হযরত সায়্যিদুনা শফীক বিন ইবরাহীম (رحمة الله) বলেন: “আমি একদা মক্কা শরীফে হুযুর (ﷺ) এর পবিত্র জন্মস্থানের নিকট হযরত সায়্যিদুনা ইবরাহীম বিন আদহাম - (رحمة الله) এর সাক্ষাৎ পেলাম। তিনি (رحمة الله) রাস্তার ধারে বসে কাঁদছিলেন। আমি তাঁর (رحمة الله) কাছে গিয়ে বসলাম এবং জিজ্ঞাসা করলাম, “ওহে আবূ ইসহাক! (এটা তাঁর (رحمة الله) উপনাম ছিল) কেন কাঁদছেন?” তিনি বললেন: “ভাল”। আমি আমার কথা দুই তিনবার বলার পর তিনি । বললেন: “ওহে শফীক (رحمة الله) ! আমার কথার গােপনীয়তা রক্ষা করবে তাে।” আমি বললাম: “যা মন চায় বলে দিন!" তিনি বললেন: “আমার নফস ৩০ বৎসর থেকে সিকবাজ (সিরকা, মাংস ও সুগন্ধিযুক্ত মসলা দ্বারা তৈরী তরকারী) খাওয়ার আগ্রহে অস্থির ছিল। কিন্তু আমি তাকে দমন করতে থাকি। গতরাতে যখন আমি বসাবস্থায় ছিলাম তখন আমার ঘুম এসে গেল। এক যুবককে সবুজ পেয়ালা হাতে দেখলাম, যা থেকে ঐ তরকারি সুগন্ধ উঠছিল। আমি সাহস করে তার কাছ থেকে দূরে সরে গেলাম। তখন সে (যুবক) ঐ পেয়ালা আমার দিকে অগ্রসর করে বলল: “ওহে ইবরাহীম (رحمة الله)! খেয়ে নিন।” আমি বললাম: “আমি খাবনা। আমি এটা আল্লাহর জন্য ত্যাগ করেছি।" সে বলল: “আল্লাহই আপনাকে এটা দান করেছেন, খেয়ে নিন।” আমার কাছে এর কোন প্রত্যুত্তর ছিলনা, তাই আমি কেঁদে ফেললাম। তখন সে বলল: “খেয়ে নিন, আল্লাহ আপনার উপর দয়া করুন।" আমি বললাম: “আমাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, যতক্ষণ পর্যন্ত নিশ্চয়তা মিলবেনা কোথেকে এসেছে ততক্ষণ পর্যন্ত নিজের পেটে ঢালবে না।” সে বলল: “খেয়ে নিন। আল্লাহ আপনাকে নিরাপত্তা দান করুন, আমাকে এ খাবার দিয়ে বলা হয়েছে যে, ওহে খিজির এটা নিয়ে যাও আর ইবরাহীম বিন আদহাম (رحمة الله) এর নফসকে খাওয়াও।
কারণ আল্লাহ তাঁকে (সিকবাজ হতে) বিরত রাখার ক্ষেত্রে, এ দীর্ঘ ধৈর্যের কারণে তাঁর উপর অনুগ্রহ করেছেন। ওহে ইবরাহীম (رحمة الله) ! আমি ফিরিশতাগণকে বলতে শুনেছি, “যাকে দান করা হয়, আর সে যদি না নেয় তবে এরপর চাইলেও তাকে আর তা দেয়া হবে না।” আমি বললাম: “যদি ব্যাপার এমন হয় তবে আল্লাহ্ তাআলার সাথে কৃত ওয়াদার কারণে আপনার সম্মুখে আমি খাবনা। অতঃপর যখন আমি ফিরে তাকালাম, তখন দেখলাম এক যুবক তাকে কোন বস্তু দিয়ে বলছে: “ওহে খিযির عَلَیۡہِ السَّلاَم তাঁকে আপনি খাইয়ে দিন। সুতরাং তিনি عَلَیۡہِ السَّلاَم আমাকে লােকমা দিতে থাকেন। এ অবস্থায় আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। আমি যখন উঠলাম তখনও আমার মুখে সেটার স্বাদ বিদ্যমান ছিল। সায়্যিদুনা শফীক (رحمة الله) বলেন: “আমি আরয করলাম: “আপনার হাত দেখি!” আমি তাঁর (رحمة الله) হাত ধরলাম এবং তাতে চুমু দিলাম।” (ইহইয়াউল উলুম, ৩য় খন্ড, ১০০-১০১ পৃষ্ঠা)।
আল্লাহ তাআলার রহমত তাঁর উপর বর্ষিত হােক এবং তাঁর সদকায় আমাদের ক্ষমা হােক।
_______________
কিতাব : ফয়যানে সুন্নাত
লেখক : আমীরে আহলে সুন্নাত মাওলানা মুহাম্মদ বিলাল মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদেরী রযবীয়া (দা.)
সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন