ইমাম আ‘যম (رحمة الله) সম্পর্কে রাসূল (ﷺ) এর অগ্রিম সুসংবাদ
ইমাম আ‘যম (رحمة الله)’র শুভাগমন সম্পর্কে রাসূল (ﷺ) এর সুসংবাদ সম্বলিত অনেক হাদিস ‘দুররুল মুখতার’ গ্রন্থে বর্ণিত আছে। তবে বুখারী ও মুসলিম শরীফে হযরত আবু হোরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বিশুদ্ধ হাদিসে বর্ণিত আছে যে, হযরত আবু হোরায়রা (رضي الله عنه) বলেন, আমরা রাসূল (ﷺ) ’র খেদমতে উপস্থিত ছিলাম। এই মজলিসে সূরা জুমা অবতীর্ণ হয়েছে। যখন রাসূল (ﷺ) এ সূরার আয়াত وَاخِرِيْنَ مِنْهُمْ لَمَّا يَلْحَقُوْابِهِمْ তিলাওয়াত করেন। তখন উপস্থিত লোকদের মধ্যে একজন জিজ্ঞাসা করল, হে আল্লাহর রাসূল! ঐ লোকগণ কারা যারা এখনো আমাদের সাথে মিলিত হয়নি? তিনি এ প্রশ্ন শ্রবণ করে চুপ রইলেন। যখন বার বার প্রশ্ন করা হলো তখন তিনি হযরত সালমান ফার্সীর কাঁধে হাত মোবারক রেখে বললেন,
-لَوْ كَانَ الاِيْمَانُ عِنْدَ الثُرِيَّا لَناَ لَه رَجُلٌ مِنْ هؤلَاءِ
“ঈমান যদি তারকারাজিতেও থাকে তবুও এর সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি সেখান থেকে তা অন্বেষন করে নেবে।” ➥ ইমাম মুসলিম (رحمة الله) হিঃ ২৬১, সহীহ মুসলিম, বাবু ফদ্বলে ফারেস, হাদিস নং ৬৩৭৫
রদ্দুল মুহতার গ্রন্থে বলা হয়েছে যে, অধিকাংশ ওলামাদের মতানুযায়ী ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله)’র দাদা পারস্যবাসী ছিলেন। শাফেঈ মাযহাবের প্রখ্যাত আলেম ইমাম জালাল উদ্দিন সুয়ূতী (رحمة الله) বলেন-এই হাদিসটি ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম বর্ণনা করেছেন। এই হাদিসের বিশুদ্ধতার উপর সবাই একমত এবং এতে ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله)’র দিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله)’র ফযায়েল ও মানাকেবের জন্য এ হাদিসটিই যথেষ্ট। হাফেয সুয়ূতীর শাগরিদ শামী লিখেছেন, আমাদের উস্তাদ দৃঢ়তার সাথে যা বলেছেন তা সম্পূর্ণ সত্য ও বিশুদ্ধ। এতে কোন সন্দেহ নেই যে, এই হাদিস দ্বারা ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله)ই উদ্দেশ্য। কেননা, পারস্যবাসীদের মধ্যে ইমাম আবু হানিফার ফযীলত ও মর্যাদা পর্যন্ত কেউ পৌঁছতে পারেনি। ➥ আল্লামা সৈয়দ আমীন ইবনে আবেদীন শামী (رحمة الله) ১৩০৬ হিঃ, রদ্দুল মুহতার, খণ্ড ১, পৃষ্ঠাঃ ৪৯ ও ইবনে হাজার মক্কী (رحمة الله) (৯৭৩ হিঃ), আল খায়রাতুল হিসান, আরবী, পৃষ্ঠাঃ ৩১, উর্দু পৃষ্ঠাঃ ৩৫)
ইবনে হাজার মক্কী (رحمة الله) আরো বলেন, ইমাম আবু হানিফা সম্পর্কে ভবিষ্যত বাণীর বিষয়টি এ হাদিস দ্বারাও প্রমাণিত হয়,
تُرْفَعُ زِيْنَةُ الدُّنْيَا سِنَةَ خَمْسِيْنَ وَمِائَةٍ
“১৫০ হিজরীতে দুনিয়ার সৌন্দর্য উঠে যাবে।” প্রখ্যাত ফিকাহ বিশেষজ্ঞ শামশুল আইম্মা আব্দুল গাফফার কুরদরী (رحمة الله) (৫৬২ হি.) বলেন:
اَنَّ هذَا الحَدِيْثَ مَحْمُولٌ عَلى اَبيِ حَنِيْفَةَ لاِ نَّه مَاتَ تِلْكَ السِّنَةَ
এ হাদিস দ্বারা আবু হানিফা (رحمة الله)ই উদ্দেশ্য। কারণ তিনি ঐ বছরই তথা ১৫০ হিজরীতে ইন্তেকাল করেছেন।
➥ ইবনে হাজর মক্কী (رحمة الله)(৯৭৩হিঃ) খায়রাতুল হিসান, আরবী পৃষ্ঠাঃ ৩৩ ও আহমদ জুদত পাশা, আল মালুমাতুন নাফিয়া, আরবী, পৃষ্ঠাঃ ৪৪)।
+++++++++
কিতাবঃ শরহে মুসনাদে ইমাম আ‘যম আবু হানিফা
[ইমাম আবু হানিফা (রহ.) এর সংকলিত কিতাব মুসনাদে ইমামে আজমের ব্যাখ্যাগ্রন্থ]
ব্যাখ্যাকারঃ হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ ওসমান গণি
আরবি প্রভাষকঃ
জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া
ষোলশহর, চট্টগ্রাম।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন