ফেরেস্তাদের মৃত্যু রহস্য এবং অবস্থা


ফেরেস্তাদের মৃত্যু রহস্য এবং অবস্থা



এখন অবশিষ্ট রইলাে, তাদের মৃত্যু রহস্য এবং অবস্থা সম্পর্কে।

▪ ইমাম ওলীউদ্দীন ইনকী  (رحمة الله) থেকে ‘আসয়ালায়ে মক্কীয়া' গ্রন্থে এ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি জবাব দেন,

لم يثبت في ذالك شٸ ولا يجوز الهجوم عليه بمجرد الاحتمال ولا مجال للنظر فیه ولا دخل للقیاس


অর্থাৎ এ সম্পর্কে প্রকৃত তথ্য জানা যায় নি। কেবল অনুমান ও সন্দেহের উপর ভিত্তি করে এ সম্পর্কে কিছু বলা যায় না। এখানে না দৃষ্টির কোন স্থান রয়েছে, আর না অনুমানের কোন দখল আছে।


▪ এটা বর্ণনা করেছেন, আল্লামা ফাসী  (رحمة الله) "মাতালেয়ুল মুসাররাতে'।


▪ বরং হযরত শেখ আকবর  (رحمة الله) তাে ফেরেস্তাদের রুহের ন্যায় স্বীকার করেন যে, এর কোন অস্তিত্ব ছিলাে না। যখন হয়েছে তখন তা সর্বাবস্থায় থাকবেন। কেননা, রুহের কোন মৃত্যু আসে না। ফতুহাত শরীফের ৫১৮ তম পরিচ্ছেদে উল্লেখ আছে,


انه ليس للملاٸکة اخرة هو ذالك انهم لا یموتون فیبعثون وانما هوصعق افاقة کالنوم والافاقة منه عندنا ذالك حال لا يزال عليه المسكن في التجلی الاجمال دنيا واخرة الخ


এ বর্ণনা [আল-ইওয়াক্কীত ওয়াল জাওয়াহেরে] উল্লেখ আছে। আমি বলছি, এ মাসয়ালা ফেরেস্তার নির্জনতা এবং শারিরীকতা উভয়ের উপর প্রযােজ্য হওয়াও সম্ভবপর। যা তাদের একাকী আত্মা স্বীকার করে। যেমনঃ



▪ হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত ইমাম গাযযালী  (رحمة الله) প্রমুখ এরই উপর ভিত্তি করে ফেরেস্তার মৃত্যু কখনও হয়না, শরীরের মৃত্যুই হয়ে থাকে অর্থাৎ রুহ বা আত্মা তার থেকে পৃথক হয়ে যাওয়া এক বলে অভিমত প্রকাশ করেন।



আর ফেরেস্তাকে اجسام لطیفة (সূতার শরীরও বলা হয়) যার সাথে পবিত্রতাসমূহের সম্পর্ক রয়েছে। যেমনঃ



জমহুর আহলে সুন্নাতের অভিমত এ সম্পর্কে শত শত প্রমাণও রয়েছে। তাঁদের মতে, ফেরেস্তার সাথে মৃত্যুর কোন সম্পর্ক নেই, এটাই জাহেরী আয়াত দ্বারা স্পষ্ট বুঝা যায়। হাদীসসমূহে এ সম্পর্কে সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে। সুতরাং এটাই বিশুদ্ধ এবং গ্রহণযােগ্য অভিমত।



▪ আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন- کل نفس ذاٸقة الموت


অর্থাৎ প্রত্যেকেই মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করবে।


২. পারা- ৪, রুকু-১, সুরা আলে ইমরান ১৮৫।



▪ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। যখন আল্লাহ তায়ালার বাণী- کل من علیها فان


অর্থাৎ সব কিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে।


(1) অবতীর্ণ হয় যে, যমিনে যেসব কিছু আছে সবই ধ্বংস হয়ে যাবে। ফেরেস্তারা বলেন, জমিনের অধিবাসীরা মৃত্যুবরণ করবে।


অর্থাৎ, আমরা (মৃত্যু থেকে) নিরাপদ।


(🔺1) [সুরা রাহমান ২৭ পারা, ১২ রুকু]



▪ যখন এ আয়াত- کل نفس ذاٸقة الموت নাজিল হয়,


তখন ফেরেস্তারা বলেন, এখন আমরাও মৃত্যুবরণ করবাে। ইমাম ফখরুদ্দিন রাযী  (رحمة الله) এ বক্তব্য ‘মাফাতিহুল গায়বে' উল্লেখ করেন।



▪ ইমাম ইবনে জরীর  (رحمة الله) তার থেকে বর্ণনা করেন,


وكل ملك الموت بقبض أرواح المؤمنين والملائكة


"অর্থাৎ মালাকুল মওত (মৃত্যুর ফেরেস্তা) মুসলমান এবং ফেরেস্তাদের রুহ কবজ করার জন্য নির্ধারিত আছেন।



▪ এ ছাড়াও ইমাম ইবনে জরীর  (رحمة الله), আবু শেখ  (رحمة الله) প্রমুখ একটি দীর্ঘ হাদীস হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه)'র সূত্রে বর্ণনা করেন, রাসুলে খােদা (ﷺ) ইরশাদ ফরমান- اخراهم موتا ملك الموت


অর্থাৎ, ফেরেস্তাদের মধ্যে সর্বশেষে মালাকুল মওত (আযরাঈলের) মৃত্যু হবে।



▪ বায়হাকী  (رحمة الله) ও ফারইয়াবী  (رحمة الله) হযরত আনাস (رضي الله عنه)'র সূত্রে একটি হাদীসে হুযুর (ﷺ) থেকে তাদের মৃত্যুর পদ্ধতি বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেন। হুযুর (ﷺ) ইরশাদ করেন-



"যখন সব ফেরেস্তা ধ্বংস হয়ে যাবে, তখনও জিব্রাইল (عليه السلام), মীকাঈল (عليه السلام)এবং আযরাইল (عليه السلام)(মৃত্যু ফেরেস্তা) অবশিষ্ট থেকে যাবে।


আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করবেন,


হে মালাকুল মওত! এখন কে কে বেঁচে আছে।


নিবেদন করবেন,


وبقي وجهك الباقي الدائم وعبدك جبرائيل وميكائيل وملك الموت


অর্থাৎ অবশিষ্ট রয়েছেন আপনার পবিত্র চেহারা মােবারক যা চিরঞ্জীব এবং আপনার জিব্রাঈল, মীকাঈল এবং মালাকুল মওত।


নির্দেশ হবে, تغرف نفس میکاٸیل


অর্থাৎ- মীকাঈলের রুহ কবজ করাে, তিনি বৃহত্তর পাহাড়ের মত করবেন, অতঃপর বলবেন, "এবং তিনিই অধিক অবিহিত।"


আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করবেন,


এখন কে বাকী আছে? মালাকুল মওত আরয করবেন,


وجهك الباقي وعبدك جبرائيل وملك الموت


আপনার মােবারক চেহারা যা চিরস্থায়ী আর আপনার বান্দা জিব্রাঈল এবং আযরাঈল।


তিনি বলবেন, تغرف نفس جبراٸیل 


(জিব্রাঈলের রুহ কবজ করো) তিনি স্বীয় ডানাসমূহ বিছিয়ে সিজদায় পড়ে যাবেন অতঃপর বলবেন "এবং তিনিই ভালাে শুনেন।"


এখন কে জীবিত আছে? নিবেদন করবেন-


وجهك الکریم وعبدك ملك الموت وهو میت


(আপনার মােবারক চেহারা যা চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী এবং আপনার বান্দা আযরাঈল। তিনিও মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করবেন।)


ইরশাদ হবে, منت (মরে যাও) তিনিও মৃত্যুবরণ করবেন।


অতঃপর আল্লাহ তায়ালা বলবেন, 


প্রারম্ভ আমি, আমি মাখলুক সৃষ্টি করেছি অতঃপর আমি পুনরায় তাদের জীবিত করবাে। কোথায় দাম্ভিক রাজা বাদশাহ, যারা রাজত্বের দাবী করতাে। জবাব দেওয়ার কেউ থাকবে না। তিনি নিজেই বলবেন- للّٰه الواحد القهّار


(আজ সমস্ত বাদশাহী। আল্লাহর জন্য)



▪ ফারইয়াবীর মতে-  ان اخرهم سوتا جبراٸیل واللّٰه تعالی اعلم


অর্থাৎ, ফেরেস্তাদের মধ্যে সর্বশেষে হযরত জিব্রাঈলের মৃত্যু ঘটবে। আল্লাহই অধিক অভিজ্ঞ।



▪ অতঃপর আমি বলছি, এ হাদীস থেকে বুঝা গেলো যে, নৈকট্যবান ফেরেস্তারা কিয়ামত দিবসে বেঁচে থাকবেন। আর ৬ নং হাদীসে সৈয়দুনা হযরত মাওলা আলী মুরতাদা (رضي الله عنه) এর বর্ণনায় অতিবাহিত হয়েছে যে, এ অসংখ্য ফেরেস্তা যেগুলাে দৈনিক সৃষ্টি হচ্ছে তারা কিয়ামত পর্যন্ত ফেরেস্তাদের সাথে উড়বে-চলাফেরা করবে।



▪ আর ১৪ নং হাদীসে অতিবাহিত হয়েছে,


ফেরেস্তা কিয়ামত পর্যন্ত দরুদ পাঠকারীদের উপর দরুদ প্রেরণ করেন।


▪ সাখাবী  (رحمة الله)'র বর্ণনায় অতিবাহিত হয়েছে যে,


তাদের ডানার ফোঁটাসমূহ থেকে যেসব ফেরেস্তা সৃষ্টি হয়, কিয়ামত পর্যন্ত তারা দুরুদ পাঠকারীদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবেন।


▪ প্রত্যেক মুসলমানের সাথে যেসকল কাতেবীন (আমলনামা লেখক ফেরেস্তা) রয়েছে, তাদের সম্পর্কে হাদীসে এসেছে যে,


তারা মুসলমানের মৃত্যুর পর আসমানের উপর যায় এবং সেখানে বসবাস করার অনুমতি প্রার্থনা করে। নির্দেশ হয়, আমার আসমান আমার ফেরেস্তাদের দ্বারা পরিপূর্ণ রয়েছে। তারা আমার তাসবীহ পাঠ করছে। এরপর থাকার আবেদন করলে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,


ولكن قوما على قبر عبدی سبحانی و هللانی وکبراني الى يوم القيامة واکتباه لعبدی  


অর্থাৎ, আমার বান্দার কবরে দাঁড়িয়ে কিয়ামত পর্যন্ত আমার তাসবীহ তাহলীল এবং তাকবীর পাঠ করাে এবং এর সাওয়াব ও পূণ্য আমার বান্দার জন্য লিখতে থেকো।



👉এটা ইমাম আবু নাঈম  (رحمة الله) হযরত আবু সাঈদ খুদরী (رضي الله عنه)'র সূত্রে,


👉ইমাম বায়হাকী  (رحمة الله) 'বাস' গ্রন্থে এবং


👉ইমাম ইবনে আবীদ দুনইয়া  (رحمة الله) হযরত আনাস ইবনে মালেক (رضي الله عنه)'র সূত্রে বর্ণনা করেন।



এভাবে আরাে অনেক হাদীস রয়েছে যেগুলাে দ্বারা ফেরেস্তাগণ কিয়ামত পর্যন্ত জীবিত থাকাই প্রমাণিত হয়। 


প্রকৃতপক্ষে কোন হাদীসে আসেনি যে,


কোন ফেরেস্তার মৃত্যু হয়েছে।


বরং উপরােক্ত বর্ণনা হযরত ইবনে আব্বাস সাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু'র সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, যদ্বারা সুস্পষ্টভাবে বুঝা যায়, کل نفس ذاٸقت الموت


"(প্রত্যেক আত্মা মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করবে)


এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার আগ পর্যন্ত ফেরেস্তাদের খবরই ছিলাে না যে, তাদেরও মৃত্যু হবে।"



সুতরাং, প্রমাণিত ও সুস্পষ্ট বক্তব্য হলাে, কিয়ামতের পূর্বে ফেরেস্তাদের মৃত্যু হবে না। 



▪ বরং জুয়ায়বর  (رحمة الله) স্বীয় তাফসীরে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে রেওয়ায়েত নেন। তিনি মানুষ, জ্বিন এবং জীব-জন্তুর মৃত্যু বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন,


والملائكة يموتون في الصعقة الاولى وان ملك الموت يقبض ارواحهم ثم بموت


অর্থাৎ, ফেরেস্তারা সে সময় মৃত্যুবরণ করবে যখন সিংগায় প্রথম ফুৎকার দেয়া হবে। মালাকুল মাওত তাদের রুহ কবজ করবেন অতঃপর তিনিও মৃত্যুবরণ করবেন।



▪ হাদীসটি উদ্দেশ্য ও দাবীর সমর্থনে সুস্পষ্ট প্রমাণ হতে পারবে.


لولا ما في جويبر من ضعف قوی ولا جویبر


আল্লাহ তায়ালাই অধিক অভিজ্ঞ।





সমাপ্তি সাধন 



◾প্রবন্ধটি শেষ করার পর ইমাম আল্লামা ইবনে হাজর মক্কী মালেকী  (رحمة الله) এর ফতোয়ায়ে হাদীসিয়ায় ফেরেস্তা এবং ‘হুরে ঈন সম্পর্কে একটি ফতােয়া দৃষ্টিগােচর হয়েছে, তিনি (ইমাম আল্লামা ইবনে হাজর মক্কী মালেকী  (رحمة الله) এতে ফেরেস্তার মৃত্যু সম্পর্কে ইজমা (ঐকমত্য) বর্ণনা করেন। অতঃপর তিনি বলেন,


الملايكة فيموتون بالنصوص والاجاع ویتولی قبض ارواحهم ملك الموت ویموت ملك الملوت بلاسلك الموت


"অর্থাৎ, অবশিষ্ট আছে ফেরেস্তা। অতঃপর এরাও মৃত্যুবরণ করবে। একথা নস্ (স্পষ্ট হাদিসের বাণী) এবং ইজমা দ্বারা প্রমাণিত। আর তাদের রুহ মালাকুল মাওত কবয করবে এবং মালাকুল মওতও মৃত্যুবরণ করবে।"



তার বক্তব্য থেকে বুঝা যায় যে, ফেরেস্তার মৃত্যু সিংগা ফুকের মাধ্যমেই হবে, আরবহনকারী ফেরেস্তা এবং চারজন নৈকট্যবান ফেরেস্তা ব্যতীত।


কেননা, তাঁরা সবার পরেই ইনতেকাল করবেন। এর আরবী বক্তব্য নিম্নরূপঃ


حيث قال في الفتوى المتعلقة بالملائكة بالنفخ في الصور يموتون الا حسلة العرش وجبرائیل واسرافیل ومیکاٸل وملك الموت ثم يموتون اثر ذالك


আর ফেরেস্তা সৃষ্টি সম্পর্কে এটা স্পষ্ট করে বলেন যে, ফেরেস্তাগণ একবারে সৃষ্টি হয়নি, বরং তাদের সৃষ্টি কয়েকবার হয়েছে।


حيث قال ظاهر السنة أن الملائكة لم يخلقوا دفعة واحدة


অতঃপর হাদীস সমুহ, যাতে আমরা রয়েছি অর্থাৎ, ফেরেস্তা সৃষ্টির মাসয়ালা যা আলােচ্য বিষয়, এ সম্পর্কে কেবল সাতটি বর্ণনা করেছি। যাতে পাঁচটিতে ২,৩,৯,১২ এবং ১৩-এ তাই বর্ণিত হয়েছে।



দুটি তো তরতাজা যা ইমাম ইবনে হাজার মক্কী  (رحمة الله)'র ফয়েয এবং রুহানী দোয়ার বরকতে। এ আঠারটি হাদীসে এ দু'টি সহ যােগ করে বিশটি হিসেবে গণ্য করুন।


আল্লাহরই জন্য সকল প্রশংসা।



(১৯) আবুশ শেখ  (رحمة الله) ওহাব ইবনে মুনিব্বাহ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনাকারী, 


قال ان الله نهرا في الهواء يسمع الارضين كلها سبع مرات فينزل على ذلك النهر الملك من الماء فیسلوه وید ما بين اطرافه ثم يغسل منه فاذا خرج منه قطر منه قطرات من نور فيخلق الله من كل قطرة سنها سلکا سبع الله بجمیع تسبيح الخلائق كلهم


"অর্থাৎ, আল্লাহ তায়ালার জন্য বাতাসে (শূন্যে) একটি নহর রয়েছে। যাতে (এমন) সপ্ত জমিন একত্রে সাতবার স্থান পূর্ণ করতে পারবে। এ নহরে আসমান থেকে এটি ফেরেস্তা অবতীর্ণ হয়। যিনি নিজ শরীর দ্বারা ঐ নহর পূর্ণ করে দেন এবং এর আশ-পাশ বন্ধ করে দেন। অতঃপর এতে গােসল করেন। যখন বাইরে আসেন তার থেকে নূরের ফোঁটা ছিটিয়ে পড়ে। আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক বিন্দু ও ফোঁটা থেকে একেকজন ফেরেস্তা সৃষ্টি করেন। যারা সকল মাখলুকের তাসবীহ দ্বারা তাসবীহ পাঠ করেন।" 



(২০) আ'লা ইবনে হারুনের  (رحمة الله)'র বর্ণনায় আছে, 



قال لجبرانيل كل يوم انغساس في الكوثر ثم ينتفض فكل قطرة یحلق منها ملك


হযরত জিব্রাঈল (عليه السلام) দৈনিক কাউছারে ডুব দিয়ে ডানা মেলে দেয় যার প্রত্যেক ফোঁটা ও বিন্দু থেকে একেকজন করে ফেরেশতা সৃষ্টি হয়।



এরপর আল্লাহর প্রশংসায় আরেকটি হাদীস আমার স্মরণে এসেছে।



◾ইবনে আবিদ দুনিয়া  (رحمة الله) এবং আবু শেখ  (رحمة الله)“কিতাবুস সওয়াবে'


➡ হযরত ইমাম জাফর সাদেক (رضي الله عنه)-এর সুত্রে,


➡ তিনি তাঁর সম্মানিত পিতা থেকে,


➡ তিনি তাঁর মহামান্য পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন,


➡ রাসূলে সৈয়দে আলম (ﷺ) ইরশাদ করেন, 


ما ادخل رجل عن مزمن سرورا الاخلق الله عزوجل من ذلك السرور ملكا بعبد الله عزوجل ويوحده فاذا صار العبد في قبره ایاه ذالك السرور


"যে কেউ কোন মুসলমানকে সন্তুষ্ট করবে আল্লাহ তায়ালা ঐ খুশী, সন্তুষ্টি এবং আনন্দ থেকে একজন ফেরেস্তা সৃষ্টি করেন।


`যিনি আল্লাহর ইবাদত, দাসত্ব এবং একত্বের স্বীকৃতি দিতে থাকবেন। যখন ঐ বান্দা কবরে যায়, এ ফেরেস্তা তার কাছে এসে বলেন, আমাকে কি চিনেন? আমি ঐ আনন্দ যা আপনি অমুক মুসলমানের হৃদয়ে প্রবেশ করে দিয়েছিলেন।


`আজ এ ভয়-ভীতি এবং নির্জনে আমি আপনাকে আপ্যায়ন করাবো,


`আপনাকে প্রশ্নের জবাব শিখিয়ে দেবাে এবং


`ঈমানের উপর প্রতিষ্ঠিত করবো,


`আর কিয়ামতের দিন আপনার সাথে থাকবাে এবং


`আল্লাহ তায়ালার কাছে আপনার পক্ষে সুপারিশ করবাে,


`আর জান্নাতে আপনার স্থান আপনাকে দেখাবো।"



মােট কথা; আরশ আজীমের বাদশাহ কতই মাহাত্ম্যপূর্ণ, কতই মহান ফেরেস্তা এবং পবিত্র রুহের প্রতিপালক, কতই সুন্দরতম সকল সৃষ্টি থেকে মুহাম্মদ (ﷺ) কে নির্বাচনকারী দয়াময় খােদা!


وصلے الله تعالى عليه وعلى آله وصحبه و بارك وكرم . والله سبحانه وتعالی اعلم وعلمه جل مجدہ اتم واحكم -

                           সমাপ্ত 

_____________

কিতাবঃ ফেরেস্তা সৃষ্টির ইতিবৃত্ত [আল হেদায়াতুল মােবারাকা ফী তাখলীকে মালায়েকা"র বাংলা রূপ]

মূলঃ ইমাম আহমদ রেযা খান বেরলভী (রঃ)

অনুবাদঃ আবু সাঈদ ইউসুফ জিলানী

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন