তারাবীহের নামায বিশ রাকাত হওয়ার প্রমাণ


তারাবীহর নামায বিশ রাকাত পড়া সুন্নাত; আট রাকাত পড়া সুন্নাতের বরখেলাপ। আমি কুরআন শরীফের বিন্যাস, বিশুদ্ধ হাদীছ, উলামায়ে কিরামের উক্তি ও আকলী দলীল সমূহ দ্বারা এর প্রমাণ দিচ্ছি।



১) কুরআন শরীফে সূরাও আছে, আয়াতও আছে এবং রুকুও আছে। কুরআন শরীফের যে সব বিষয় বস্তুর নাম রয়েছে, সে গুলোকে সূরা বলা হয় আর যে সব বাক্যের ভিন্ন ভিন্ন নাম নেই, ওগুলোকে আয়াত বলা হয়। কিন্তু রুকুকে রুকু কেন বলা হয়, তা ভেবে দেখা দরকার। কেননা সূরার অর্থ হচ্ছে কোন কিছুকে পরিবেষ্টন করা আর আয়াত অর্থ চিহ্ন, যেহেতু সূরা একটি বিষয় বস্তুকে অন্তর্ভুক্ত করে যেমন- সূরা বলদ আর আয়াত খোদায়ী কুদরতের চিহ্ন হিসেবে বিবেচ্য, সেহেতু এ নামকরণ যথার্থ হয়েছে। কিন্তু কুরআনী রুকুকে রুকু কেন বলা হয়, তা একবার তলিয়ে দেখা দরকার। রুকু মানে নত হওয়া। তাজবীদের কিতাবসমূহ থেকে জানা যায় যে হযরত উমর ও উছমান (رضي الله عنه) তারাবীহর নামাযে যেই পরিমাণ কুরআন পাঠ করে রুকু করতেন, সেই অংশের নাম রুকু রাখা হয়েছে। তারবীহের নামায বিশ রাকাত এবং রমযানের সাতাশ তারিখে কুরআন খতম-এ হিসাবে ধরলে, কুরআনে পাকে মোট ৫৪০ রুকু হওয়ার কথা। কিন্তু যেহেতু খতমের দিন কোন কোন রাকাতে ছোট ছোট দু’তিন সূরা একসাথে পড়ে ফেলা হতো, সেহেতু কুরআনশরীফ ৫৫৭ রুকু সম্বলিত হয়েছে। যদি তারাবীহের নামায আট রাকাতই হতো, তাহলে রুকুর সংখ্যা ১১২ হওয়াটাই যুক্তিযুক্ত ছিল। অতএব কুরআনের রুকুর সংখ্যাই প্রমাণ করছে যে তারবীহের নামায বিশ রাকাত। কোন ওহাবী আট রাকাত তারাবীহের সমর্থনে কুরআনী রুকুর কোন ব্যাখ্যা দিতে পারবে কি?



২) তারাবীহ تراويح শব্দটি ترويح এর বহুবচন, যার অর্থ হলো শরীরকে আরাম দেয়া। তারাবীহের নামাযে চার রাকাতের পর কিছুক্ষণের জন্য বসে আরাম করা হয়। সেই বসাটার নাম তরবীহা। এ জন্য এই নামাযকে তারাবীহ অর্থাৎ আরামের সমষ্টি বলা হয়। আরবীতে কমপক্ষে তিনটাকে বহুবচন বলা হয়। যদি আট রাকাত তারাবীহ হয়, তাহলেতো এর মধ্যে মাত্র একবার তরবীহা পাওয়া যাচ্ছে এবং এর নাম তারাবীহ (বহুবচন) হতো না। তিন তরবীহার (বিশ্রাম) জন্য কম পক্ষে ষোল রাকাত তারাবীহ হওয়া বাঞ্ছনীয় অর্থাৎ প্রতি চার রাকাত পর এক তরবীহা। বিতরের আগে কোন তরবীহা বা বিশ্রাম নেওয়া হয় না। তাই তারাবীহের নামই আট রাকাত তারাবীহের দাবীকে অপ্রমাণ করে।



৩) প্রতি দিন বিশ রাকাত নামায অত্যাবশ্যক-সতের রাকাত ফরয ও তিন রাকাত বিতর, যথা- ফজরে দু’রাকাত, যুহরে চার রাকাত, আসরে চার রাকাত, মাগরিবে তিন রাকাত এবং ইশায় চার রাকাত ফরয ও তিন রাকাত বিতর। পবিত্র রমযান মাসে আল্লাহ তা’আলা এ বিশ রাকাতের পরিপূর্ণতার জন্য আরও বিশ রাকাত তারাবীহের নামায নির্ধারণ করেছেন। লা মযহাবীরা সম্ভবতঃ পাঁচ ওয়াক্তিয়া নামাযেও আট রাকাত পড়ে থাকেন নতুবা আট রাকাতের সাথে ঐ বিশ রাকাতের কি সামঞ্জস্য থাকতে পারে?



৪) হাদীছ সমূহঃ 



স্মর্তব্য যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম নিয়মিতভাবে তারাবীহের নামায জামাত সহকারে আদায় করেননি; কেবল দু’এক দিন আদায় করেছেন। অবশ্য তিনি বলে দিয়েছেন যে যদি এটা নিয়মিতভাবে আদায় করা হয়, তাহলে ফরয হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা আমার উম্মতের জন্য কষ্টকর হবে। তাই তোমরা ঘরের মধ্যেই নামায পড়ে নিও। কেউ কেউ বলেন এ নামায আসলে তাহাজ্জুদের নামাযই ছিল, যা রমযান মাসে গুরুত্ব সহকারে আদায় করানো হয়েছে। এ জন্য সাহাবায়ে কিরাম সাহরীর শেষ সময়ে এ নামায থেকে ফারেগ হতেন। হযরত সিদ্দীক আকবর (رضي الله عنه) এর যুগেও এটা সুষ্ঠু ভাবে আদায়ের কোন ব্যবস্থা করা হয়নি। লোকেরা আলাদা আলাদাভাবে পড়ে নিতেন। হযরত উমর ফারুক (رضي الله عنه) এ ব্যাপারে যথার্থ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, বিশ রাকাত তারাবীহের নামায নির্ধারণ করেন এবং বিশ রাকাত নিয়মিত ভাবে জামাত সহকারে আদায়ের ব্যবস্থাও করেন। তাই সঠিক বক্তব্য হচ্ছে তারাবীহের নামায মূলত সুন্নাতে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম। কিন্তু একে নিয়মিতভাবে জামাত সহকারে বিশ রাকাত আদায় করাটা হচ্ছে সুন্নাতে ফারুক (رضي الله عنه)। নবী করীম (ﷺ) আট রাকাত তারাবীহের নির্দেশও দেননি এবং এ ব্যাপারে বাধ্যবাধকতাও করেননি। এমনকি আট রাকাত তারাবীহ পড়া সম্পর্কে কোন সুস্পষ্ট প্রমাণ নেই। তাই বিশ রাকাতের উপর সাহাবায়ে কিরামের ঐক্যমত হওয়াটা সুন্নাতের বিপরীত নয়।



✦ আমাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে-


فَعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِي وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الْمَهْدِيِّينَ الرَّاشِدِينَ


-‘‘তোমাদের জন্য আমার সুন্নাতও খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নত পালনীয়।’’  ৬৪২


➥642. সুুনানে আবি দাউদ, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-২০০, হাদিস-৪৬০৭, সুনানে তিরমিযি, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৯২, সুনানে ইবনে মাযাহ, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-১৫-১৬, হাদিস-৪২-৪৩।



যা হোক আমরা বিশ রাকাতের সমর্থনে সাহাবায়ে কিরামের আমল পেশ করলাম। দেখি, লা মযহাবীরা তাদের আট রাকাত তারাবীহের সমর্থনে এমন কোন সহীহ মরফু হাদীছ পেশ করতে পারে কিনা, যদ্দারা আট রাকাত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়। ইনশা আল্লাহ কখনও পারবে না। আমাদের দাবীর সমর্থনে উত্থাপিত হাদীছ সমূহ নিম্নে পেশ করা হলো-



১। হযরত উমর (رضي الله عنه) স্বীয় খিলাফতের যুগে বিশ রাকাত তারাবীহ জামাত সহকারে আদায়ের ব্যবস্থা করেন। এ ব্যাপারে সাহাবায়ে কিরাম একমত ছিলেন। ‘মুয়াত্তায়ে ইমাম মালিক’ কিতাবে হযরত সায়েব ইবনে ইয়াযিদ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে-


عَنِ السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ قَالَ:  كُنَّا نَقُومُ فِي زَمَانِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ بِعِشْرِينَ رَكْعَةً وَالْوِتْرِ


-‘‘তিনি বলেন, আমরা হযরত উমরের যামানায় ২০ রাক‘আত তারাবীহ পড়তাম।’’ ৬৪৩


➥643. মুয়াত্তায়ে মালেক, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-১১৫, হাদিস-২৫২, ইমাম বায়হাকী, আল-মা‘রিফাতুল সুনানি ওয়াল আছার, ৪/৪২পৃ: হা/৫৪০৯, এবং আস্-সুনানিল সুগড়া, ১/২৯৭পৃ: হা/৮২১



২। হযরত ইবনে মুনিঈ (رحمة الله) হযরত উবাই ইবনে কা’ব (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেছেন-


فَصَلِّى بِهِمْ عِشْرِينَ رَكْعَةً


-‘‘তিনি (উবাই ইবনে কা‘ব) লোকদেরকে নিয়ে ২০ রাক‘আত নামায আদায় করতেন।’’ ৬৪৪


➥644.তবে এ কিতাবটি আমার হাতের নাগালে নেই।


☞তবে এ হাদিসটি ইমাম যিয়া মাকদাসী (رحمة الله) {ওফাত. ৬৪৩হিঃ) সংকলন করেন-


أخبرنَا أَبُو عبد الله مَحْمُود بن أَحْمد بن عبد الرَّحْمَن الثَّقَفِيُّ بِأَصْبَهَانَ أَنَّ سَعِيدَ بْنَ أَبِي الرَّجَاءِ الصَّيْرَفِي أخْبرهُم قِرَاءَة عَلَيْهِ أَنا عبد الْوَاحِد بن أَحْمد الْبَقَّال أَنا عبيد الله بْنُ يَعْقُوبَ بْنِ إِسْحَاقَ أَنا جَدِّي إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ جَمِيلٍ أَنا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ أَنا الْحَسَنُ بْنُ مُوسَى نَا أَبُو جَعْفَرٍ الرَّازِيُّ عَنِ الرَّبِيعِ بْنِ أَنَسٍ عَنْ أَبِي الْعَالِيَةِ عَنْ أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ أَنَّ عُمَرَ أَمَرَ أُبَيًّا أَنْ يُصَلِّيَ بِالنَّاسِ فِي رَمَضَانَ...... فَصَلَّى بِهِمْ عِشْرِينَ رَكْعَة


-‘‘ইমাম যিয়া মাকদাসী (رحمة الله) .....যথাক্রমে আবু জাফর রাজী (رحمة الله) থেকে তিনি রাবেঈ বিন আনাস (رحمة الله) থেকে তিনি বিখ্যাত তাবেয়ী আবিল বাখতারী (رحمة الله) হতে তিনি বলেন, হযরত উমর (رضي الله عنه) উবাই ইবনু কা‘বকে রমযান মাসে লোকদের সাথে ছালাত আদায়ের নির্দেশ দিয়েছিলেন।......অতঃপর তিনি তাদের সাথে ২০ রা‘কআত নামায আদায় করেছিলেন।’’ (ইমাম মাকদাসী, আহাদিসুল মুখতার, ৩/৩৬৭পৃ: হা/১১৬১,)



৩। ইমাম বায়হাকী এবং ইমাম আবী শায়বাহ (رحمة الله) সংকলন করেন-


حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ حَسَنِ بْنِ صَالِحٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ قَيْسٍ، عَنِ ابْنِ أَبِي الْحَسْنَاءِ، أَنَّ عَلِيًّا أَمَرَ رَجُلًا يُصَلِّي بِهِمْ فِي رَمَضَانَ عِشْرِينَ رَكْعَةً


-‘‘আমাকে ইমাম ওয়াকী বলেছেন, তাকে হাসান বিন সালেহ তাকে আমর বিন কায়েস তিনি তাবেয়ী ইবনে আবিল হাসনা (رحمة الله) হতে তিনি বলেন, নিশ্চয় আলী (رضي الله عنه) এক ব্যক্তিকে এই মর্মে নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, সে যেন লোকদেরকে নিয়ে রামাযান মাসে ২০ রাক‘আত তারাবীহ পড়ায়।’’  ৬৪৫


➥645.ইমাম ইবনে আবি শায়বাহ, আল-মুসান্নাফ, ২/১৬৩পৃ: হা/৭৬৮১,



☞ইমাম বায়হাকী এ হাদিসটির আরেকটি সূত্র এভাবে সংকলন করেন-


أنبأ أَبُو عَبْدِ اللهِ بْنُ فَنْجَوَيْهِ الدَّيْنَوَرِيُّ، ثنا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ بْنِ عِيسَى السُّنِّيُّ، أنبأ أَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْبَزَّازُ، ثنا سَعْدَانُ بْنُ يَزِيدَ، ثنا الْحَكَمُ بْنُ مَرْوَانَ السُّلَمِيُّ، أنبأ الْحَسَنِ بْنُ صَالِحٍ، عَنْ أَبِي سَعْدٍ الْبَقَّالِ، عَنْ أَبِي الْحَسْنَاءِ أَنَّ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ أَمَرَ رَجُلًا أَنْ يُصَلِّيَ، بِالنَّاسِ خَمْسَ تَرْوِيحَاتٍ عِشْرِينَ رَكْعَةً


-‘‘ইমাম বায়হাকী (رحمة الله) যথাক্রমে..আবি সা‘দ বাক্কাল (رحمة الله) থেকে তিনি আবিল হাসনা (رحمة الله) হতে তিনি বলেন, নিশ্চয় আলী (رضي الله عنه) এক ব্যক্তিকে এই মর্মে নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, সে যেন লোকদেরকে নিয়ে রামাযান মাসে ২০ রাক‘আত তারাবীহ পড়ায়।’’ (বায়হাকী, আস্-সুনানিল কোবরা, ২/৬৯৯পৃ: হা/৪২৯২)



৪। ইমাম ইবনে আবি শায়বাহ (رحمة الله) সহ একজামাত ইমামগণ সংকলন করেন-


عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُصَلِّي فِي رَمَضَانَ عِشْرِينَ رَكْعَةً وَالْوِتْرَ


-‘‘হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) রমযান মাসে জামাত ব্যতীত ২০ রাকাত নামায পড়তেন এবং বিতির পড়তেন।’’  ৬৪৬


➥646.ইমাম আবি শায়বাহঃ আল মুসান্নাফঃ ২/১৬৪ পৃঃ ২২৭ নং অধ্যায় হাদিস নং- ৭৬৯২, মাকতুবাতুর রাশাদ, রিয়াদ, সৌদি আরব, ইমাম তাবরানীঃ মু‘জামুল কবীরঃ ১১/৩৯৩ পৃ:ঃ হাদিসঃ ১২১০২, ইমাম হুমাইদীঃ আল মুন্তাখাবুল মিনাল মুসনাদঃ পৃ: ৬৫৩,বায়হাকীঃ সুনানে কোবরাঃ ২/৪৯৫ পৃ,ঃ হাদিসঃ ৪৩৯২,খতিবে বাগদাদীঃ আল মাওয়াযিঈঃ ১/৩৮৭পৃ:, ইমাম আদিঃ আল কামিলঃ ১/২৪০ পৃ: ইবনে হাজার হায়সামীঃ মাযমাউদ যাওয়ায়েদঃ ৩/১৭২ পৃ: যাহাবীঃ যাওয়ায়েদুল মাআয়ামিনঃ ১/১০৯ পৃ: আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানীঃ ফতহুল বারী  শরহে বুখারীঃ ৪/২৫৪ পৃ: হাদিসঃ ২১৩, মানাবীঃ আল মুন্তাখাবুল মিনাল ফাওয়াইদঃ ২/২৬৮, তাবরানীঃ মু’জামুল আওসাতঃ ১/২৪৩ পৃ: হাদিসঃ ৭৯৮,আবুল হাসান নুআলীঃ হাদিসাহঃ ১/১২৭ পৃ: আলবানীঃ সিলসিলাতুল আহাদিসুদ্-দ্বঈফাঃ ২/৩৫ পৃ:ঃ হাদিসঃ ৫৬০, ইমাম তাবরানীঃ মু’জামুল আওসাতঃ ৫/৪২৪ পৃ: হাদিসঃ ৫৪৪০,ইমাম খতিবে বাগদাদঃ তারিখে বাগদাদঃ ৬/১১৩ পৃ:ইমাম ইবনুল আব্দুল বারঃ আত-তামহীদঃ ৮/১১৫ পৃ:আসকালানীঃ ফতহুল বারীঃ ১/২০৩ পৃ: হাদিসঃ ২৫৭,সুয়ূতিঃ তানভীরুল হাওয়ালিকঃ ১/১০৮ পৃ: হাদিসঃ ২৬৩, যাহাবীঃ মিযানুল ই’তিদালঃ ১/১৭০ পৃ: রাভীঃ ৯৮৫৫, দারুল ফিকর ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন, ইমাম সান-আনীঃ সবলুস-সালামঃ ২/১০ পৃ: মিয্যীঃ তাহযীবুল কামালঃ ২/১৪৯ পৃ: যায়লাঈঃ নাসবুর রাইয়্যাহঃ ২/১৫৩পৃ: ইমাম যুরকানীঃ শরহে আলা মুয়াত্তাঃ ১/৩৪২পৃ: ও ১/৩৫১পৃ:, আযীমাবাদীঃ আওনুল মা’বুদঃ ৪/১৫৩ পৃ: মোবারকপুরীঃ তুহফাতুল আহওয়াজীঃ ৩/৪৪৫ পৃ:,আসকালানীঃ লিসানুল মিযানঃ ৩/২৪২পৃ: ইমাম আদিঃ আল-কামিলঃ ১/২৪০ পৃ: এ হাদিসের বিষয়ে বিস্তারিত বাতিলদের জবাব জানতে আমার লিখিত ‘প্রমাণিত হাদিসকে জাল বানানোর স্বরূপ উন্মোচন’ ২য় খন্ডের ৬৯১-৬৯৮ পৃষ্ঠায় দেখুন।



এ হাদীছ থেকে বোঝা যায় যে, স্বয়ং হুযূর (ﷺ) বিশ রাকাত তারাবীহের নামায পড়তেন।



৫। ইমাম বায়হাকী (رحمة الله) সংকলন করেন-


عَنْ شُتَيْرِ بْنِ شَكَلٍ وَكَانَ مِنْ أَصْحَابِ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّهُ كَانَ يَؤُمُّهُمْ فِي شَهْرِ رَمَضَانَ بِعِشْرِينَ رَكْعَةً وَيُوتِرُ بِثَلَاثٍ


-‘‘সুতাইর ইবনে শাকাল (رحمة الله) হতে বর্ণিত, হযরত আলী (رضي الله عنه)-এর সাথীরা ২০ রাক‘আত তারাবীহ পড়তেন। এবং তিনি তাদের সাথীদের সাথে ৩ রাক‘আত বিতর পড়তেন।’’ ৬৪৭


➥647. বায়হাকী, ফাযায়েলুল আওকাত, ১/২৭৬পৃ: হা/১২৭



৬। ইমাম বায়হাকী (رحمة الله) সংকলন করেন-


أَخْبَرَنَا أَبُو الْحُسَيْنِ بْنُ الْفَضْلِ الْقَطَّانُ بِبَغْدَادَ أنبأ مُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ عِيسَى بْنِ عَبْدَكَ الرَّازِيُّ، ثنا أَبُو عَامِرٍ عَمْرُو بْنُ تَمِيمٍ، ثنا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ يُونُسَ، ثنا حَمَّادُ بْنُ شُعَيْبٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ، عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: دَعَا الْقُرَّاءَ فِي رَمَضَانَ فَأَمَرَ مِنْهُمْ رَجُلًا يُصَلِّي بِالنَّاسِ عِشْرِينَ رَكْعَةً قَالَ: وَكَانَ عَلِيٌّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يُوتِرُ بِهِمْ


-‘‘ইমাম বায়হাকী (رحمة الله) যথাক্রমে..তাবেয়ী আতা ইবনু সায়িব থেকে তিনি তাবেয়ী আবি আব্দুর রাহমান সুলাইমী (رحمة الله) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রমযান মাসে মাওলা আলী (رضي الله عنه) ক্বারীগণকে আহবান করলেন। অতঃপর তাঁদের মধ্যে হতে একজনকে নির্দেশ দান করলেন, বর্ণনাকারী বলেন, মাওলা আলী (رضي الله عنه)যেন লোকদেরকে ২০ রাক‘আত নামায পড়ান। বর্ণনাকারী বলেন, হযরত আলী (رضي الله عنه) শুধু তাদের সাথে শুধু বিতর পড়তেন।’’ ৬৪৮


➥648.বায়হাকী, আস্-সুনানিল কোবরা, ২/৬৯৯পৃ: হা/৪২৯১



৭। ইমাম বায়হাকী (رحمة الله)সহ অনেক ইমাম সংকলন করেন-


أَخْبَرَنَا أَبُو عَبْدِ اللهِ الْحُسَيْنُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ الْحُسَيْنِ بْنِ فَنْجَوَيْهِ الدَّيْنَوَرِيُّ بِالدَّامَغَانِ، ثنا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ السُّنِّيُّ، أنبأ عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ الْبَغَوِيُّ، ثنا عَلِيُّ بْنُ الْجَعْدِ، أنبأ ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ خُصَيْفَةَ، عَنِ السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ قَالَ: كَانُوا يَقُومُونَ عَلَى عَهْدِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فِي شَهْرِ رَمَضَانَ بِعِشْرِينَ رَكْعَةً


-‘‘হযরত ইয়াযিদ ইবনে খুছাইফা (رحمة الله) তিনি হজরত সাইব ইবনে ইয়াযিদ (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রমযানে হযরত উমর ইবনে খাত্তাব (رضي الله عنه) জামানায় লোকেরা ২০ রাকাত তারাবীহ পড়তেন।’’৬৪৯


➥649. ইমাম বায়হাক্বী, আস্-সুনানিল কোবরা, ২য় খন্ড, ৬৯৮ পৃ:হা/৪২৮৮, দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন। ইমাম নিমবী, আছারুছ ছুনান, ২৪৫ পৃ:; যায়লাঈ, নাছবুর রায়া, ২য় খন্ড, ইমাম সুয়ূতী, আল-হাবী লিল ফাতওয়া, ১ম খন্ড, ৪১৫ পৃ:; ইবনে হাজার আসকালানী, ফাতহুল বারী শরহে বূখারী, ৪র্থ খন্ড, ৩১৬ পৃ:; মোল্লা আলী ক্বারী, মেরকাত, ৩য় খন্ড, ৩৪৫ পৃ:হা/।



(সহীহুল বিহারীর كَمْ يَقْرَانِى التَّرَوِيْح শীর্ষক অধ্যায়ে এর বিশ্লেষণ দেখুন) উপরোক্ত রেওয়ায়েত থেকে প্রতিভাত হলো যে স্বয়ং (ﷺ) তারাবীহর নামায বিশ রাকাত পড়তেন এবং হযরত উমর ফারুকের খিলাফতের সময় এ বিশ রাকাতের উপর যথাযথ আমল করার সূচনা হয়েছিল। হযরত ইবনে আব্বাস, আলি, আবি ইবনে কাব, উমর, সায়েব ইবনে ইয়াযিদ প্রমুখ সাহাবায়ে কিরাম এর উপর আমল করেছিলেন।

_________________

জা’আল হক (দ্বিতীয়াংশ)

মূল: হযরত হাকীমুল উম্মত মুফ্তী আহমদ ইয়ার খান নঈমী (رحمة الله)

অনুবাদ: অধ্যাপক মুহাম্মাদ লুৎফুর রহমান


সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন