর রহমত নাযিল হয় এবং রাতে দোয়া কবুল হয়।’’  ১৯

➥{তাফসীরে কাশফুল আসরার, ৯/৯৮.পৃ. }



❏ মুবারাকা বা বরকতময় বলার কারণ কি এ প্রসঙ্গে আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী (رحمة الله) লিখেছেন,


الليلة المباركة لكثرة خيرها وبركتها على العاملين فيها الخير وان بركات جماله تعالى تصل الى كل ذرة من العرش الى الثرى كما فى ليلة القدر


-‘‘লাইলাতুল মুবারাকা বলা হয় এ রাতে অনেক খায়ের ও বরকত নাযিল হয়। সৃষ্টির প্রতি আল্লাহর সৌন্দর্যের বরকত আরশের প্রতি কণা থেকে ভূতলের গভীরে পৌঁছে যেমনটি শবে কদরের মধ্যে হয়ে থাকে।’’  ২০

➥{আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী : তাফসীরে রুহুল বায়ান : ৮/৪০২ পৃ.}



(৪) আল্লামা ইমাম সুয়ূতি (رحمة الله) আরও বলছেন,


وَأخرج ابْن زَنْجوَيْه والديلمي عَن أبي هُرَيْرَة أَن رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ: تقطع الْآجَال من شعْبَان إِلَى شعْبَان حَتَّى أَن الرجل لينكح ويولد لَهُ وَقد خرج اسْمه فِي الْمَوْتَى


-‘‘ইমাম ইবনে যানজুয়াই  এবং দায়লামী (رحمة الله) হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, এক শাবান থেকে অপর শাবান পর্যন্ত মানুষের হায়াত চূড়ান্ত করা হয়। এমনকি একজন মানুষ বিবাহ করে এবং তার সন্তান হয় অথচ তার নাম মৃতের তালিকায় উঠে যায়।’’  ২১

➥{আল্লামা ইমাম জালালুদ্দীন সূয়তী : তাফসীরে দুররে মানসুর : ৭/৪০১ পৃ. দারুল ফিকর}



(৫) ইমাম কুরতুবী (رحمة الله) এই আয়াতের তাফসীরে লিখেছেন-


لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ، وَلَهَا أَرْبَعَةُ أَسْمَاءٍ: اللَّيْلَةُ الْمُبَارَكَةُ، وَلَيْلَةُ الْبَرَاءَةِ، وَلَيْلَةُ الصَّكِّ، وَلَيْلَةُ الْقَدْرِ. وَوَصَفَهَا بِالْبَرَكَةِ لِمَا يُنْزِلُ اللَّهُ فِيهَا عَلَى عِبَادِهِ مِنَ الْبَرَكَاتِ وَالْخَيْرَاتِ وَالثَّوَابِ.


-‘‘লাইলাতুল মুবারাকা দ্বারা অর্ধ শাবান (শবে বরাত) এর রাতকে বুঝানো হয়েছে। এই ১৫ই শাবানের রাত তথা শবে বরাতের চারটি নাম রয়েছে,  যেমন-

১. লাইলাতুল মুবারাকা বা বরকত পূর্ণ রাত, 

২. লাইলাতুল বারায়াত তথা মুক্তি বা ভাগ্যের রাত,

৩. লাইলাতুল ছক্কি বা ক্ষমা স্বীকৃতি দানের রাত এবং

৪. লাইলাতুল ক্বদর বা ভাগ্য রজনী।’

আর শবে বরাতকে বরকতের সঙ্গে এই জন্য সম্বন্ধ করা হয়েছে যেহেতু আল্লাহ্ পাক এই শবে বরাতে বান্দাদের প্রতি বরকত,  কল্যাণ এবং পূণ্য দানের জন্য দুনিয়ায় কুদরতীভাবে নেমে আসেন অর্থাৎ- খাস রহমত নাযিল করেন।’’  ২২

➥{ইমাম কুরতুবী : তাফসীরে কুরতুবী : ১৬/১২৬ পৃ.}



(৬) ইমাম কুরতবী (رحمة الله) আরও বলেন,


وَقَالَ عِكْرِمَةُ: هِيَ لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ


-‘‘বিখ্যাত তাবেয়ী হযরত ইকরামা (رضي الله عنه) তিনি বলেন, লাইলাতুল মুবারাকা দ্বারা এখানে অর্ধ শাবান (শবে বরাতের) এর রাতকেই বুঝানো হয়েছে।’’  ২৩

➥{ইমাম কুরতুবী : তাফসীরে কুরতবী : ১৬/১২৬ পৃ.}



❏ তিনি আরও সামনে গিয়ে লিখেন-


وَقَالَ عكرمة: الليلة المباركة ها هنا لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ.


-‘‘এবং তাবেয়ী ইকরামা (رحمة الله) বলেন, লাইলাতুল মোবারাক হল শাবানের ১৫ তারিখ (শবে বরাত)।’’  ২৪

➥{ইমাম কুরতুবী : তাফসীরে কুরতবী : ১৬/১২৬ পৃ.}



(৭) ইমাম কুরতুবী (رحمة الله) আরও লিখেন-


وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَيْضًا: أَنَّ اللَّهَ تَعَالَى يَقْضِي الْأَقْضِيَةَ فِي لَيْلَةِ نِصْفِ شَعْبَانَ، وَيُسَلِّمُهَا إِلَى أَرْبَابِهَا فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ.


-‘‘প্রখ্যাত মুজতাহিদ সাহাবী, রঈসুল মুফাস্সির হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ্ তা‘য়ালা অর্ধ শাবান (শবে বরাতে) এর রাত্রিতে যাবতীয় বিষয়ের ভাগ্য তালিকা প্রস্তুত করেন। আর কদরের রাত্রিতে ঐ ভাগ্য তালিকা বাস্তবায়নকারী ফেরেশতাদের হাতে পেশ করেন।’’  ২৫

➥{ইমাম কুরতুবী: তাফসীরে কুরতুবী : ২০/১৩০ : পৃ:}



(৮) আল্লামা সৈয়দ মাহমুদ আলূসী (رحمة الله) “তাফসীরে রুহুল মায়ানীতে’’ সূরা দুখানের উক্ত আয়াতের তাফসীরে বলেন-


ووصف الليلة بالبركة لما أن إنزال القرآن مستتبع للمنافع الدينية والدنيوية بأجمعها أو لما فيها من تنزل الملائكة والرحمة وإجابة الدعوة وفضيلة العبادة أو لما فيها من ذلك وتقدير الأرزاق وفصل الأقضية كالآجال وغيرها وإعطاء تمام الشفاعة له عليه الصلاة والسلام، وهذا بناء على أنها ليلة البراءة، فقد روي أنه صلّى الله عليه وسلّم سأل ليلة الثالث عشر من شعبان في أمته فأعطى الثلث منها ثم سأل ليلة الرابع عشر فأعطى الثلثين ثم سأل ليلة الخامس عشر فأعطى الجميع إلا من شرد على الله تعالى شراد البعير


-‘‘লাইলাতুল মুবারাকা বরকতের রাত হিসেবে এবং দুনিয়াবী বহুবিদ কল্যাণের জন্য নাযিলের সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। ঐ রাতে সমস্ত ফেরেশতারা অবতরণ করেন এবং রহমত নাযিল হয়, বান্দাদের দোয়া কবুল করা হয়। বান্দাদের রিযিক বন্টন করা হয় এবং সমস্ত কিছুর ভাগ্য সমূহ পৃথক করা হয়। যেমন মৃত্যু এবং অন্যান্য সব বিষয়ের। এবং রাসূল (ﷺ) এর সমস্ত বিষয়ের সুপারিশ কবুল করা হয়। আর এই বরকতের রাতকে বরাতের রাত হিসেবেও নাম করণ করা হয়। যেহেতু এ সম্পর্কে হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে যে,  আখিরী রাসূল (ﷺ) তিনি শাবান মাসের ১৩ তারিখ রাতে স্বীয় উম্মতের ক্ষমার জন্য আল্লাহ্ পাকের কাছে প্রার্থনা করেন। অতঃপর অনুরূপভাবে ১৪ই শাবান তথা  শবে বরাতেও মহান আল্লাহ্ পাকের কাছে হুযূর পাক (ﷺ) স্বীয় উম্মতের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন, তখন মহান আল্লাহ্ পাক তিনি শবে বরাতে তার উম্মতের দুই তৃতীয়াংশ উম্মতকে ক্ষমা করেন। অতঃপর অনুরূপভাবে ১৫ই শাবান তথা শবে বরাতেও মহান আল্লাহ্ পাকের কাছে হুযূর পাক (ﷺ) স্বীয় উম্মতের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন, তখন মহান আল্লাহ্ পাক তিনি সেই শবে বরাতে তার সমস্ত উম্মতগণকে ক্ষমা করে দেন। তবে ওই সমস্ত উম্মত ব্যতীত যারা মহান আল্লাহ্ পাক এর ব্যাপারে চরম বিভ্রান্তিতে পতিত হয়েছে।’’  ২৬

➥{আল্লামা আলুসী বাগদাদী: তাফসীরে রুহুল মায়ানী : ১৩/১১১ পৃ:}



(৯) ইমাম খাযেন (رحمة الله) রচিত ‘তাফসীরে লুবাবুত তাভীল’ এ উক্ত আয়াতের তাফসীরে উলে­খ আছে-


فِيها أي في تلك الليلة المباركة يُفْرَقُ أي يفصل كُلُّ أَمْرٍ حَكِيمٍ أي محكم....... وقيل هي ليلة النصف من شعبان يبرم فيها أمر السنة وينسخ الأحياء من الأموات، وروى البغوي بسنده أن النبي صلّى الله عليه وسلّم قال تقطع الآجال من شعبان إلى شعبان حتى إن الرجل لينكح ويولد له وقد خرج اسمه في الموتى وعن ابن عباس إن الله يقضي الأقضية في ليلة النصف من شعبان ويسلمها إلى أربابها في ليلة القدر


-‘‘ওই মুবারক তথা বরকত পূর্ণ রাত্রিতে অর্থাৎ- শবে বরাতের প্রত্যেক হিকমত পূর্ণ যাবতীয় বিষয় সমূহের ফায়সালা করা হয়। ......কোনো কোনো মুফাস্সিরগণ বলেছেন, লাইলাতুল মুবারাকা দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে অর্ধ শাবান তথা (শবে বরাত) এর রাত। এই শবে বরাতে আগামী এক বৎসরের যাবতীয় বিষয়ের ভাগ্য তালিকা প্রস্তুত করা হয় এবং তালিকা প্রস্তুত করা হয় মৃত ও জীবীতদের। ওই তালিকা থেকে কোন কম বেশি করা হয় না অর্থাৎ- পরিবর্তন হয় না। ইমাম বাগভী (رحمة الله) সনদ সহকারে রাসূল (ﷺ) হতে বর্ণনা করেন, তিনি ইরশাদ করেছেন, এক শাবান তথা ১৫ই শাবান থেকে পরবর্তী ১৫ই শাবান পর্যন্ত মৃতদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়। এমনকি লোকেরা ওই বৎসরে বিবাহ, তার থেকে যে সন্তান জন্মগ্রহণ করবে, সেই বৎসর কখন মৃত্যু বরণ করবে, তার তালিকাও শবেই বরাতে প্রস্তুত করা হয়। প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হযরত রাসূলে পাক (ﷺ) এর থেকে বর্ণনা করেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পাক অর্ধ-শাবানের রাত তথা শবেই বরাতে যাবতীয় বিষয়ে ফায়সালা করে থাকেন। আর শবে কদরে ওই নির্ধারিত ফায়সালা বাস্তবায়ন করার জন্য বাস্তবায়নকারী ফিরিশতাদের হাতে পেশ করেন।’’  ২৭

➥{ইমাম খাযেন, তাফসীরে লুবাবুত তাভীল : ৪/১১৬ পৃ., দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন।}



(১০) গাউসে সাকালাইন শায়খ আব্দুল কাদের জিলানী (رحمة الله) এ আয়াতের তাফসিরে লিখেন-


﴿فِي لَيْلَةٍ مُبَارَكَةٍ﴾ هى ليلة النصف من شعبان وهى ليلة البراءة


-‘‘লাইলাতুল মোবারাক হল শাবানের ১৫ তারিখ (শবে বরাত) এর রাত।’’


(শায়খ আব্দুল কাদির জিলানী, গুনিয়াতুত তালেবীন,  ৩৪৩ পৃ. দারুল কুতব ইলমিয়্যাহ,  বয়রুত,  লেবানন।)



(১১) মহিউস্ সুন্নাহ ইমাম বাগভী (رحمة الله) লিখেন-


وَقَالَ آخَرُونَ هِيَ لَيْلَةُ النِّصْفِ من شعبان.


-‘‘অনেক মুফাস্সিরীন বলেছেন, লাইলাতুল মোবারাকা সেটি হল শাবানের ১৫ তারিখের রাত (শবে বরাত)।’’


(ইমাম বাগভী, মা‘আলিমুত তানযিল,  ৪/১৭২ পৃ.)



(১২) তিনি আরও উল্লেখ করেন-


وَقَالَ عِكْرِمَةُ: هِيَ لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ يُبْرَمُ فِيهَا أَمْرُ السَّنَةِ وَتُنْسَخُ الْأَحْيَاءُ مِنَ الْأَمْوَاتِ فَلَا يُزَادُ فِيهِمْ أَحَدٌ وَلَا يُنْقَصُ مِنْهُمْ أحد.


-‘‘তাবেয়ী ইকরামা (رحمة الله) বলেন, লাইলাতুল মুবারাকা দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে অর্ধ শাবান তথা (শবে বরাত) এর রাত। এই শবে বরাতে আগামী এক বৎসরের যাবতীয় বিষয়ের ভাগ্য তালিকা প্রস্তুত করা হয় এবং তালিকা প্রস্তুত করা হয় মৃত ও জীবিতদের। ওই তালিকা থেকে কোন কম বেশি করা হয় না অর্থাৎ- পরিবর্তন হয় না।’’


(ইমাম বাগবী, তাফসিরে মা‘লিমুত তানযিল, ৪/১৭৩ পৃ.)



(১৩) তিনি আরও উল্লেখ করেন-


وَرَوَى أَبُو الضُّحَى عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عنهما: أَنَّ اللهَ يَقْضِي الْأَقْضِيَةَ فِي لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ، وَيُسَلِّمُهَا إِلَى أَرْبَابِهَا فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ.


-‘‘তাবেয়ী আবূ জুহা (رحمة الله) রঈসুল মুফাসসিরীন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পাক অর্ধ-শাবানের রাত তথা শবেই বরাতে যাবতীয় বিষয়ে ফায়সালা করে থাকেন। আর শবে কদরে ওই নির্ধারিত ফায়সালা বাস্তবায়ন করার জন্য বাস্তবায়নকারী ফিরিশতাদের হাতে পেশ করেন।’’


(ইমাম বাগভী, তাফসিরে মা‘লিমুত তানযিল, ৪/১৭৪ পৃ.)



(১৪) ইমাম ছালাভী (رحمة الله) লিখেন-


وقال الآخرون: هي ليلة النصف من شعبان.


-‘‘অনেক মুফাস্সিরীন বলেছেন, লাইলাতুল মোবারাকা হল শাবানের ১৫ তারিখের রাত (শবে বরাত)।’’


(ইমাম ছালাভী, তাফসিরে ছালাভী, ৮/৩৪৯ পৃ.)



(১৫) ইমাম ইবনে জারীর আত-তবারী (رحمة الله) লিখেন-


وَقَالَ آخَرُونَ: بَلْ هِيَ لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ


-‘‘অনেক মুফাস্সিরীন বলেছেন, লাইলাতুল মোবারাকা হল শাবানের ১৫ তারিখের রাত (শবে বরাত)।’’


(ইমাম তাবারী, তাফসিরে তবারী, ২১/৬ পৃ.)



(১৬) ইমাম আবু হাইয়্যান আন্দুলুসী (رحمة الله) এ আয়াতের তাফসিরে লিখেন-


وَقَالَ عِكْرِمَةُ وَغَيْرُهُ: هِيَ ليلة النصف من شعبان


-‘‘তাবেয়ী ইকরামা (رحمة الله)সহ আরও অনেকে বলেছেন, লাইলাতুল মোবারাকা সেটি হল শাবানের ১৫ তারিখের রাত (শবে বরাত)।’’


(তাফসিরে বাহারুল মুহিত, ৯/৩৯৭ পৃ.)



(১৭) ইমাম বাগভী (رحمة الله) আরও বলেন-


وَرَوَى أَبُو الضُّحَى عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عنهما: أَنَّ اللَّهَ يَقْضِي الْأَقْضِيَةَ فِي لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ، وَيُسَلِّمُهَا إِلَى أَرْبَابِهَا فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ.


-‘‘প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে যে, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ্ তা‘য়ালা অর্ধ শাবান (শবে বরাতে) এর রাত্রিতে যাবতীয় বিষয়ের ভাগ্য তালিকা প্রস্তুত করেন। আর কদরের রাত্রিতে ঐ ভাগ্য তালিকা বাস্তবায়নকারী ফেরেশতাদের হাতে পেশ করেন।’’  ২৮

➥{ইমাম বাগভী: তাফসীরে মা‘লিমুত তানযিল : ৪/১৭৪ : পৃ., তাফসিরে ছালাভী, ১০/২৪৮ পৃ., তাফসিরে লুবাব ফি উলূমিল কিতাব, ১৭/৩১১ পৃ., তাফসিরে মাযহারী, ৮/৩৬২ পৃ.}


(১৮) ইমাম আবুল হাসান ওয়াহেদী নিশাপুরী (ওফাত. ৪৬৮ হি.) লিখেন-


وقيل: ليلة النِّصف من شعبان


-‘‘কোনো কোনো মুফাসসির বলেছেন, লাইলাতুল মোবারাকা হল শাবানের ১৫ তারিখের রাত (শবে বরাত)।’’


(ইমাম ওয়াহেদী, তাফসিরে ওয়াহেদী, ১/৯৮১ পৃ.)



(১৯) ইমাম আবু মুজাফফর সাম‘আনী (ওফাত. ৪৮৯ হি.) তার তাফসিরে লিখেন-


وَالْقَوْل الثَّانِي: قَول عِكْرِمَة، وَهُوَ أَنَّهَا لَيْلَة النّصْف من شعْبَان، وسماها مباركة لِكَثْرَة الْخَيْر فِيهَا. وَالْبركَة: نَمَاء الْخَيْر، ونقيضة الشؤم: نَمَاء الشَّرّ. وَقيل: مباركة لِأَنَّهُ يُرْجَى فِيهَا إِجَابَة الدُّعَاء.


-‘‘এ আয়াতের লাইলাতুল মোবারাকা এর বিষয়ে দ্বিতীয় মত হলো, তাবেয়ী হযরত ইকরামা (رحمة الله)-এর মত, তিনি বলেছেন, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল, শাবানের ১৫ তারিখের রাত (শবে বরাত)। এ রাতের নাম এজন্য লাইলাতুল মোবারাকা বলা হয়েছে যে, এ রাতে অনেক কল্যান নিহীত রয়েছে।.........কেউ কেউ এ রাতকে লাইলাতুল মোবারাক বলার কারণ হিসেবে বলেছেন, এ রাতে দোয়া কবুল হওয়ার আশা করা যায় একজন্য।’’


(ইমাম সাম‘আনী, তাফসিরে সাম‘আনী, ৫/১২১ পৃ.)



(২০) বিখ্যাত মুফাসসির ইমাম মাওয়ারিদী (رحمة الله) লিখেন-


[فِي لَيلَةِ مُّبَارَكَةٍ] فيها قولان: أحدهما: أنها ليلة النصف من شعبان؛ قاله عكرمة.


-‘‘এ আয়াতের লাইলাতুল মোবারাকা এর বিষয়ে মুফাস্সিরগণের দুটি মত রয়েছে, একটি মত হল, শাবানের ১৫ তারিখের রাত (শবে বরাত), যেমনটি তাবেয়ী ইকরামা (رحمة الله) বলেছেন।’’

(ইমাম মাওয়ারিদী, তাফসিরে মাওয়ারিদী, ৫/২৪৪ পৃ.)



(২১) ইমাম নাসাফী (رحمة الله) লিখেন-

[إِنَّآ أنزلناه فِى لَيْلَةٍ مباركة] أي ليلة القدر أو ليلة النصف من شعبان

-‘‘তাবেয়ী ইকরামা (رحمة الله)সহ আরও অনেকে বলেছেন, লাইলাতুল মোবারাকা হল লাইলাতুল ক্বদর অথবা শাবানের ১৫ তারিখের রাত (শবে বরাত)।’’

(ইমাম নাসাফী, তাফসিরে নাসাফী, ৩/২৮৬ পৃ.)


(২২) তাফসিরে ইয বিন আব্দুস সালামে রয়েছে-

[لَيْلَةٍ مُّبَارَكَةٍ] لما تنزل فيها من الرحمة، أو لما يجاب فيها من الدعاء ليلة النصف من شعبان

-‘‘(লায়লাতুল মোবারাক) এ রাতে রহমত নাযিল হয় অথবা এ রাতে দোয়া কবুল হয়, আর সেটি হল শাবানের ১৫ তারিখের রাত (শবে বরাত)।’’

(তাফসিরে ইয বিন আব্দুস সালাম, ৩/১৬৫ পৃ.)



(২৩) ইমাম আবু হাফস সিরাজুদ্দীন দামেস্কী (رحمة الله) লিখেন-

[لَيْلَةٍ مُّبَارَكَةٍ] لما تنزل فيها من الرحمة، أو لما يجاب فيها من الدعاء ليلة النصف من شعبان

-‘‘(লায়লাতুল মোবারাক) এটা সেই রাতে যে রাতে রহমত নাযিল হয় অথবা এ রাতের দোয়া কবুল হয়, আর সেটি হল শাবানের ১৫ তারিখের রাত (শবে বরাত)।’’

(তাফসিরে লুবাব ফি উলূমিল কিতাব, ১৭/৩০৮ পৃ.)



(২৪) ইমাম ইবনে কাসির (رحمة الله) লিখেন-

إِنَّهَا لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ كَمَا رُوِيَ عَنْ عِكْرِمَةَ

-‘‘লাইলাতুল মোবারাকা হল শাবানের ১৫ তারিখের রাত (শবে বরাত), যেমনটি তাবেয়ী ইকরামা (رحمة الله) হতে বর্ণিত আছে।’’

(তাফসিরে ইবনে কাসির, ৭/২২৫ পৃ., দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন।)



(২৫) আহলে হাদিসদের ইমাম শাওকানী লিখেন-

قَالَ عِكْرِمَةُ: اللَّيْلَةُ الْمُبَارَكَةُ هُنَا لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ.

-‘‘তাবেয়ী ইকরামা (رحمة الله) বলেন, লাইলাতুল মোবারাকা সেটি হল শাবানের ১৫ তারিখের রাত (শবে বরাত)।’’

(শাওকানী, ফতহুল কাদীর, ৪/৬৫৩ পৃ.)



(২৬) ইমাম ফখরুদ্দীন রাজী (رحمة الله) লিখেন-

وَقَالَ عِكْرِمَةُ وَطَائِفَةٌ آخَرُونَ: إِنَّهَا لَيْلَةُ الْبَرَاءَةِ، وَهِيَ لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ

-‘‘তাবেয়ী ইকরামা (رحمة الله)সহ আরও একজামাত মুফাস্সিরগণ বলেছেন, লাইলাতুল মোবারাকা সেটি হল শাবানের ১৫ তারিখের রাত (শবে বরাত)।’’

(ইমাম ফখরুদ্দীন রাজী, তাফসিরে কাবীর, ২৭/৬৫২ পৃ.)



(২৭) ইমাম ইবনে জাওযী (رحمة الله) তার তাফসিরে লিখেন-

والثاني: أنها ليلة النصف من شعبان، قاله عكرمة.

-‘‘এ আয়াতে ‘লাইলাতুল মোবারাকা’ এর বিষয়ে মুফাস্সিরগণের দ্বিতীয় মত হলো, এর দ্বারা শাবানের ১৫ তারিখের রাত (শবে বরাত) উদ্দেশ্য, এমনটি তাবেয়ী হযরত ইকরামা (رحمة الله)-এর মত।’’

(ইমাম ইবনে জাওযী, যাদুল মাইসীর ফি উলূমিত তাফসির, ৪/৮৭ পৃ.)


(২৮) আহলে হাদিস মোবারকপুরী লিখেন-


وَقِيلَ هِيَ لَيْلَةُ النصف من شعبان


-‘‘কোনো কোনো মুফাসসির বলেছেন, লাইলাতুল মোবারাকা হল শাবানের ১৫ তারিখের রাত (শবে বরাত)।’’ 

(মোবারকপুরী, তুহফাতুল আহওয়াজী, ৩/৩৬৭ পৃ.)


(২৯) আহলে হাদিস মোবারকপুরী আরও লিখেন-


وَفِي الْمِرْقَاةِ شَرْحِ الْمِشْكَاةِ قَالَ جَمَاعَةٌ مِنَ السَّلَفِ إِنَّ الْمُرَادَ فِي الْآيَةِ هِيَ لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ

-‘‘মেরকাত শরহে মিশকাত গ্রন্থে আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) বলেছেন, এক জামাত সালফে সালেহীনগণ বলেছেন, এ আয়াতের লায়লাতুল মোবারাকা দ্বারা উদ্দেশ্য শাবানের ১৫ তারিখ রাত (শবে বরাত।’’

(তুহফাতুল আহওয়াজী, ৩/৩৬৭ পৃ.)

━━━━━━━━━━━━━━━━
🌍 তথ্যসূত্রঃ [শহিদুল্লাহ বাহাদুর গ্রন্থসমগ্র এপ্স]
ডাউনলোড লিংকঃ bit.ly/Sohidullah
অথবা, এপ্সটি পেতে প্লে স্টোরে সার্চ করুন।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন