অষ্টম অধ্যায়
★গেয়ারভী শরীফের ইতিহাস★
ইসলামী শরীয়তে সকল কিছুই প্রথমত বৈধ, যে পর্যন্ত তা কোন সুস্পষ্ট দলীল দ্বারা নিষেধ প্রমাণিত না হয়। বৈধ হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট। এজন্যই ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله) ও ইমাম শাফেয়ী (رحمة الله) উভয়ই বলেন-
الْمُخْتَارَ أَنَّ الْأَصْلَ الْإِبَاحَةُ عِنْدَ الْجُمْهُورِ مِنْ الْحَنَفِيَّةِ وَالشَّافِعِيَّةِ
ইমাম শাফেয়ী, ইমাম আবু হানিফা এবং জমহুর ইমামদের পছন্দনীয় মতামত হল প্রত্যেক কিছুই বৈধ (যে পর্যন্ত না কোন দলীল দ্বারা নিষেধ করা হয়)।
🔺(ইমাম ইবনে আবেদীন শামী : রদ্দুল মুখতার আলা দুররুল মুখতার: ১/৭৮পৃ কিতাবুত তাহারাত)
তাই বৈধ হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট। আমাদের সমাজের এক শ্রেণীর কাঠ মোল্লাগণ মাহফিলে এই গেয়ারভী শরীফকে হারাম পর্যন্ত ফাতওয়া দিয়ে বেড়ান। অথচ হযরত সালমান ফারসী (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তির প্রশ্নের জবাবে বলেন-
الْحَلَالُ مَا أَحَلَّ اللَّهُ فِي كِتَابِهِ وَالْحَرَامُ مَا حَرَّمَ اللَّهُ فِي كِتَابِهِ وَمَا سَكَتَ عَنْهُ فَهُوَ مِمَّا عَفَا عَنْهُ
-‘‘হালাল হচ্ছে যা আল্লাহ তা‘য়ালা স্বীয় কিতাবে (কুরআনে) হালাল করেছেন; আর হারাম হচ্ছে, স্বীয় কিতাবে (কুরআনে) যা হারাম করেছেন এবং যেটা সম্পর্কে নিরব রয়েছেন সেটা মাফ।’’
🔺(খতীব তিবরিযী : মিশকাত : কিতাবুত : কিতাবুদ-ত্বআম: ৩/৯৮পৃ., ইমাম তিরমিযী : আস সুনান: ৪/১৯২পৃ : হাদিস : ১৭২৬, ইমাম ইবনে মাজাহ : আস-সুনান: ২/১১১পৃ হাদিস : ৩৩৯৭)
তাহলে সেই কাঠ মোল্লাদের কাছে জানতে চাওয়া কোরআন, অথবা হাদিসের কোন কিতাবে গিয়ারভী শরীফ পালন নিষিদ্ধ বলা হয়েছে ? কিয়ামত পর্যন্ত তাদের মুখ থেকে কোন জবাব পাওয়া যাবে না। আমরা এটিকে নফল বা মুস্তাহাব হিসেবেই জানি। মুস্তাহাব হওয়ার জন্য শরিয়তে কোন নিষেধ না থাকলে এবং বুযুর্গদের ভাল ধারণাই যথেষ্ট। ইমাম আলাউদ্দিন হাসকাফী (رحمة الله) তাঁর লিখিত বিখ্যাত হানাফী ফিকহের গ্রন্থ ‘‘দুররুল মুখতারের ওজুর মুস্তাহাব অধ্যায়ে লিখেন-
وَمُسْتَحَبُّهُ وَهُوَ مَا فَعَلَهُ النَّبِيُّ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - مَرَّةً وَتَرَكَهُ أُخْرَى، وَمَا أَحَبَّهُ السَّلَفُ
-‘‘মুস্তাহাব ঐ কাজটাকে বলা হয়, যেটা হুযুর(ﷺ ) কোন সময় করেছেন আবার কোন সময় করেননি এবং ঐ কাজটাকেও বলে, যেটা বিগত মুসলমানগণ ভাল মনে করেছেন।’’
🔺(ইবনে আবেদীন শামী, ফাতোয়ায়ে শামী, ১/১২৩পৃ. দারুল ফিকর ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন)
গেয়ারভী শরীফে যে সমস্ত আমল ওজীফা রয়েছে সেগুলো বড় পীর গাউসুল আযম আব্দুল কাদের জিলানী (رحمة الله) কুরানের আয়াত এবং বিভিন্ন বিক্ষিপ্ত হাদিস থেকে একসাথে করেছেন। তাতে ইসলামী শরীয়তে অসুবিধার কিছু নেই। তেমনিভাবে বিরোদ্ধবাদীদের পীর বুযুর্গরাও বিভিন্ন দোয়া ওজিফা বর্তমানে দিচ্ছেন এবং দিয়ে গেছেন তাহলে সেটা বিদ‘আত, নাজায়েয বলেন না কেন?
+++++++++
ফতোওয়ায়ে আহলে সুন্নাহ (আটটি বিষয়ের সমাধান)
গ্রন্থনা ও সংকলনেঃ
মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ বাহাদুর
প্রতিষ্ঠাতা, ইমাম আযম রিসার্চ সেন্টার, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ ০১৭২৩-৯৩৩৩৯৬
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন