লাইলাতুল ক্বদর”র ফযিলত বা মাহাত্ম্য কী?
❏ এ রাতের ফযিলত বর্ণনায় স্বতন্ত্র সুরা অবতরণ:
লাইলাতুল ক্বদরের ফযিলত, গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য এত বেশি যে, এর মর্যাদা বর্ণনায় পবিত্র কুরআন কারিমে আল্লাহ্ তা‘আলা স্বতন্ত্র একটি সুরা নাযিল করেছেন ‘সুরাতুল ক্বদর’ নামে। আল্লাহ্ বলেন:
إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ (১) وَمَا أَدْرَاكَ مَا لَيْلَةُ الْقَدْرِ (২) لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ (৩) تَنَزَّلُ الْمَلَائِكَةُ وَالرُّوحُ فِيهَا بِإِذْنِ رَبِّهِمْ مِنْ كُلِّ أَمْرٍ (৪) سَلَامٌ هِيَ حَتَّى مَطْلَعِ الْفَجْرِ (৫)
-“নিশ্চয়ই আমি তা (কুরআন) অবতীর্ণ করেছি ক্বদরের রাতে। আর আপনি কি জানেন ক্বদরের রাত কী? ক্বদরের রাত হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। সে রাতে ফেরেশতাগণ ও রুহ অবতীর্ণ হয়, প্রত্যেক কাজে তাঁদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে। শান্তিই শান্তি, বিরাজ করে ঊষার আবির্ভাব পর্যন্ত।” ১১
➥১১ - সুরা আল-ক্বদর: ১-৫
❏ কুরআন নাযিলের রাত্র:
মহান আল্লাহ্ তা‘আলা ইরশাদ করেন,
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنْزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ
-‘রমাদ্বানের মাস, যাতে অবতীর্ণ হয়েছে কুরআন।’ ১২
➥১২ - সূরাহ্ আল-বাক্বারাহ্ : ১৮৫
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে,
إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ
-‘নিশ্চয় আমি লাইলাতুল্ ক্বদরে কুরআন অবতীর্ণ করেছি।’ ১৩
➥১৩ - সুরা আল-ক্বদ্র: ১
কুরআন লাইলাতুল্ ক্বদরে অবতীর্ণ হয়েছে। আর লাইলাতুল ক্বদর রমাদ্বান মাসেরই একটি মহিমান্বিত রজনী। অর্থাৎ প্রথম আয়াতে আল্লাহ্ তা‘আলা রমাদ্বান মাসে কুরআন নাযিলের কথা বলেছেন। কিন্তু এতে একটি প্রশ্ন থেকে যায় যে, রমাদ্বান মাসের নির্দিষ্ট কোন্ সময় কুরআন নাযিল হয়েছে? এর জবাব উল্লেখিত দ্বিতীয় আয়াতটিতে পাওয়া যায় যে, কুরআন মাজিদ রমাদ্বান মাসের ক্বদরের রাত্রিতে অবতীর্ণ হয়েছে।
❏ ফেরেশতা নাযিলের রাত্র:
ইরশাদ হয়েছে:
تَنَزَّلُ الْمَلَائِكَةُ وَالرُّوحُ فِيهَا بِإِذْنِ رَبِّهِمْ مِنْ كُلِّ أَمْرٍ
-“সে রাতে ফেরেশতাগণ ও রুহ অবতীর্ণ হয়, প্রত্যেক কাজে তাঁদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে।” ১৪
➥১৪ - সুরা আল-ক্বদর: ৪
❏ শান্তিই শান্তি যে রাত্রিতে:
ইরশাদ হয়েছে:
سَلَامٌ هِيَ حَتَّى مَطْلَعِ الْفَجْرِ
-“শান্তিই শান্তি, বিরাজ করে ঊষার আবির্ভাব পর্যন্ত।” ১৫
➥১৫ - সুরা আল-ক্বদর: ৫
❏ হাজার মাস থেকে শ্রেষ্ঠ:
পবিত্র কুরআন কারিমে আল্লাহ্ বলেন:
لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ
-‘ক্বদরের রাত হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।’ ১৬
➥১৬ - সূরাহ্ আল-ক্বদর: ৩
হযরত সালমান ফারসি রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: শা‘বান মাসের শেষ দিনে আল্লাহ্’র রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের উদ্দেশ্যে একটি ভাষণ দিলেন। এতে নবীজি ইরশাদ করেন:
عن سلمان الفارسي قال خطبنا رسول الله صلى الله عليه و سلم في آخر يوم من شعبان فقال النَّبِىُّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَيُّهَا النَّاسُ! قَدْ أَظَلَّكُمْ شَهْرٌ عَظِيْمٌ شَهْرٌ مُّبَارَكٌ فِيْهِ لَيْلَةٌ خَيْرٌ مِّنْ أَلْفِ شَهْرٍ جَعَلَ اللهُ صِيَامَهُ فَرِيْضَةً وَ قِيَامَ لَيْلِهٖ تَطَوُّعًا
-‘হে লোক সকল! তোমাদের সম্মুখে একটি মহিমান্বিত ও বরকতময় মাস আগমন করছে, যাতে এমন একটি রাত রয়েছে- যা হাজার মাস হতেও উত্তম, আল্লাহ পাক এ মাসের রোযাকে ফরয করেছেন, আর রাত্রিতে তারাভিহ্’র নামায সুন্নাত করেছেন।’ ১৭
➥১৭ - ইমাম বায়হাক্বী, শু‘আবুল্ ঈমান, বাবুন্ ফিস্-সিয়াম, খন্ড: ৩, পৃষ্ঠা: ৩০৫, হাদিস নং: ৩৬০৮)।
_____________
লাইলাতুল ক্বদর : ফযিলত ও আমল
গ্রন্থনা ও সংকলন: মুফতি মুহাম্মদ আলমগীর হোসাইন আন-নাজিরী
🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন